‘হিট লিস্টে’-তাঁর নাম রয়েছে জলপাইগুড়ির সরকারি অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার তাঁর এ কথা জানানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বোমাতঙ্ক ছড়াল শহরে।
খোদ মুখ্যমন্ত্রী ক্লাব রোডের পূর্ত দফতরের যে বাংলোতে উঠেছেন, সেখান থেকে দুশো মিটার দূরে গুদাম ঘরের সামনে পরিত্যক্ত সাইকেলে ঝোলানো ব্যাগ ঘিরেই আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ কুকুর আনা হয়। পরে অবশ্য জানা যায়, ওই সাইকেল এক সিভিক ভলান্টিয়ার, মনু রায়ের। তিনি সেটা নিয়েও যান। তবে বোমাতঙ্ক নিয়ে পুলিশ কর্তার মুখ খোলেননি। অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “ওটা কিছু নয়।” ঘটনাটি জানেন না বলে দাবি করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “আমি তো মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বাংলোতে আছি। বোমাতঙ্কের কিছু তো শুনিনি।”
এ দিন জলপাইগুড়ি স্পোর্টস ভিলেজের সভায় মুখ্যমন্ত্রী তাঁর জীবন সংশয়ের আশঙ্কার কথা জানান। তিনি বলেন, “আমি একা চলি। নিরাপত্তা নেই না। যদিও অনেকে জানেন হিট লিস্টে আমার নাম রয়েছে।” তার পরেও ঘটনাটি ঘটে। বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, আতঙ্ক থেকে মুখ্যমন্ত্রী এ সব বলছেন। জলপাইগুড়ির কংগ্রেস বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা বলেন, “উনি এতটাই আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে আছেন যে পুলিশ ছাড়া চলতে পারছেন না।”
গত মঙ্গলবার বিকেলের পরে ক্লাব রোডের পূর্ত দফতরের পরিদর্শন বাংলোতে মুখ্যমন্ত্রী ওঠেন। তাঁর আগে থেকে ওই এলাকা নিরাপত্তায় মুড়ে ফেলা হয়। রাস্তায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতের উপরে কড়া নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়। বুধবার ওই রাস্তা দিয়ে সরকারি কর্মীরা দফতরে যাওয়ার সময় পুলিশি তল্লাশির মুখে পরে খানিক বিপাকেও পড়েন। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সরকারি অনুষ্ঠান শেষ করে কখনও গাড়িতে আবার কখনও হেঁটে পৌঁনে পাঁচটা নাগাদ বাংলোতে ফিরে যান।
পথচারীরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী বাংলোতে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে পরিত্যক্ত সাইকেলে ঝোলানো কালো ব্যাগ রাস্তায় নিরাপত্তার কাজে নিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের নজরে আসে। শুরু হয় দৌঁড়ঝাপ। পুলিশ কর্তাদের জানানো হয়। কিছুক্ষণের মধ্যে রাস্তায় বাসিন্দাদের যাতায়াত বন্ধ করে দিয়ে সাইকেলের কাছে পুলিশ কুকুর পাঠানো হয়। অন্তত ২০ মিনিট ধরে ব্যাগে কী আছে সেটা জানার চেষ্টা চলে। পুলিশ সূত্রের খবর, এর মধ্যে সিভিক ভলান্টিয়ার মনুবাবু দৌড়ে এসে জানান সাইকেলটি তাঁর। তা রেখে তিনি ভিড় সামলানোর কাজে গিয়েছিলেন। ওই ব্যাগে করে তিনি টিফিন বাক্সে খাবার এনেছিলেন। পরীক্ষার পর পুলিশ কর্মীরা হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন। সিভিক ভলান্টিয়ার সাইকেলটি নিয়ে চলে যান।