স্বামীর বিরুদ্ধে দ্বিতীয় বিয়ে ও নানা ভাবে অত্যাচার চালানোর অভিযোগে মামলা রুজুর পরে এক মাস কেটে গেলেও কেউ গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ ‘নির্যাতিতা’ বধূ।
শুক্রবার ওই বধূ পুলিশের কাছে এটাও অভিযোগ করেছেন, তাঁর স্বামী কৌশিক রায় ও শাশুড়ি মায়া দেবী তাঁকে ওষুধ খাইয়ে একাধিকবার গর্ভপাতে বাধ্য করিয়েছেন। এমনকী, ওই ব্যক্তি একটি নবজাতককে কোনও নথি ছাড়াই তাঁর কাছে এনে দিয়ে চুপ করে থাকতে বলেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রের খবর, বধূর অন্যান্য অভিযোগও গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন তদন্তকারী অফিসার।
কিন্তু অভিযুক্তদের পুলিশ ধরতে পারছেন না কেন তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার জগমোহন বলেন, “অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি হচ্ছে। নিশ্চয়ই ধরা পড়বে।”
এই অবস্থায়, পুলিশের বিরুদ্ধে ‘অতি সক্রিয়তা’র অভিযোগে সরব হয়েছেন কৌশিকবাবুর মালিকানাধীন হোটেল ও মদের দোকানের কর্মীদের একাংশ। তাঁদের অভিযোগ, তদন্তে গিয়ে শিলিগুড়ি থানার আইসি বিকাশকান্তি দে কয়েকজনকে মারধর করেছেন। শুক্রবার শিলিগুড়ির মহকুমাশাসক দীপাপ প্রিয়ার কাছে পুলিশি হয়রানি বন্ধ, ওই কর্মীদের নিরাপত্তা প্রদান ও আইসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অভিযোগ জানান বামপন্থী শ্রমিক সংগঠন ইন্ডিয়ান ফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নের সদস্য সমর্থকেরা।
ওই সংগঠনের দার্জিলিং জেলা কমিটির সম্পাদক পরাণ চন্দ দাবি করেন, “অভিযুক্ত এবং তার স্ত্রীর মধ্যে যা হয়েছে, তার বিরুদ্ধে পুলিশ কী ব্যবস্থা নেবে, সে সব তাদের ব্যাপার। তাতে সংস্থার কর্মীদের হেনস্থা করা হলে তা বরদাস্ত করা হবে না।”
তবে পুলিশের একাংশের সন্দেহ, আড়াল থেকে অভিযুক্ত পুলিশের উপরে চাপ তৈরি করতেই নানা ভাবে ছক কষেছেন। সে জন্যই পুলিশের বিরুদ্ধে নানা ভাবে অভিযোগ তোলা হচ্ছে কি না তা নিয়েও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ কর্তৃপক্ষ। পুলিশ সূত্রের খবর, অভিযুক্ত কৌশিকের বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন, চুরি, দ্বিতীয় বিবাহ, স্ত্রীকে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে।
অভিযোগ দায়ের হয়েছে কৌশিকের মা মায়াদেবীর বিরুদ্ধেও। পুলিশ এটাও জানতে পেরেছে, কৌশিক একটি পুত্র সন্তান দত্তক নেন। সেই প্রক্রিয়াতেও বিস্তর গরমিল রয়েছে বলে অভিযোগ। সে বিষয়েও খোঁজ খবর করছেন তাঁরা। পুলিশের এক কর্তা জানান, কয়েকজন কর্মী নানাভাবে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখচেন বলে অভিযোগ মিলেছে।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, গত ৩ ডিসেম্বর শিলিগুড়ি থানায় স্বামীর বিরুদ্ধে তাঁর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ না করে দ্বিতীয় বিবাহের অভিযোগ দায়ের করেন বধূ।