ফের শাসকদলের এক কর্মীর বিরুদ্ধে এক বধূর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল। এবং এক্ষেত্রেও স্থানীয় থানা ওই বধূর পাশে দাঁড়ায়নি বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে শ্লীলতাহানির অভিযোগ নিল মালদহ থানা। গত সোমবার স্থানীয় তৃণমূল কর্মী বিভাস যাদব পুরাতন মালদহ পুরসভার চার নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই মহিলার শ্লীলতাহানি করা হয় বলে অভিযোগ। ওই গৃহবধুর আইনজীবী দেবাঞ্জন দত্তের দাবি, “আমার মক্কেলকে তাঁরই এলাকার এক যুবক শ্লীলতাহানি করে। এমনকী, বাড়িতে ঢুকে প্রাণে মারার হুমকি দেয়। কিন্তু থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে।” অভিযোগপত্রে ত্রুটি থাকায় তা নেওয়া হয়নি বলে সাফাই দিয়েছেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে অসুস্থ বাবার জন্য মঙ্গলবাড়িতে ওষুধ কিনতে গিয়েছিলেন ওই গৃহবধূ। তাঁর অভিযোগ, সেই সময় অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী বিভাস যাদব তাঁকে কটূক্তি করেন ও তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। চিত্কার করলে এলাকার মানুষ ছুটে আসেন। তাই তখনকার মত পালিয়ে যায় ওই যুবক। কিন্তু রাতে ফের তাঁর বাড়িতে দলবল নিয়ে চড়াও হয়। ঘটনাটি কাউকে জানালে তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে বলে হমকি দেয়। ওই মহিলার শাশুড়ি স্থানীয় একটি স্কুলে মিড ডে মিল রান্নার কাজ করেন। তাঁকেও কাজ থেকে ছাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ। পর দিন অর্থাত্ মঙ্গলবার বেলা ১১টায় মালদহ থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন বধূটি। মহিলার অভিযোগ, পুলিশ অভিযোগ নিতে চায়নি। মহিলার দাবি, “বিভাস দীর্ঘদিন ধরে আমাকে উত্যক্ত করত। পরে রাস্তায় হাত টেনে যা করেছে তাতে ভয়ে রয়েছি। ও তৃণমূল করে বলে পুলিশ গুরুত্ব দিতে চাইছে না। তাই আতঙ্কে রয়েছি।”
মালদহ থানা অভিযোগ না নেওয়ায় বুধবার সকালে একজন আইনজীবীকে নিয়ে জেলা পুলিশ সুপারের অফিসে যান ওই বধূ ও তাঁর পরিবার। পুলিশ সুপার না থাকায় এদিন তাঁরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদীর কাছে অভিযোগ দায়ের করেন। বধূর আইনজীবী দেবাঞ্জন দত্তের বলেন, “মালদহ থানার পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করে। তাই বাধ্য হয়েই এদিন জেলা পুলিশ কর্তার দ্বারস্থ হয় আমার মক্কেল।” অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “আমি জানতে পেরেছি তাদের অভিযোগ পত্রে ত্রুটি থাকায় নতুন করে লিখতে বলা হয়েছিল। এদিন তারা আমার কাছে এসেছিলেন। আমি থানাতে অভিযোগ নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। তারা থানায় গেলে অভিযোগ নেওয়া হবে।”
অভিযুক্ত তৃণমূল কর্মী বিভাস পুরাতন মালদহ পুরসভার চেয়ারম্যান বিভূতিভূষণ ঘোষের ঘনিষ্ঠ বলেও অভিযোগ। বিভাস যাবতীয় অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর দাবি, “ওই বধূ আমাকে ফাঁসাতে চাইছেন।” আর পুর চেয়ারম্যান বিভূতিবাবু, অভিযুক্ত ব্যক্তি তাঁর ঘনিষ্ট নয় বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, “বিভাস নামে আমি কাউকে চিনি না।” পুলিশ কর্তার হস্তক্ষেপে বুধবার বিকেলে থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও এদিন রাত পর্যন্ত অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।