এবার লোকসভা ভোটের প্রচারে হলদিবাড়িতে বামেদের পথেই হাঁটছে তৃণমূল। বামেরা হলদিবাড়ির যে সমস্যাকে কেন্দ্র করে প্রতিটি নির্বাচনে প্রতিশ্রুতি দিয়ে এসেছিল, তৃণমূল কংগ্রেসও সেই একই সমস্যার সমাধানের প্রতিশ্রুতি নিয়ে প্রচারে নেমেছে। হলদিবাড়ি এবং মেখলিগঞ্জের বাসিন্দাদের প্রধান দাবি মেখলিগঞ্জের সঙ্গে যোগাযোগের জন্যে তিস্তার ওপর একটি সেত।ু এবারে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী বিজয় চন্দ্র বর্মন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, হলদিবাড়ি-মেখলিগঞ্জের যোগাযোগের জন্যে তিস্তায় দ্বিতীয় সেতু গড়া হবে। বাসিন্দাদের বক্তব্য, আগে প্রতিটি নির্বাচন আসলে বামেরা একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সেতু তৈরি হয়নি। এবার শাসক দলের প্রার্থী আবারও একই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বাম আমলের মন্ত্রী বর্তমানে মেখলিগঞ্জের ফরওয়ার্ড ব্লক বিধায়ক পরেশ অধিকারি ওই সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি বহুবার দিয়েছেন। যদিও তিনি বলেছেন, “রাজ্য সরকারের একার পক্ষে এই সেতু তৈরি করা সম্ভব না। প্রকল্প তৈরি করে আমরা কেন্দ্রীয় সরকার এবং যোজনা কমিশনের কাছে পাঠিয়েছিলাম। তাঁরা টাকা দেয়নি বলে সেতু হয়নি। তৃণমূল একই কথা বলছে।” তৃণমূল কংগ্রেসের জলপাইগুড়ির জেলা সভাপতি চন্দন ভৌমিক বলেন, “কোচবিহার জেলায় দিনহাটা এবং সিতাই-এর মধ্যে সংযোগের জন্যে আদাবাড়ি সেতু করেছি। হলদিবাড়ি এবং মেখলিগঞ্জের মধ্যে সংযোগ রক্ষার জন্যে আমরা তিস্তার ওপর দ্বিতীয় সেতু অবশ্যই নির্মাণ করব। আমরা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি না।” ছয়টি পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে গঠিত জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত হলদিবাড়ি ব্লকে ভোটারের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৪০ জন। নতুন ভোটারদের নিয়ে আর একটি তালিকা প্রকাশিত হবে, তাতে সংখ্যা আরও অন্তত ৩ হাজার বাড়বে বলে মহকুমা নির্বাচন দফতর সূত্রের খবর। হলদিবাড়ির জেলা শহর কোচবিহারের দূরত্ব প্রায় ১২০ কিলোমিটার। সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থা বলে কিছু নেই। হলদিবাড়িবাসীকে কাজের জন্যে মেখলিগঞ্জের ওপর নির্ভর করতে হয়। হলদিবাড়ির বাসিন্দাদের দুইবার বাস পরিবর্তন করে ৭৮ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে ওই মহকুমা শহরে যাতায়াত করতে হয়। শীতকালে তিস্তার জল কমলে নৌকোয় তিস্তার তিনটি ধারা পার হয়ে হেঁটে ৪ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে মেখলিগঞ্জে যেতে হয় বাসিন্দাদের। প্রশাসনিকভাবে নির্বাচনের কাজের সুবিধার জন্যে হলদিবাড়ি সমেত মেখলিগঞ্জ মহকুমাকে কোচবিহারের বদলে জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে।
বাসিন্দাদের বক্তব্য, ওই সেতু তৈরি হলে সমস্যা অনেকটাই মিটবে। কিন্ত রাজনৈাতিক দলগুলি ভোট আসলে প্রতিশ্রুতি দেয়। ভোটের পর নানা কথা বলে তা হয়নি বলে এড়িয়ে যায়। আগেও তা হয়েছে, এই বারও সেতুর প্রচার শুরু হয়েছে।