খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও উদ্যানপালন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরীর বিরুদ্ধে মালদহের এক আইনজীবী তাঁর বাড়িতে ঢুকে খুনের চেষ্টা ও টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছেন থানায়। দু’দিন কেটে গেলেও পুলিশ সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। কিন্তু একই ঘটনায় মন্ত্রী মৌখিক ভাবে মারধর করা হয়েছে অভিযোগ করায় সঞ্জয় শর্মা নামে ওই আইনজীবী ও তাঁর কাকা ভগবতীপ্রসাদ লাল শর্মার বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করল পুলিশ। মঙ্গলবার ভগবতীপ্রসাদ গ্রেফতারও হয়েছেন। বুধবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট প্রদীপকুমার রায় জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
মালদহের পুলিশ সুপার বলেন, “মন্ত্রীর মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই আইনজীবী ও তাঁর কাকার বিরুদ্ধে মামলা করেছে।” কিন্তু মন্ত্রীর বিরুদ্ধে ওই আইনজীবী যে অভিযোগ করেছেন, তাতে পুলিশ পদক্ষেপ করল না কেন? জেলা পুলিশ সুপার বলেন, “কোনও মন্তব্য করব না।”
আইনজীবী সঞ্জয়বাবু পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ আনেন। তিনি জানান, ২৭ অক্টোবর মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলাম বাড়িতে ঢুকে হামলা, খুনের চেষ্টা ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ার। তিনি বলেন, “পুলিশ মামলা করেনি। কিন্তু মন্ত্রীর অনুগামীরা আমার কাকার বাড়িতে ভাঙচুর করে। কাকা সেই অভিযোগও জানাতে যান। তখনই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।” পুলিশ জানিয়েছে, মন্ত্রীর মৌখিক অভিযোগেই সঞ্জয়বাবু ও তাঁর কাকার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি আধিকারিককে কাজে বাধা দেওয়ার জন্য করা ৩৫৩ ধারাটি জামিন অযোগ্য। সঞ্জয়বাবুর বক্তব্য, “আমি রাজ্য মানাবাধিকার কমিশন ও আদালতে যাব।”
মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুবাবু ঘটনার পরে বলেছিলেন সঞ্জয়বাবুর এক আত্মীয় তাঁর গায়ে হাত দেন। কিন্তু তিনি পরে ক্ষমা চেয়ে নেন। তাই মন্ত্রীও ক্ষমা করে দেন। তার পরেও ভগবতীপ্রসাদ কেন গ্রেফতার হলেন? মন্ত্রীর বক্তব্য, “পুলিশ পুলিশের কাজ করেছে।” তিনি বলেন, “নির্মাণ বন্ধ করতে বললে ওই আইনজীবী ও তাঁর কাকা বাধা দেন। আমি পুলিশ ডেকেছিলাম। পুলিশ আমার মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযোগ দায়ের করেছে।” মন্ত্রীর প্রশ্ন, “আমি যখন পুলিশকে ডেকেছিলাম, তখন ওই আইনজীবী আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ কেন করলেন না?” মন্ত্রীর দাবি, পুলিশ চলে যাওয়ার পরে ওই আইনজীবী তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেছেন।