ঘটনাস্থলে তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
মোবাইল টাওয়ার মেরামতির নাম করে বাড়িতে ঢুকে আলমারি থেকে দামি অলঙ্কার ও টাকা লুঠ করে পালাল এক দুষ্কৃতী। শিলিগুড়ির ডাবগ্রামে মঙ্গলবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পেশায় ছাপাখানার ব্যবসায়ী তপন বাড়ইয়ের বাড়িতে এদিন দুপুরে গৃহকর্তা ও তাঁর ছেলেরা কেউ না থাকার সুয়োগেই ওই ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে শিলিগুড়ি থানা থেকে যায় পুলিশ বাহিনী। গৃহকর্ত্রীকে ডেকে তাঁর কথা শুনে অপরাধীর স্কেচ আঁকানো হয়েছে। দিনের বেলায় এরকম দুঃসাহসিক চুরির ঘটনায় শহরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বাসিন্দারা। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, ‘‘আমরা দ্রুত চুরির কিনারা করার চেষ্টা করছি। দ্রুত অপরাধীকে ধরা সম্ভব হবে বলে আশা করছি।”
তপনবাবুর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের বাড়ির ছাদে ১০ বছর আগে একটি বেসরকারি মোবাইল সংস্থার টাওয়ার বসানো হয়। এদিন দুপুর ১২ টা নাগাদ রান্নার কাজে ব্যস্ত ছিলেন গৃহকর্ত্রী রিনাদেবী ও তাঁর পুত্রবধূ মৌপিয়া। সেই সময় বছর পঁচিশের এক যুবক বাড়িতে এসে রিনাদেবীর বড় ছেলে তাপস রয়েছে কি না জানতে চান। তার কাছে মুখ ঢাকা একটি হেলমেট ও পিঠের একটি ব্যাগ ছিল। তাপস নেই শুনে ওই যুবক জানায় সে মোবাইল টাওয়ার মেরামতির কাজে এসেছে। এর আগেও টাওয়ারের কাজে লোক আসাতে সন্দেহ না করেই দরজা খুলে দেন রিনাদেবী। ছাদের রাস্তা দেখিয়ে তিনি রান্নার কাজে মন দেন। ওই মোবাইল সংস্থার পক্ষ থেকে এদিন কাউকে কোনও কাজেই পাঠানো হয়নি বলে পরে তারা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন। সংস্থার উত্তরবঙ্গের দায়িত্বে থাকা বিকাশ অগ্রবাল বলেন, “এদিন আমরা কাউকে ওই বাড়িতে পাঠাইনি। কোনও জায়গায় কাউকে পাঠালে আগে অফিস থেকে ফোন করে জানানো হয়। তাঁদের সম্মতি মিললে তবেই কর্মী পাঠানো হয়।” তপনবাবুর অভিযোগ, ওই যুবক ঘরে ঢুকে ড্রয়ার থেকে রাখা চাবি বের করে আলমারি খুলে লকার থেকে সোনার গয়না নিয়ে গিয়েছে। সামান্য নগদ টাকা ছিল।
রিনাদেবীর কথায়, “অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ার পরেও ওই ব্যক্তি নীচে না নামায় আমি পুত্রবধূকে দেখতে বলি। ও গিয়ে দেখে ছাদের বদলে ওই যুবক ঘর থেকে বেরোচ্ছে। ঘরে কেন ঢুকেছেন জিজ্ঞাসা করায় ওই যুবক দৌড়ে নীচে নেমে যায়। আমার সামনে দিয়ে বেরিয়ে গেলেও আমি চুরির বিষয়টি বুঝতেই পারিনি।” মৌপিয়াদেবী বুঝতে পেরে চিত্কার করেন। দুষ্কৃতীকে ধরতে গিয়ে ডান পায়ে চোটও পান তিনি। কালো রঙের একটি মোটরবাইকে হেলমেটে পড়ে বেরিয়ে যেতে দেখেন প্রতিবেশী অনিন্দিতাদেবী। তিনি বলেন, “পাশের বাড়ি থেকে চিত্কার শুনে বেরিয়ে দেখি একজন কালো মোটরবাইক নিয়ে পালাচ্ছে। দিনের বেলা এমন ঘটনা ঘটলে রাতে কী হবে ভেবে শিউরে উঠছি।” গৃহকর্তা তপনবাবু বলেন, “কাজে কর্মে বাইরে থাকি। ওই ব্যক্তি কোনও রকম অস্ত্র বের করলে কী হত, ভেবে হাত-পা ঠাণ্ডা হয়ে আসছে।”