রাজ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যেই স্কুল শিক্ষা দফতর থেকে শিলিগুড়িতে প্রাথমিক শিক্ষকদের অস্থায়ী বদলির নির্দেশ বাতিলের সিদ্ধান্তকে ঘিরে বিধিভঙ্গের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার ওই অভিযোগে মহকুমাশাসকের মাধ্যমে দার্জিলিঙের জেলা জেলাশাসক তথা রিটার্নিং অফিসারের কাছে স্মারকলিপি দেয় পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্যে-ই নির্দেশ কার্যকর করাও শুরু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলে তারা।
পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীলশর্মা বলেন, “নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলার মধ্যেই স্কুলশিক্ষা দফতর থেকে যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাতে নির্বাচনী বিধিনিষেধ ভাঙা হচ্ছে। ওই চিঠির পর অনেক শিক্ষককে সার্কেল ইন্সপেক্টররা আগের স্কুলে ফিরে যেতেও লিখিত নির্দেশ দিচ্ছেন। সেটাও বিধিভঙ্গের সামিল। আমরা এর বিরুদ্ধে মহকুমাশাসকের মাধ্যমে রিটার্নিং অফিসারকে জানিয়েছি।”
উল্লেখ্য, গত, অক্টোবরে শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের পুরনো চেয়ারমানের সময় অন্তত ২৫০ শিক্ষককে অস্থায়ী বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
মহকুমাশাসকের দফতর থেকে এ দিনই অভিযোগের বিষয়টি ফ্যাক্স করে জেলাশাসকের দফতরে পাঠানো হয়েছে। ফ্যাক্সের প্রতিলিপিও রঞ্জনবাবুদের দেওয়া হয়েছে বলে তাঁরা দাবি করেন। জেলাশাসক পুনীত যাদব বলেন, “দফতরের ওই ফ্যাক্স এখনও হাতে পাইনি। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।”
শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান মুকুলকান্তি ঘোষ অবশ্য নির্দেশিকার পদ্ধতিগত দিকটি নিয়ে কিছু বলতে চাননি। তিনি বলেন, “নিয়ম মেনে বদলি হয়নি। আরও নানা অসঙ্গতি রয়েছে। সে সব ব্যাপারে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের দফতর ও আমাদের তরফে জানানো হয়েছিল। সেই মতো নির্দেশ এসেছে। তবে এখনও কাউকে আগের স্কুলে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়নি। যা হওয়ার নির্বাচন প্রক্রিয়ার পরে হবে।”
শিলিগুড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান এ কথা জানালেও ইতিমধ্যেই সার্কেল ইন্সপেক্টর (এসআই)-রা অনেককেই ফিরে যাওয়ার লিখিত নির্দেশ বিলি করা শুরু করেছেন। এ দিন তা নিয়েও অভিযোগ তোলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার শিলিগুড়ি পশ্চিম সার্কেলের এসআই হীরন্ময় মণ্ডল অনীক চক্রবর্তী নামে এক শিক্ষককে শিলিগুড়ি পাবলিক প্রাইমারি স্কুলে ফেরার নির্দেশ দিয়েছেন। গত অক্টোবরে ওই স্কুল থেকে অস্থায়ী বদলি করিয়ে তাঁকে ফণিভূষণ বিদ্যাপীঠ স্কুলে পাঠিয়েছিলেন এসআই। এসআই হীরন্ময়বাবু বলেন, ‘‘ভুলবশত অনীকবাবুকে ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ার মধ্যে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।”
রঞ্জনবাবুর সংগঠনের এই বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি। সংগঠনের সম্পাদক বিভাস চক্রবর্তী জানান, সরকারি নির্দেশে যা বলা হয়েছে তাতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্বার্থ রক্ষা পেলে তা মেনে নিতে আপত্তি নেই।