বেহাল পথ। ছবি: বাপি মজুমদার।
বেহাল জাতীয় সড়কের গর্তে পড়ে সম্প্রতি দুর্ঘটনায় পড়েছে ২৭টি ট্রাক। জলাশয়ে উল্টে গিয়েছে একটি স্কুল-ভ্যানও। গর্তের পাথর ছিটকে গায়ে লাগায় পথচারী বা ব্যবসায়ীরাও আহত হয়েছেন বেশ কয়েক বার। অথচ মালদহের গাজল থেকে চাঁচলের চান্দোয়া দামাইপুর পর্য়ন্ত ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের ২৩ কিলোমিটার রাস্তাটির সংস্কারের জন্য সড়ক কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই বলে অভিযোগ।
বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ওই রাস্তাটুকুতে চলাফেরা করা দায়। তার উপর বৃষ্টি হলে জল দাঁড়িয়ে যায়। প্রাণ হাতে করে বিপজ্জনকভাবে যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা। তাতে সময়ও লাগছে অনেক বেশি। দফতর সূত্রেই খবর, সড়কের ২৩ কিলোমিটারের মধ্যে ১৬ কিলোমিটার রাস্তা একেবারেই বেহাল হয়ে পড়েছে। সামসি-সহ কয়েকটি জায়গায় পরিস্থিতি ভয়াবহ। বৃষ্টি হলে সেখানে এক হাঁটু জল জমে যায়। সড়কের ওই অংশে মাটি ছাড়া কিছুই নেই। এই পরিস্থিতিতে কাজ চালানোর মতো কয়েকবার গর্ত বোজানো হলেও তা কিছুদিনের মধ্যে ফের বেহাল হয়ে পড়ছে। এই সমস্যা দ্রুত না মিটলে ফের আন্দোলনে নামা হবে বলে হুমকি দিয়েছে ব্যবসায়ী সমিতি-সহ বাসিন্দারা। সামসি ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক অজয় শর্মা বলেন, “জাতীয় সড়ক যাতায়াতের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। পুজোর আগে কতৃপক্ষ সংস্কারের আশ্বাস দিলেও হাল ফেরেনি।” অন্য দিকে, মালদহ বাস মালিক সংগঠনের তরফে সুজিত চক্রবর্তী ও উত্তর মালদহ ট্রাক মালিক সংগঠনের তরফে অমূল্য মণ্ডল বলেন, “এ ভাবে বাস-ট্রাক চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। যা পরিস্থিতি তাতে আমাদেরকেও গাড়ি চালানো বন্ধ করে দিতে হবে।”
চাঁচলের মহকুমাশাসক পোন্নমবলম এস বলেন, “পুজোর আগে সড়কটি সংস্কার করে যাতে যাতায়াতের উপযোগী করে তোলা যায় তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলছি।” পূর্ত দফতরের অধীন ৭ নম্বর জাতীয় সড়ক দফতরের মালদহের এক আধিকারিক বলেন, “দুর্ঘটনা এড়িয়ে যাতায়াতে যাতে স্বস্তি দেওয়া যায়, তার জন্য পুজোর আগেই গর্ত বুজিয়ে সংস্কার করার চেষ্টা চলছে।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সাল থেকেই গাজলের কদুবাড়ি থেকে হরিশ্চন্দ্রপুর পর্যন্ত জাতীয় সড়কের প্রায় ৫৩ কিলোমিটার রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ে। তা নিয়ে আন্দোলনের জেরে দু’বছর আগে সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করা হয়।
কিন্তু গাজল থেকে চান্দোয়া দামাইপুর পর্য়ন্ত ২৩ কিলোমিটার রাস্তা তৈরির বরাদ্দ প্রথম দিকে মিলছিল না। পরে মালদহের সাংসদ মৌসম বেনজির নূর কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রকের দ্বারস্থ হলে ৯০ কোটি টাকা মেলে। তারপরে দরপত্র ডাকা হয়। তাতে একজনের বেশি ঠিকাদার অংশ না নেওয়ায় তা বাতিল হয়েছে। এবার কী করবে, তা কেন্দ্রীয় ভূতল পরিবহণ মন্ত্রকই ঠিক করবে।