আকাশ ফুঁড়ে টাওয়ার মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। অথচ মোবাইলে বিএসএনএল টাওয়ারে কোনও সিগন্যালই নেই। দক্ষিণ দিনাজপুরের তপন ব্লকের লস্করহাট থেকে কুশমন্ডি ব্লকের কালিকামোড়া পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে দীর্ঘদিন ধরে স্তব্ধ বিএসএনএলের মোবাইল পরিষেবা। জেলা সদর বালুরঘাটে বিএসএনএলের বেশ কয়েকটি টাওয়ার ঠিক ভাবে কাজ না করায় পরিষেবা ঠিক মতো মিলছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। বালুরঘাট মহকুমা থেকে জেলা বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের একই বক্তব্য, “টাওয়ার অর্থাত্ বিটিএসগুলির (বেস ট্রান্সরিসিভার স্টেশন) ব্যাটারি চুরি হয়ে যাওয়ায় একাধিক টাওয়ার অকেজো হয়ে রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট বিভাগের ডিস্ট্রিক্ট ম্যানেজার (টিডিএম) সোমনাথ ঘোষের কথায়, “টাওয়ারগুলি থেকে দুষ্কৃতীরা ব্যাটারি চুরি করে নেওয়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি অ্যান্টেনা সংযোগের জন্য পিতলের যন্ত্রাংশও চুরি হয়েছে। গত একবছর ধরে ওই চুরির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও, এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি।” বারবার ব্যাটারি বদলের জন্য বিভাগীয় সরবরাহের সমস্যা রয়েছে বলে জানান সোমনাথবাবু।
ফলে ওই সব এলাকার বিএসএনএল গ্রাহকেরা কোনও পরিষেবাই পাচ্ছেন না। অথচ বেসরকারি মোবাইল সংস্থার টাওয়ারগুলি দিব্যি চালু থাকায় মানুষের মধ্যে বিএসএনএল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বাড়ছে। আউটিনা গ্রামপঞ্চায়েতের প্রধান চন্দনা বিশ্বাস বলেন, “তপনের লস্করহাট সহ প্রত্যন্ত সীমান্তের গ্রাম থেকেও অন্য মোবাইল সংস্থাগুলির সুষ্ঠু মোবাইল পরিষেবা মিলছে।”
কেন বার বার চুরি যাচ্ছে নির্দিষ্ট একটি সংস্থারই ব্যাটারি? দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলা পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝরিয়া বলেন, “সম্প্রতি হরিরামপুরে বিএসএনএলের এক্সচেঞ্জে দুষ্কৃতীরা হানা দিয়ে ২২টি ব্যাটারি চুরি করে। অভিযুক্তদের ধরতে তদন্ত হচ্ছে।” তবে অন্য এলাকায় টাওয়ার থেকে ব্যাটারি চুরির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের নজরদারির খামতি রয়েছে বলে মত পুলিশ সুপারের। গ্রাহকদের আরও অভিযোগ, মেরামতির বিষয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও হেলদোল দেখা যায়নি। স্থানীয় আউটিনা গ্রামপঞ্চায়েত কার্যালয়ের মধ্যে টাওয়ারটি রয়েছে। একইভাবে এই ব্লকের রামপুর, গঙ্গারামপুরের শুকদেবপুর, কুমারগঞ্জ, হরিরামপুর এবং কুশমন্ডির কালিকামোড়া-সহ একাধিক জায়গায় সংস্থার টাওয়ারগুলি অকেজো।
ক্ষুব্ধ দক্ষিণ দিনাজপুরের জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, “আমরা বিএসএনএলকে যে কোনও প্রশাসনিক সাহায্য করতে প্রস্তুত। কিন্তু ছুটির দিনগুলিতে বিএসএনএলের মোবাইল ও ল্যান্ডফোন পরিষেবা কেন অকেজো থাকে, তা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখতে হবে।” বালুরঘাটের মহকুমা টেলিফোন ইঞ্জিনিয়র প্রাণকৃষ্ণ রায় বলেন, “এটা আভ্যন্তরীন বিষয়। আমার পক্ষে জানা সম্ভব নয়।”