পুরসভার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

তৃণমূল পরিচালিত কোচবিহার পুরসভার বিরুদ্ধে বহু কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন বামপন্থী কাউন্সিলররা। বৃহস্পতিবার জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক পার্টি অফিসে ওই অভিযোগ তোলা হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০৩:৪৬
Share:

তৃণমূল পরিচালিত কোচবিহার পুরসভার বিরুদ্ধে বহু কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুললেন বামপন্থী কাউন্সিলররা। বৃহস্পতিবার জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক পার্টি অফিসে ওই অভিযোগ তোলা হয়।

Advertisement

অভিযোগ করা হয়েছে, বস্তি উন্নয়ন প্রকল্পে ৩ কোটি ৫৬ লক্ষ টাকা একটি সংস্থাকে আগাম দেওয়া হয়েছে। অথচ ওই টাকায় কত ইট পাওয়া গিয়েছে? আদপে কোনও ইট পাওয়া গিয়েছে কি না সে সংক্রান্ত কোনও তথ্য পুরসভার হাতে নেই। ওই প্রকল্পেরই সাড়ে ৮ লক্ষ টাকা পুরসভার কর্মী প্রাক্তন হিসাব রক্ষক কনক দাসের অ্যাকাউন্টে রয়েছে। কী ভাবে সরকারি প্রকল্পের টাকা একটি ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে রাখা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পাওয়ার হাউস থেকে মিলিটারি ব্যারাক পর্যন্ত নিকাশি তৈরির কাজ দেখিয়ে ৬২ লক্ষ টাকা তোলা হয়েছে। অভিযোগ, বাস্তবে রাস্তায় কোনও নিকাশি নালা তৈরি হয়নি। পুরসভায় অতিরিক্ত কর্মী দেখিয়েও প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা তুলে নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এর কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি কোচবিহার পুরসভার বর্তমান চেয়ারম্যান দীপক ভট্টাচার্য। তিনি অবশ্য ওই অভিযোগগুলি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে ভারপ্রাপ্ত হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব থেকে কনকবাবুকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই পদে স্থায়ী হিসাবরক্ষক দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “আমি গত অগস্ট মাসে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নিই। সমস্ত বিষয় ভাল করে জানি না। ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পনেরো দিনের মধ্যে কনকবাবুর কাছে সমস্ত তথ্য চেয়েছি। তা নেওয়ার পরেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

Advertisement

কনকবাবু বলেন, “প্রাক্তন চেয়ারম্যানের নির্দেশেই ওই টাকা আমার অ্যাকাউন্টে রয়েছে। সে সংক্রান্ত সমস্ত তথ্য রয়েছে।”

পুরসভার বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য তথা কোচবিহার জেলা সিপিএমের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহানন্দা সাহা আকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান। তিনি অভিযোগ করেন, গত দুই বছর ধরে ওই কমিটির কোনও বৈঠক করা হয়নি। বার বার অভিযোগ জানানোর পর সম্প্রতি ওই বৈঠক হয়। তিনি অভিযোগ করেন, “বৈঠকের পর বিষয়গুলি আমাদের সামনে পরিস্কার হয় কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। সরকারি টাকা ব্যক্তিগত স্বার্থে খরচ করা হয়েছে। আমরা ওই ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত চাই।”

টানা প্রায় পনেরো বছর ধরে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন বীরেন কুণ্ডুু। তিনি মারা যাওয়ার পর চলতি বছরেই পুরসভার চেয়ারম্যান করা হয় তাঁরই অনুগামী বলে পরিচিত দীপকবাবুকে। অভিযোগ, পুরসভায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে কর্মীর সংখ্যা ৮৩৩ জন। সরকারি অনুমোদন রয়েছে ৪৪৩ জনের। এর পরেও পুরসভার বিভিন্ন বিভাগে কর্মী সংখ্যা কম থাকে। বামেদের অভিযোগ, ভাঙারপাড়ে একটি ব্যক্তিগত কাজে ২ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া হয়েছে। ওই বিলে কে সই করেছেন? তার হিসেবই বা কোথায়?

সে সংক্রান্ত কোনও তথ্য অবশ্য পুর-কর্তৃপক্ষ দিতে পারেননি।

শুধু তাই নয়, বার্ধক্য ভাতার ৪৫ টাকা অন্য খাতে খরচ করা হয়েছে বলেও অভিযোগ তাঁদের। এক কোটি টাকার উপরে পুরসভার ব্যক্তিগত ঋণ রয়েছে বলে অভিযোগ। ওই টাকা কার কাছে নেওয়া হয়েছে, তা নিয়েও কোনও তথ্য দিতে পারেনি পুরসভা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement