বিরোধ তৃণমূলের অন্দরেও

মজুরি চুক্তি মানতে নারাজ যৌথ মঞ্চ

রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত চা মজুরি চুক্তি মানছেন না রাজ্যের ২৩টি শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। শুক্রবার সকাল থেকে শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়িতে বৈঠকে বসেন মঞ্চের নেতারা। পরে বিকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে মঞ্চের শ্রমিক নেতারা জানিয়ে দেন, চুক্তিতে আপাতত তিন বছরের মজুরি বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। আর ন্যূনতম মজুরি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি ও মালবাজার শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৪৫
Share:

রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত চা মজুরি চুক্তি মানছেন না রাজ্যের ২৩টি শ্রমিক সংগঠনের যৌথ মঞ্চ। শুক্রবার সকাল থেকে শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়িতে বৈঠকে বসেন মঞ্চের নেতারা।

Advertisement

পরে বিকালে সাংবাদিক সম্মেলন করে মঞ্চের শ্রমিক নেতারা জানিয়ে দেন, চুক্তিতে আপাতত তিন বছরের মজুরি বৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। আর ন্যূনতম মজুরি নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে না। তা কার্যকর হলে তিন বছরের চুক্তি ‘বাতিল’ হবে, তা বলা নেই। সেখানে শুধু বলা রয়েছে, তিন বছরের চুক্তি থাকবে না। এক্ষেত্রে মালিকেরা আইনের পথে গেলে ন্যূনতম মজুরি প্রক্রিয়াই আটকে যাবে। এই অবস্থায় রাজ্যে চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির চুক্তি আদৌ কবে হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

যৌথ মঞ্চের আহ্বায়ক জিয়াউল আলম বলেন, “সরকারি প্রস্তাবে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য রয়েছে। তিন বছরের মজুরি চুক্তি মেনে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আবার পরে বলা হয়েছে, ন্যূনতম মজুরি হার নির্ধারিত হলে এই চুক্তি থাকবে না। যা আমার মেনে নেব না।” তিনি জানান, গত ১৫ এবং ১৬ ডিসেম্বর শিলিগুড়ির উত্তরকন্যায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে তাঁরা আপত্তির কথা জানিয়ে দিয়েছিলাম। তিনি জানান, আগামী ২২ ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গের যুগ্ম শ্রম আধিকারিক ও শ্রম দফতরের কাছে ২৪টি চা শ্রমিক সংগঠন আলাদা ভাবে এই বক্তব্য জানাবে। যৌথ মঞ্চও একই বক্তব্য জানিয়ে দেবে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, সরকারের প্রস্তাবিত মজুরি চুক্তি নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেও বিরোধ রয়েছে।

দলের শ্রমিক সংগঠনের সভানেত্রী দোলা সেন সরকারের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তেমনই, চা শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় চুক্তির খামতি নিয়ে সরব হয়েছে। সেখানে তিনি ন্যূনতম মজুরি চুক্তি ঠিক করার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বাঁধার দাবি তুলেছেন।

একই দাবি করেছেন যৌথ মঞ্চের সংগঠনগুলিও। এ বার সরকার তিন বছরের চুক্তিতে তিন দফায় ৩৭ টাকা ৫০ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের শেষ দিন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক ২২ ডিসেম্বরের মধ্যে সংগঠনগুলিকে লিখিত মতামত জানানোর জন্য অনুরোধ করেন।

আদিবাসী বিকাশ পরিষদের চা শ্রমিক সংগঠন প্রোগ্রেসিভ টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন এদিন বিকালে মালবাজারে বৈঠক করেছেন। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক তেজকুমার টোপ্পো বলেন, “আমরা কোনও অবস্থাতেই ন্যূনতম মজুরির দাবি থেকে সরছি না। লিখিত আকারে সোমবারে শ্রম দফতরে সব জানিয়ে দেব।”

এদিনই বিকালেই ডুয়ার্সের বাতাবাড়ির একটি বেসরকারি রিসর্টে বৈঠক করে শোভনদেববাবুর নেতৃত্বাধীন তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠন তরাই ডুয়ার্স প্ল্যান্টেশন ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি নকুল সোনার জানান, আগামী দুই বছরের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি প্রস্তাব লাগু করতেও প্রস্তাব দেব। আর ছয় দিনের উপস্থিতি অনুসারে হাজিরা ৪০ টাকা একবারেই করে দেওয়ার কথাও এ ক্ষেত্রে বলা হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement