বকেয়া বিল, এক্সচেঞ্জের বিদ্যুত্‌ সংযোগ বিচ্ছিন্ন

বকেয়া বিল না-মেটানোর অভিযোগে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি, গোয়ালপোখর-১ এবং গোয়ালপোখর-২ ব্লকের বিএসএনএলের পাঁচটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে রাজ্য বিদ্যুত্‌ বন্টন কোম্পানি। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার বন্টন কোম্পানির তরফে করণদিঘি ব্লকের ডালখোলা, পুর্ণিয়া, রসাখোয়া, গোয়ালপোখর-১ ব্লকের সাহাপুর ও গোয়ালপোখর-২ ব্লকের চাকুলিয়া টেলিফোন এক্সচেঞ্জের বিদ্যুত্‌ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:৩৯
Share:

বকেয়া বিল না-মেটানোর অভিযোগে উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি, গোয়ালপোখর-১ এবং গোয়ালপোখর-২ ব্লকের বিএসএনএলের পাঁচটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জের বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে রাজ্য বিদ্যুত্‌ বন্টন কোম্পানি।

Advertisement

গত বুধ ও বৃহস্পতিবার বন্টন কোম্পানির তরফে করণদিঘি ব্লকের ডালখোলা, পুর্ণিয়া, রসাখোয়া, গোয়ালপোখর-১ ব্লকের সাহাপুর ও গোয়ালপোখর-২ ব্লকের চাকুলিয়া টেলিফোন এক্সচেঞ্জের বিদ্যুত্‌ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। ফলে চারদিন ধরে ওই তিনটি ব্লকের ইন্টারনেট, ল্যান্ডফোন ও মোবাইল পরিষেবা পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর জেরে সমস্যায় পড়েছেন ২৬ হাজারেরও বেশি গ্রাহক।

শুক্রবার বিএসএনএলের উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুরের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার প্রদীপ সরকার, বিদ্যুত বন্টন কোম্পানির রায়গঞ্জের ডিভিশনাল ম্যানেজার সুনীল কুমারের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের দাবি, তাঁরা প্রতিমাসে জেলার বিভিন্ন টেলিফোন এক্সচেঞ্জের মাসিক বিদ্যুতের বিল বাবদ প্রায় ৮০ লক্ষ টাকা করে মেটান। বকেয়া বিলের কোনও নথি তাঁদের কাছে নেই। তাও টাকা বাকি রয়েছে এরকম কোনও নথি পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন তাঁরা। নথি না পাওয়া পর্যন্ত ওই পাঁচটি এক্সচেঞ্জে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন তিনি।

Advertisement

বিদ্যুত বন্টন কোম্পানির রায়গঞ্জের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার সুনীলবাবু বলেন,“বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৫ দিনের মধ্যে বিদ্যুতের বকেয়া বিল মেটানোর আশ্বাস দিয়ে ওই পাঁচটি এক্সচেঞ্জে বিদ্যুত্‌ সংযোগ দেওয়ার অনুরোধ করেছেন। ওই পাঁচটি এক্সচেঞ্জ ইসলামপুর মহকুমার অধীনস্থ হওয়ায় কোম্পানির ইসলামপুরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ারকে বিষয়টি দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে.।

কোম্পানির ইসলামপুরের ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার রমেশচন্দ্র মধু জানান, বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের অনুরোধ মেনে পাঁচটি টেলিফোন এক্সচেঞ্জে আপাতত দু’ একদিনের মধ্যে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ১৫ দিনের মধ্যে তাঁরা বকেয়া বিল না মেটালে এক্সচেঞ্জগুলিতে স্থায়ীভাবে বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁর অভিযোগ, গত পাঁচ বছর ধরে একাধিকবার নোটিশ পাঠানো হলেও বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ বিদ্যুতের বকেয়া বিল মেটাননি।

বিদ্যুত্‌ বণ্টন কোম্পানির দাবি, ২০১০ সাল থেকে বিএসএনএল এর ডালখোলা, পুর্ণিয়া, রসাখোয়া, সাহাপুর ও চাকুলিয়া টেলিফোন এক্সচেঞ্জের বিদ্যুতের বিল বাবদ ৪০ লক্ষ টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। অন্যদিকে বিএসএনএলের রায়গঞ্জের সহকারি জেনারেল ম্যানেজার প্রদীপ সরকারের দাবি, তাঁদের কাছে বকেয়া বিদ্যুতের বিলের কোনও নথি নেই। তিনি বলেন, “আমরা ১৫ দিন সময় চেয়েছি। তারমধ্যে নথি খুঁজে পেলে নিশ্চই কোম্পানিকে বকেয়া বিল মিটিয়ে দেওয়া হবে। তবে নথি খুঁজে না পেলে সমস্যা সমাধানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ চাওয়া হবে।”

বিএসএনএল সূত্রের খবর, ডালখোলা, পুর্ণিয়া, রসাখোয়া, সাহাপুর ও চাকুলিয়া টেলিফোন এক্সচেঞ্জের অধীন ২০ হাজার মোবাইল, ৫ হাজার ল্যান্ডফোন ও দেড় হাজার ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে। কিন্তু গত তিনদিন ধরে এক্সচেঞ্জগুলিতে বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে ২৬ হাজারেরও বেশি ইন্টারনেট, ল্যান্ডফোন ও মোবাইল পরিষেবা বিপর্যস্ত হয়ে রয়েছে।

গোয়ালপোখর-২ ব্লকের বিডিও নাথালিয়ান সুব্বা বলেন, “গত তিনদিন ধরে ইন্টারনেট, ল্যান্ডফোন ও মোবাইল পরিষেবা বিপর্যস্ত থাকায় প্রশাসনিক কাজকর্ম করতে সমস্যা হচ্ছে। ব্লক প্রশাসনের তরফে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন সরকারি নির্দেশ ও রিপোর্ট আদান প্রদানের কাজও আটকে রয়েছে।” চাকুলিয়া থানার ওসি পলাশ মোহান্তের অভিযোগ, গত তিনদিন ধরে থানার ল্যান্ডফোন বিকল থাকায় সাধারণ মানুষ কোনও সমস্যায় থানায় ফোন করতে পারছেন না। জরুরি ভিত্তিতে থানার তরফে বাইরে কর্তব্যরত অবস্থায় থাকা পুলিশকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করাও সম্ভব হচ্ছে না। ইন্টারনেট পরিষেবা বেহাল থাকায় পুলিশ সুপারের দফতরের রিপোর্ট পাঠানোর কাজও আটকে রয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement