মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের রহমতপুরে তরুণীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ফিরোজ আলি এখনও অধরা। ঘটনার পর রাতেই সে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছে বলে পুলিশের দাবি। ধৃত অপর অভিযুক্ত মাসুদ আলিকে শুক্রবার চাঁচল মহকুমা আদালতে তোলা হলে তাকেও হেফাজতে চাইল না পুলিশ। ফলে ধৃতকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন মহকুমা আদালতের বিচারক। হরিশ্চন্দ্রপুরের আইসি বাবিন মুখোপাধ্যায় বলেন,“ ফিরোজ ধরা পড়লেই দুজনকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া হবে।”এদিকে ওই তরুণী পুরোপুরি সুস্থ না হলেও, হাসপাতালে বা অন্য কোথাও চিকিৎসা করাতে যেতে রাজি না হওয়ায় মুষড়ে পড়েছে তাঁর পরিবার। এখন বাড়িতে রেখেই তাঁর চিকিৎসা করানো হচ্ছে। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “ওই ঘটনায় এক অভিযুক্ত ধরা পড়েছে। অন্যজনের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত দুজনের বাড়িই চাঁচলে। বাড়ি থেকে প্রায় ছ’ কিলোমিটার দূরে কনুয়ায়, সাইকেলে চেপে জলসা দেখতে গিয়েছিল তারা। সম্পর্কে দুজন খুড়তুতো ভাই। বুধবার রাতে কনুয়ায় ওই জলসার অনুষ্ঠান থেকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার নাম করে ডেকে নিয়ে গিয়ে ওই তরুণীকে তারা ধর্ষণ করে বলে অভিযোগ। খোঁজাখুঁজি করার সময় মাসুদ আলিকে বাসিন্দারা ধরে ফেলেন। তাকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় ক্ষুব্ধ জনতা। কিন্তু ওই ঘটনায় অভিযুক্ত ফিরোজকে ধরতে পারেনি পুলিশ।
এদিকে তরুণীকে নিয়ে বিব্রত হয়ে পড়েছে তার পরিবারের লোকজন। তরুণীর মা-বাবা নেই। দাদাও মানসিক ভারসাম্যহীন। বাড়িতে অবিবাহিত এক দিদিই পরিবারের দেখভাল করেন। পাশেই থাকেন এক কাকা। তিনি তরুণীর হয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান। এদিন তরুণীর কাকা বলেন, “এ রকম একটা ঘটনার পর ভাল থাকা যায় না। ভাইঝি বাড়িতেই রয়েছে।”
তরুণীর বাড়ি যে এলাকায়, ওই এলাকাতেই সিপিএমের চাঁচল জোনাল কমিটির সম্পাদক হামেদুর রহমানের বাড়ি। তিনি বলেন, “অভিযুক্তরা যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায় সেটা পুলিশকে দেখতে হবে। তরুণীর তেমন কোনও অভিভাবক না থাকায় ওর যথাযথ চিকিৎসা হচ্ছে না। পরিবারের সঙ্গে কথা বলব। ওরা চাইলে সবরকম সাহায্য করা হবে।”
চাঁচল-১ ব্লকের প্রাক্তন তৃণমূল সভাপতি মজিবর রহমান বলেন, তরুণীর পরিবার চাইলে, সহয়োগিতার দরকার হলে অবশ্যই পাশে দাঁড়াব। একই আশ্বাস দিয়েছেন ব্লক কংগ্রেস সভাপতি ইন্দ্রনারায়ণ মজুমদারও।