পুরসভা ও জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের দায় ঠেলাঠেলিতে পরিস্রুত পানীয় জল থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন হাজার দশেক মানুষ। বছর আটেক আগে বন্যার সময় ভূগর্ভস্থ জলের পাইপ ফেটে যায়। তার পর থেকে পুরসভা ও প্রশাসনের কাছে বহু বার আবেদন করেও কোনও কাজ হয়নি।
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট শহরের লাগোয়া ভাটপাড়ার খিদিরপুর ও পুরসভা এলাকার ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের একাংশে পরিস্রুত জল না পেয়ে গত আট বছর ধরে দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছেন বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, বন্যার সময়ে পাইপ ফেটে যাওয়ায় পুরসভার অধীন খিদিরপুর স্কুলপাড়া, দত্তপাড়া, হালদারপাড়া এলাকায় জল সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তার পাশে সার দিয়ে কল থাকলেও সেগুলি দিয়ে জল পড়ে না। পঞ্চায়েত থেকে বসানো কয়েকটি নলকূপের উপর ভরসা করেন এলাকার হাজার দশেক বাসিন্দা। স্থানীয় বাসিন্দা আনন্দ দেব, সুজিত দেব, গৃহবধূ গীতা দত্ত, শীলা দত্তরা আক্ষেপ করে বলেন, “আমরা আত্রেয়ী নদীর ধারে বসবাস করি। অথচ জলকষ্টে দিন কাটাতে হয়। কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও জলের সমস্যা মেটেনি।”
পাইপ লাইন ঠিক থাকলেও পানীয় জল সরবরাহ নিয়ে কয়েকটি এলাকায় ক্ষোভও রয়েছে। ভাটপাড়া অঞ্চলে খিদিরপুর পূর্বপাড়া, মধ্যপাড়া ও পশ্চিমপাড়ায় বছর দুয়েক আগে পিএইচই-র কল বসলেও বাসিন্দারা ঠিক মতো জল পাচ্ছেন না। তাঁদের অভিযোগ, দিনে এক বার সরু ধারায় কলে জল পড়লেও তা পর্যাপ্ত নয়। কোথাও আবার ঠিক মতো জল পড়ে না। বালুরঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান ইন কাউন্সিল দেবজিৎ রুদ্র বলেছেন, “ওই সব এলাকায় অপরিকল্পিত ভাবে পাইপ লাইন বসানোয় জলের চাপ না থাকায় পর্যাপ্ত জল বেরোয় না। পিএইচই-র সঙ্গে বৈঠক করে সমস্যার বিষয়টি তোলা হয়েছে। খুব শীঘ্রই সংস্কারের কাজ শুরু হবে।”
এলাকাবাসীর এই দুর্ভোগের কথা জানেন পুর কর্তৃপক্ষ এবং পিএইচই কর্তারা। দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জেলা নির্বাহী বাস্তুকার প্রজেস সমাজদার বলেন, “বালুরঘাট শহরের খিদিরপুর এলাকায় অকেজো কল মেরামতি ও পানীয় জল সরবরাহের দায়িত্ব পুরসভার। খিদিরপুর গ্রামীণ এলাকার জল সরবরাহের বিষয়টি সহকারী বাস্তুকার দেখেন।” দফতরের সহকারী বাস্তুকার কেশব চন্দ বলেন, “বন্যায় বিধ্বস্ত খিদিরপুর গ্রামে লাইন মেরামতির জন্য সম্প্রতি বিভাগীয় দফতর থেকে প্রায় ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়। তবে প্রশাসনের অনুমোদন না মেলায় এখনও টাকা এসে পৌঁছয়নি।” তাঁর বক্তব্য, শহরের ক্ষেত্রে জল সরবরাহের দায়িত্ব পুরসভার। এ ক্ষেত্রে পুরসভা টাকা দিলে মেরামতির কাজ পিএইচই করতে পারে। বালুরঘাট পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেন শীল বলেন, “শহরে জল সরবরাহের মত কারিগরি পরিকাঠামো পুরসভার নেই। তবে পানীয় জলের অকেজো লাইন মেরামতির বিষয়ে তহবিলের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা।”