শিলিগুড়িতে সাংবাদিক সম্মেলনে সূর্যকান্ত মিশ্র। নিজস্ব চিত্র।
পাহাড়ের সমস্যার প্রকৃত সমাধানের রাস্তা কী হতে পারে তা স্থানীয় বাসিন্দাদের সামনে তুলে ধরে দার্জিলিঙে প্রচার শুরু করতে উদ্যোগী সিপিএম। বুধবার শিলিগুড়িতে দলের নির্বাচনী কমিটি এবং জেলা কমিটির বৈঠক হয়। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা প্রাক্তন স্বাস্থ্য মন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্রর উপস্থিতিতেই সেখানেই এই প্রচার কৌশল নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়। হিলকার্ট রোডের দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে এ দিন সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি নেতৃত্ব পাহাড় সমস্যা মেটানোর কথা বলে বরাবরই সুবিধাবাদী রাজনীতি করেছে। পাহাড়ের বাসিন্দাদের ধোকা দিয়েছে। সেখানকার সমস্যা মেটেনি। সে ক্ষেত্রে বিকল্প সমাধান সূত্র কী আমরা প্রকাশ করব। আগামী ১৪ মার্চ দার্জিলিঙের জিডিএনএস লাইব্রেরি হলে প্রার্থী নিয়ে সভা করে তা জানানো হবে।”
সূর্যকান্ত মিশ্রের দাবি, পাহাড়ের সমস্যা নিয়ে তারা সব সময়তেই আন্তরিক ছিলেন। জ্যোতি বসুর উদ্যোগে বাম জমানায় দার্জিলিং গোর্খা হিল কাউন্সিল (ডিজিএইচসি) গড়ে পাহাড়ে তারাই শান্তি এনেছিলেন। পাহাড়কে আরও বেশি করে স্বায়ত্ত্ব শাসনের সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে তারা সব সময়ই ইতিবাচক ভূমিকা নিয়েছেন। সম্প্রতি তৃণমূল প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মোর্চা নেতৃত্ব জানিয়েছিলেন তারা মনে করছেন, তৃণমূল তাদের সঙ্গে যে নীতি নিয়ে চলছে তার চেয়ে বাম সরকার ভালছিল। সে প্রসঙ্গে সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, “মোর্চার সঙ্গে তারা সব সময়তেই সুসম্পর্ক, আলোচনার পরিবেশ বজায় রাখতে চেয়েছেন। বিধানসভাতেও পাহাড়ের স্বায়ত্ত্ব শাসন চেয়েছেন তারা সরব হয়েছেন। যাঁরা মোর্চার দায়িত্বে রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে আলাপআলোচনা করে পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখতে তারা সচেষ্ট হয়েছিলেন।’’
বাস্তব পরিস্থিতিতে, বাম জমানার শেষ দিকে মোর্চার আন্দোলনের জেরে পাহাড়ে কোনও সভাসমাবেশ করাই অসম্ভব হয়ে গিয়েছিল সিপিএমের কাছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সূর্যকান্তবাবুরা তাদের জমানায় পাহাড়ের উন্নয়ন করেছেন, আর সে জন্যই তারা দলের সভা করতে পাহাড়ে ঢুকতে পর্যন্ত পারেননি। আর এখন পাহাড়ের পর্যটকদের ভিড়, বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ হচ্ছে। তাই সূর্যকান্তবাবুর ওই বক্তব্য নিয়ে বেশি কিছু বলতে চাই না।” কংগ্রেস এবং বিজেপি নেতৃত্ব সিপিএমের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।
যদিও পাহাড়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানেও তারা ভাল ফল করবেন বলে দাবি করেছেন সূর্যকান্তবাবু। সাংবাদিক বৈঠকে তাঁর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য, দলের কার্যকরি জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার এবং পাহাড়ে তাঁদের প্রার্থী সমন পাঠক। মোর্চা-তৃণমূল সম্পর্কের আবনতি নিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, “আমি আগেই বলেছি। পাহাড় হাসছে না। পাহাড় আবার কাশতে শুরু করেছে।” পরবর্তী পরিস্থিতি কী হবে তা কেউ জানে না। তাই পাহাড়ের সমস্যা মেটাতে এবং উন্নয়নের স্বার্থে সিপিএমকে ভোট দিতে তাঁরা বাসিন্দাদের আবেদন জানাবেন।