ধর্ষণের চেষ্টা, অভিযুক্ত ব্লক তৃণমূল নেতা

বিধবা মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। ঘটনায় অভিযুক্ত দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর ব্লক সভাপতি তাজমুল হক-সহ তিন জনই তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের অনুগামী বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বালুরঘাট শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৫ ০২:১৫
Share:

বিধবা মহিলাকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে এল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। ঘটনায় অভিযুক্ত দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর ব্লক সভাপতি তাজমুল হক-সহ তিন জনই তৃণমূলের জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রের অনুগামী বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। সোমবার স্থানীয় কলসি এলাকার বাসিন্দা ওই মহিলা বুনিয়াদপুর মহকুমা আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে গেলে ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। বিপ্লব-অনুগামীরা দাবি করেন, অভিযুক্তদের হেয় করতেই দলের বহিষ্কৃত নেতা সোনা পাল মহিলাকে দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করিয়েছেন। ঘটনার প্রতিবাদে এ দিন বিপ্লব-ঘনিষ্ঠ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরা হরিরামপুরে মিছিল ডাকেন। সেখানে সোনা পালের গ্রেফতারের দাবিতে তাঁরা সরব হন।

Advertisement

গঙ্গারামপুরের এসডিপিও রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, “ঘটনার কথা জানা নেই। খোঁজ নেব।” জেলা পুলিশ সুপার শীশরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “ওই মহিলার অভিযোগ খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে।”

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর আটচল্লিশের ওই মহিলা ১৯ ফেব্রুয়ারি থানায় লিখিত অভিযোগে জানান, সাত-আট দিন আগে রাত ৮টা নাগাদ তাজমুল, স্থানীয় তৃণমূল নেতা আতাউর রহমান এবং তৈমুর রহমানকে নিয়ে তাঁর ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এর আগেও অভিযুক্তরা তাঁকে একাধিক বার উত্ত্যক্ত করেছে বলেও মহিলা অভিযোগ করেন। কারও উস্কানিতে তিনি ওই অভিযোগ করেননি বলেও দাবি করেন। কিন্তু পুলিশ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ তুলে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তবে কাগজপত্র তৈরি না থাকায় এ দিন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে তিনি মামলা দায়ের করতে পারেননি বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।

Advertisement

এ দিন তাজমুল বলেন, “দল থেকে বহিষ্কৃত এবং জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ পদ থেকে অপসারিত হরিরামপুরের তৃণমূল নেতা সোনা পাল ষড়যন্ত্র করে ওই মহিলাকে দিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করিয়েছেন। আমি চাই প্রকৃত তদন্ত করে সত্য উদ্ঘাটিত হোক।” তিনি দাবি করেন, গ্রামে ওই মহিলার বাড়ির পাশে এক জন ইন্দিরা আবাসের ঘর পেয়েছেন। এ ব্যাপারে ওই মহিলার হয়ে তাজমুল তদ্বির না করায় তিনি ঘর পাননি বলে দাবি করেছিলেন। তাঁর সেই ক্ষোভকে কাজে লাগিয়েই মিথ্যা ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ তোলা হয়েছে।

অন্য দিকে সোনা পাল বলেন, “মহিলার অভিযোগ খতিয়ে দেখে উপযুক্ত তদন্ত আমরাও চাইছি। পুলিশ বিষয়টি ধামাচাপা দিতে মহিলার অভিযোগকে গুরুত্ব না দেওয়ায় উনি বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন। এখন অভিযুক্তরা সাফাই গেয়ে মিছিল করছেন। তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব কেন পদক্ষেপ করছেন না?”

দক্ষিণ দিনাজপুরের তৃণমূল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র বলেন, “দলবিরোধী ও অন্যায় কাজের সঙ্গে যুক্তদের কোনও ভাবেই প্রশ্রয় দেওয়া হয় না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে ঘটনাটির পেছনে ষড়যন্ত্র কাজ করেছে বলে খবর পেয়েছি।” বিপ্লববাবুর দাবি, বহিষ্কৃত হওয়ার পরে সোনা পাল নানা ভাবে হরিরামপুরের দলীয় নেতৃত্বকে হেনস্থা করতে উঠেপড়ে লেগেছেন বলে তাঁর কাছে অভিযোগ এসেছে। তিনি বলেন, “পুলিশকে উপযুক্ত তদন্ত করতে বলেছি। ওই মহিলা কেন ঘটনার দিন নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি, তাও খতিয়ে দেখতে হবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement