নাগরাকাটার জনসভায় অধীর। —নিজস্ব চিত্র।
ডুয়ার্সের চা বলয়ে সভা করে চা শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। শুক্রবার নাগরাকাটার শুল্কাপাড়া হাইস্কুলের মাঠে সভা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। রাজ্য জুড়ে নারী নির্যাতন, বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থাগুলির সঙ্গে শাসক দলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক সহ নানা বিষয়ে অভিযোগ প্রদেশ সভাপতির বক্তব্যে ঘুরেফিরে এলেও, এ দিন বারবারই চা শ্রমিকদের বঞ্চনার কথাই প্রদেশ সভাপতির মুখে শোনা গিয়েছে। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একসময়ে ডুয়ার্সের চা বলয়ে কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের প্রভাব থাকলেও, বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন এবং সাসক দল তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের দাপটে তা অনেকটাই কোনঠাসা। সে কারণেই চা শ্রমিকদের কাছে টানতেই প্রদেশ সভাপতি নূন্যতম মজুরি চুক্তি, চা শ্রমিকদের বঞ্চনার অভিযোগ তুলে ধরেন বলে মনে করা হচ্ছে।
এ দিন বিকেলে নাগরাকাটা থানার শুল্কাপাড়া হাইস্কুলের মাঠে বক্তৃতায় প্রদেশ সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, “ডুয়ার্সের এই বিস্তীর্ন এলাকায় চা শিল্পের ওপর শ্রমিকদের জীবিকা নির্ভর করে। দীর্ঘদিন ধরে চা শ্রমিকরা অত্যন্ত কম মজুরি পেয়ে আসছেন। কিন্তু রাজ্য সরকার চা শ্রমিকদের নূন্যতম মজুরি দিতে রাজি নয়।” চা শ্রমিকদের দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরুর কথা জানিয়ে অধীরবাবু বলেন, “চা শ্রমিকরা নিজেদের অধিকার চাইছে, ভিক্ষে চািছে না। কংগ্রেস ওদের সঙ্গে রয়েছে। শ্রমিকদের নিয়ে আলোচনায় বসব। তারপর পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উৎসব, মেলায় কোটি কোটি টাকা খরচ হলেও, চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়াতে সরকার উৎসাহী নয় বলে অভিযোগ করেছেন প্রদেশ সভাপতি। তাঁর কটাক্ষ, “চোলাই খেয়ে মারা গেলেও যে সরকার ক্ষতিপূরণ দেয়, সেই সরকার চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর কথা ভাবে না।”
জলপাইগুড়ির তৃণমূল সাংসদ বিজয়চন্দ্র বর্মন অবশ্য পাল্টা বলেন, “কংগ্রেস নেতারা বিভ্রান্তি ছড়ানোর রাজনীতি করছে। চা শ্রমিকদের সঙ্গে রাজ্যের আলোচনা চলছে। রাজ্য সরকার মজুরি বাড়ানোর কয়েকটি প্রস্তাব দিয়েছে। তা নিয়ে বাম এবং ডানপন্থী দলগুলি রাজনীতি করে, সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করতে চাইছে।” রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরেই প্রথমবার চা শ্রমিকদের মজুরি রেকর্ড পরিমানে বৃদ্ধি পেয়েছিল বলে সাংসদ তথা তৃণমূল নেতার দাবি।