ভাষার স্বীকৃতি চেয়ে আন্দোলনের হুমকি

মুখ্যমন্ত্রী’র প্রতি ‘ভরসা’র কথা বললেও কামতাপুরী ভাষা ও সংস্কৃতি বাঁচানোর দাবি তুলে আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করলেন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গিরা। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে কেএলও-র তৃতীয় এবং চতুর্থ ব্যাচের একদল প্রাক্তন জঙ্গি সাংবাদিক সম্মেলন করে অনশন শুরু করার হুমকি দিয়েছেন। কামতাপুরী ভাষা ও সংস্কৃতি বাঁচাও কমিটি নামের সদ্য গড়া একটি সংগঠনের সভাপতি হয়েছেন ধূপগুড়ির বাসিন্দা, প্রাক্তন কেএলও নেতা মৃণাল রায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:০২
Share:

মুখ্যমন্ত্রী’র প্রতি ‘ভরসা’র কথা বললেও কামতাপুরী ভাষা ও সংস্কৃতি বাঁচানোর দাবি তুলে আন্দোলনে নামার কথা ঘোষণা করলেন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গিরা। মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে কেএলও-র তৃতীয় এবং চতুর্থ ব্যাচের একদল প্রাক্তন জঙ্গি সাংবাদিক সম্মেলন করে অনশন শুরু করার হুমকি দিয়েছেন। কামতাপুরী ভাষা ও সংস্কৃতি বাঁচাও কমিটি নামের সদ্য গড়া একটি সংগঠনের সভাপতি হয়েছেন ধূপগুড়ির বাসিন্দা, প্রাক্তন কেএলও নেতা মৃণাল রায়। তিনি বলেন, “উনি ক্ষমতায় এসে তো আমাদের একসময়কার সহকর্মীদের জেল থেকে ছেড়েছেন। আমরা এখনও আশা করছি, উনি আমাদের দাবি মেটাবেন। তবে আমরা মুখ্যমন্ত্রী, মুকুল রায় মত নেতানেত্রী ছাড়া আর কারও সঙ্গে কথা বলব না।”

Advertisement

প্রাক্তন জঙ্গিরা জানান, কামতাপুরি ভাষার সাংবিধানিক স্বীকৃতি আদায়ই তাঁদের প্রধান লক্ষ্য। প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তর অবধি এই ভাষা পড়ানোর দাবি করেছেন তাঁরা। এ ছাড়া উত্তরবঙ্গের মহকুমা বা ব্লক স্তরে ভাষা-সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্র চালু, দুরদর্শন ও রেডিওতে কামতাপুরি ভাষার অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা ছাড়াও পঞ্চানন বর্মা এবং চিলা রায়ের নামে রাজ্য সড়কের নামকরণ, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে পুরস্কার চালুর দাবি জানানো হয়েছে।

মৃণালবাবুর অভিযোগ, বামফ্রন্ট সরকার তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। এই সরকারের আমলেও তাঁদের দাবি মেটেনি। তাঁর কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি আমাদের এখনও ভরসা রয়েছে। তাই আপাতত আমরা রাজ্যের দাবি থেকে সরে এসেছি।”

Advertisement

ওই কমিটির সদস্যেরা জানান, গত দুই মাসে কলকাতার তৃণমূল নেতাদের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে দু’দফায় দাবিপত্র দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনও সদুত্তর মেলেনি। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে কোনও সাড়া না মিললে ৯ নভেম্বর রিলে অনশন শুরু হবে। তাতেও কাজ না হলে আমরণ অনশনের কর্মসূচি নেওয়া হবে। তাঁদের সঙ্গে ১৭০ জন প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি ও লিঙ্কম্যান রয়েছেন। কেপিপি-র কয়েকজন নেতার সঙ্গেও কথা হয়েছে।

এদিন মৃণালবাবুর সঙ্গে ছিলেন তৃতীয় ও চতুর্থ ব্যাচের প্রাক্তন কেএলও জঙ্গি বিশ্বজিত্‌ বর্মন, রঞ্জন বর্মন, দীপক রায়’-সহ ১০-১২ জনের একটি দল। তাঁদের সঙ্গেই শিলিগুড়িতে এসেছিলেন জলপাইগুড়ির এক তৃণমূল কর্মী শুভঙ্কর মিশ্র। মৃণালবাবু বলেন, ‘‘শুভঙ্করবাবু আমাদের কলকাতার নেতাদের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছেন। তাই সঙ্গে রয়েছেন।” শুভঙ্করবাবু বলেন, “আমি তৃণমূল কর্মী। ওদের সঙ্গে পরিচয় রয়েছে। তাই কলকাতায় নেতাদের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছি।”

দার্জিলিং জেলা তৃণমূল নেতা কৃষ্ণ পাল বলেন, “বামফ্রন্ট আমলে ওঁরা প্রতারিত হয়েছেন। এখন ওঁরা কোথায় কার সঙ্গে কথা বলেছেন জানি না। কোচবিহার, জলপাইগুড়ি সাংসদ ছাড়াও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রয়েছেন। আগে এঁদের সঙ্গে কথা বলুন। তার পরে তো মুখ্যমন্ত্রী আছেনই।” তিনি জানান, এ সরকারের আমলেই রাজবংশী ভাষা অ্যাকাডেমি, পঞ্চানন বর্মা বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। এটাও ওদের ভুললে চলবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement