নাম না করে শরিককে হুমকি উদয়নের

কোচবিহারে তুলনামূলক শক্ত জমিতে দাঁড়িয়ে শরিক দলের সঙ্গে যৌথ সভা আর করবেন কিনা তা ‘ভাবতে হবে’ বলে মন্তব্য করলেন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা উদয়ন গুহ। দলীয় সূত্রের খবর, সরকারি আলু কেনার টাকা নিয়ে অনিয়মের ঘটনায় অভিযুক্ত জলপাইগুড়ির ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা গোবিন্দ রায়কে নিয়ে সিপিএম নেতৃত্বের একাংশের আপত্তির প্রেক্ষিতেই তাঁর এই মন্তব্য। তারই জেরে এ দিন উদয়ন বাবু সিপিএমকে পাল্টা হুমকি দিলেন বলে মনে করছেন দলের নেতারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৪৫
Share:

কোচবিহার রবীন্দ্রভবনে ফব-র কনভেনশনে। —নিজস্ব চিত্র।

কোচবিহারে তুলনামূলক শক্ত জমিতে দাঁড়িয়ে শরিক দলের সঙ্গে যৌথ সভা আর করবেন কিনা তা ‘ভাবতে হবে’ বলে মন্তব্য করলেন ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা উদয়ন গুহ। দলীয় সূত্রের খবর, সরকারি আলু কেনার টাকা নিয়ে অনিয়মের ঘটনায় অভিযুক্ত জলপাইগুড়ির ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা গোবিন্দ রায়কে নিয়ে সিপিএম নেতৃত্বের একাংশের আপত্তির প্রেক্ষিতেই তাঁর এই মন্তব্য। তারই জেরে এ দিন উদয়ন বাবু সিপিএমকে পাল্টা হুমকি দিলেন বলে মনে করছেন দলের নেতারা।

Advertisement

শনিবার কোচবিহারের রবীন্দ্রভবনে দলের জেলা কর্মী কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন উদয়নবাবু। এখানেই উদয়ন বাবু বলেন, “উত্তরবঙ্গে ফরওয়ার্ড ব্লককে হেয় করার জন্য অনেকদিন থেকেই নিশানা করা হচ্ছে। আমাদের কোনও শরিক ভাবছে গোবিন্দ রায়ের সঙ্গে একমঞ্চে বসলে তাদের চরিত্র নষ্ট হবে, তাই একসঙ্গে সভা করতে তাদের অনেকে লজ্জা পাচ্ছেন। অভিযোগ ওঠা মানেই কেউ দোষী নন। তাছাড়া জনগণ ও আদালত ঠিক করবে কে দোষী।” এরপরেই উদয়নবাবুর সংযোজন, “এ সব কথা তৃণমূলের নেতারা বলতে পারেন, কোন শরিক এমন কথা বললে, তাদের পাল্টা বলব, আপনাদের বিরুদ্ধেও অনেক অভিযোগ রয়েছে। তাই আমরাও বলতে পারি আপনাদের সঙ্গে মঞ্চ বসার বিষয়টি ভাবতে হবে।”

তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠার পর বেশ কিছুদিন খানিকটা অন্তরালেই ছিলেন জলপাইগুড়ির ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা গোবিন্দ রায়। সম্প্রতি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আবার দেখা যাচ্ছে তাঁকে। এই নিয়েই সিপিএম জেলা নেতৃত্বের একাংশ সম্প্রতি আপত্তি জানান বলে জানা গিয়েছে। বিষয়টি ইতিমধ্যে বামফ্রন্টের রাজ্য কমিটির চেয়ারম্যান বিমান বসুর কাছেও জানানো হয়েছে বলে ফরওয়ার্ড ব্লক সূত্রের খবর।

Advertisement

আগামী বছর জেলায় ৪টি পুরসভার নির্বাচন। সে কথা মাথায় রেখেই দলের একসময়ের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত কোচবিহারে কর্মী সমর্থকদের চাঙা করতে চাইছে ফব নেতৃত্ব। ওই ভাবনা থেকেই এ দিন কনভেনশন ডাকা হয় বলে জানা গিয়েছে। দলের নাম উল্লেখ না করেও শরিক সিপিএমকে পাল্টা বার্তা দেওয়াই শুধু নয়, কোনও শরিকের ‘দাদাগিরি’ সহ্য করা হবেনা বলেও প্রকাশ্যে ঘোষণা করা হয়। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য উদয়নবাবু বলেন, “কেউ যদি মনে করেন তাকে ছাড়া চলবেনা, তাঁরা ভুল ভাববেন। কোন দাদাগিরি চলবে না, প্রয়োজনে একাই চলব।”

সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য অনন্ত রায় অবশ্য বলেন, “বাইরে কে কী বলছেন তা নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। কোন বিষয়ে আলোচনা থাকলে উদয়নবাবু ফ্রন্টের বৈঠকে বলতে পারতেন।”

নিজের দলের কর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধেও সরব ছিলেন উদয়নবাবু। তাঁর কথায়, “যারা ঘর থেকে বের হচ্ছেন না তাদের বার্তা দিন।” সুযোগ সুবিধে নিতে বসে যাওয়া মাঝের সারির কিছু নেতা বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন তিনি। এ দিনের কনভেনশনে বিধায়ক অক্ষয় ঠাকুর, দীপক সরকার, দেবাশিস বণিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এ দিন উত্তরবঙ্গে এইমস, তৃণমূলের বিরুদ্ধে অশান্তির অভিযোগ সহ ৭ দফা দাবিতে ১৭ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ির বিভাগীয় কমিশনারের দফতর ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement