স্কুল শিক্ষকেরা ঋণ না-মেটানোয় ব্যাঙ্ক থেকে কন্যাশ্রী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছিল না ছাত্রীরা। সেই জট কাটল। শুক্রবার থেকে মালদহ হরিশ্চন্দ্রপুরের মিলনগড় সিনিয়র মাদ্রাসার ওই ছাত্রীদের হাতে কন্যাশ্রীর পাশবই তুলে দিলেন ব্যাঙ্ক কতৃপক্ষ। পাশবই তুলে দিয়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাদের মিষ্টিও খাওয়ালেন। কেননা শিক্ষকদের ঋণ মেটানোর জন্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ কন্যাশ্রী প্রকল্প সুযোগ দিচ্ছে না এ কথা চাউর হতেই তা নিয়ে হইচই পড়ে। ব্যাঙ্কও চাপে পড়ে। ঋণ নিয়ে যে শিক্ষকরা তা শোধ করেননি তাঁরাও এ দিন ব্যাঙ্কে হাজির হয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। দ্রুত তাঁরা ঋণ পরিশোধ করবেন বলে আশ্বাস দেন।
বিষয়টি নিয়ে হইচই হতেই নড়চড়ে বসে প্রশাসন। ব্যাঙ্কের ওই এক্তিয়ার নেই বলে সাফ জানিয়ে দেন প্রশাসনের কর্তারা। চাঁচলের মহকুমাশাসক সঞ্জীব দে বলেন, “ব্যাঙ্ক ছাত্রীদের কন্যাশ্রীর পাশবই দিয়েছে বলে শুনেছি।” বঙ্গীয় গ্রামীণ বিকাশ ব্যাঙ্কের দৌলতপুর শাখার ম্যানেজার এই দিন বলেন, “কন্যাশ্রীর পাশবই আটকে রাখা আমাদের এক্তিয়ারে পড়ে না। আমরা শুধু সামাজিক ভাবে শিক্ষকদের উপর একটা চাপ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলাম।”
অভিযোগ, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক-সহ পাঁচ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী ব্যক্তিগত ঋণ নিয়েও তা পরিশোধ করেননি। গত তিন বছরে বার বার বলার পরেও তাঁদের কেউই কখনও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দেখাও করেননি। যাদের মধ্যে দু’ জন আবার অবসরও নিয়েছেন। সে কারণেই গত দু’ সপ্তাহ ধরে ছাত্রীরা ব্যাঙ্কে গেলেও কন্যাশ্রী প্রকল্পে তাঁদের পাশবই দেওয়া হচ্ছিল না বলে অভিযোগ করেন ছাত্রীরা। সেই সময়ে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তাদের জানিয়েছিলেন শিক্ষকরা ঋণের টাকা মেটালে তবেই ছাত্রীদের পাশবই দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার ব্যাঙ্কে বিক্ষোভ দেখাতে গিয়ে সে কথা জানার পর স্কুলে ফিরে এসে শিক্ষকদেরও ঘরে আটকে রেখে তালা ঝুলিয়ে দেয় ছাত্রছাত্রীরা। মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মজিবর রহমান এ দিন বলেন, “মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ব্যাঙ্কে গিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। দ্রুত যাতে ঋণ পরিশোধ করা হয় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কন্যাশ্রী প্রকল্প নিয়ে যে সমস্যা হচ্ছিল তা মিটেছে।”