সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠি। —নিজস্ব চিত্র।
বিশ্ববিদ্যালয় স্তরে ‘অ্যাকাডেমিক পারফরম্যান্স অডিট’ চালু করা দরকার বলে মনে করেন আচার্য তথা রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে এসে ওই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে তাঁর পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে এ কথা বলেন উপাচার্য। তাঁর কথায়, “অ্যাকাডেমিক স্টাফ কলেজ যে সমস্ত নতুন কোর্স বিষয়ক কর্মসূচি হাতে নেয় সেগুলি পর্যালোচনা করতে হবে। ‘অ্যাকাডেমিক পারফরম্যান্স অডিট’ চালু করতে হবে।” অর্থাৎ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আধিকারিকদের বিভিন্ন কোর্স সম্পর্কে প্রশিক্ষিত করার কার্যক্রমগুলি পর্যালোচনায় গুরুত্ব দিতে চান তিনি। রাজ্যপাল বলেন, “রাজ্যে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়েই এখনও এই ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিল (ন্যাক)-এর তরফে মূল্যায়ন করা হয়। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে তার কাজকর্ম সমস্ত মূল্যায়নের বিষয়টি করতে চাই আমরা।”
কী ভাবে সেই মূল্যায়ন হবে? উপাচার্য তাঁর সম্ভাবনার দিকটি জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, “শিক্ষাগত ব্যাপারে পড়ুয়াদের অগ্রগতি, শিক্ষক, অধ্যাপকদের পারফরম্যান্স, গবেষণামূলক কাজ কত হচ্ছে, কী কারণের কত সেমিনার হচ্ছে, বাইরে বিভিন্ন সেমিনারে বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণ, বিভিন্ন প্রকল্প, বিভিন্ন প্রশ্নোত্তর পর্ব পুরো বিষয়টিও বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে দেখা হবে।
তাতে বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক কোন অবস্থায় দাঁড়িয়ে, আগামীতে তাকে কী করতে হবে সে সমস্ত পরিকল্পনা নেওয়া সহজ হবে।” সেই সঙ্গে সামাজিক উন্নয়নে এই বিশ্ববিদ্যালয় কী ভাবে এবং কতটা অংশ নিচ্ছে তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
রাজ্যপালের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় তার নিজের মতো করে মূল্যায়ন করে বা রিপোর্ট তৈরি করে ঠিকই। কিন্তু বাইরের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে অ্যাকাডেমিক অডিট হওয়া তো সব সময়ই উচিত।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরীও রাজ্যপালের সঙ্গে সহমত। তাঁর কথায়, “বাইরের লোক দিয়ে মূল্যায়ন করাটাই তো বাঞ্ছনীয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎকর্ষের জন্যই এটা হওয়া দরকার।”
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য এই বিতর্কে ঢুকতে চাননি। তিনি বলেন, “কে কী বলেছেন, রাজ্যপালই বা কী চান, সেটা তো আমি ওঁদের মুখ থেকে শুনিনি। তাই এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।”
এ দিন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে ডিলিট সম্মান পেলেন কবি জয় গোস্বামী, সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার, অবসরপ্রাপ্ত বিচারক গিরিধারী মালব্য। ডিএসসি সম্মান পেয়েছেন এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়নের অধ্যাপক অরুণ কুমার শ্রীবাস্তব, টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চের প্রাক্তন ডিরেক্টর সব্যসাচী ভট্টাচার্য এবং রসায়নের অধ্যাপক দেবাশিস ভট্টাচার্য। তবে দেবাশিসবাবু এবং সব্যসাচীবাবু এদিন উপস্থিত ছিলেন না।