পুরোনো শত্রুতা, অনুমান পুলিশের

মারধর করে ডাকাতি ঠিকনিকাটায়, জখম ৩

গৃহকর্তা সহ তিনজনকে মারধর করে টাকা, গয়না ও মূল্যবান জিনিস লুঠ করে নিয়ে গেল কয়েকজন দুষ্কৃতী। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার মাঝরাতে শিলিগুড়ির কাওয়াখালির ঠিকনিকাটা এলাকায়। বাড়ির কর্তা তপন পাল, তাঁর স্ত্রী রিংকুদেবী এবং তপনবাবুর মা জ্যোৎস্না দেবীকে গুরুতর জখম অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৪ ০৮:৪৪
Share:

তপন পালের বাড়িতে ডাকাতির পর লন্ডভন্ড ঘর। রবিবারের নিজস্ব চিত্র।

গৃহকর্তা সহ তিনজনকে মারধর করে টাকা, গয়না ও মূল্যবান জিনিস লুঠ করে নিয়ে গেল কয়েকজন দুষ্কৃতী। ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার মাঝরাতে শিলিগুড়ির কাওয়াখালির ঠিকনিকাটা এলাকায়। বাড়ির কর্তা তপন পাল, তাঁর স্ত্রী রিংকুদেবী এবং তপনবাবুর মা জ্যোৎস্না দেবীকে গুরুতর জখম অবস্থায় উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করানোর ব্যবস্থা করায়। আহতদের প্রত্যেকের মাথায় একাধিক সেলাই করতে হয়েছে। দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় ৬ জন ছিল বলে জানা গিয়েছে। তাদের প্রত্যেকের মুখ গামছা দিয়ে ঢাকা থাাকায় তাঁদের চিনতে পারা যায়নি বলে প্রত্যেকেই জানিয়েছেন। ঘটনার পর থেকে আতঙ্কিত মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে ৭ বছরের ছেলে এবং ৪ বছরের মেয়ে। কাছেই শুশ্রুতনগরের বিয়ে হওয়া পিসিই এখন সামলাচ্ছেন দুই ভাই বোনকে।

Advertisement

শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগ মোহন বলেন, “আমরা ঘটনার তদন্ত করছি। কোনও পুরনো শত্রুতার জেরে এই ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে হচ্ছে। দু’-এক দিনের মধ্যেই দুষ্কৃতীদের ধরে ফেলা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।” ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার রাত সওয়া ২ টো নাগাদ। পুলিশ সূত্রের খবর, রাতে বাড়ির বাইরের পাঁচিলের গেটের তালা ভাঙে দুষ্কৃতীরা। কয়েকজন পাঁচিলের ধারের গাছ বেয়ে উঠে দেওয়াল টপকে বাড়িতে ঢোকে। বাড়ির পিছনের দরজা লোহার শিক জাতীয় কিছু দিয়ে ভেঙে ফেলে দুষ্কৃতীরা। এর পরে ঘরে ঢুকে তাঁরা প্রথমে তপনবাবুর ঘরে ঢুকে তাঁকে বেঁধে ফেলেন। এরপর তাঁকে ঘরেই থাকা কাঠের বাটাম দিয়ে মাথায় মারেন। তাঁকে বাঁচাতে গেলে স্ত্রী রিংকুদেবীকেও মাথায় বাটাম দিয়ে মারে দুষ্কৃতীরা। বাঁধা হয় তাঁকেও। ঘরের আলমারির চাবি জ্যোৎস্নাদেবীর কাছে থাকায় বাটাম দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয় তাঁকেও। আলমারি খুলে প্রায় ১০ ভরি গয়না, নগদ ২২ হাজার টাকা নিয়ে যায়। তপনবাবু বলেন, “টাকা, গয়না ছাড়াও বক্স খাটের ভিতরে থাকা কাঁসার বাসন নিয়ে গিয়েছে ওরা” রিংকুদেবী বলেন, “আমি তখন ঘুমাচ্ছিলাম। হঠাৎ জোরে আওয়াজ শুনে দেখি আমার স্বামীকে কয়েকজন বেঁধে রেখে মারছে। আমি বাধা দিলে আমাকেও মাথায় মারে।” পুলিশকে ফোন করেন রক্তাক্ত তপনবাবুই। পুলিশ এসে আত্মীয়দের খবর দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।

তপনবাবুর ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণির কৌশিক গোটা ঘটনাটির সাক্ষী। সে জানায়, বাবা-মাকে খুব মেরেছে। ঠাকুমাকেও ঘুঁষি, কাঠের বাড়ি মেরেছে ওরা। সবার মুখ গামছায় ঢাকা ছিল।” ঘটনার খবর পেয়ে আসেন তপনবাবুর বোন ও তার পরিবার। তারাই এখন বাচ্চা দুটির অভিভাবক। পুলিশের ভূমিকায় ক্ষোভ রয়েছে এলাকাবাসীর। আগেও এই এলাকায় একাধিক ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও পুলিশ নজরদারি বাড়ায় না বলে অভিযোগ তাঁদের। পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়মিত নজরদারি হয় বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement