চাঁচলের বীরস্থলে। নিজস্ব চিত্র।
সড়ক দুর্ঘটনায় এক বৃদ্ধের মৃত্যুর পর পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বাসিন্দাদের বিক্ষোভে উত্তেজনা দেখা দিল মালদহের চাঁচল বীরস্থল এলাকা। শুক্রবার ভোরে চাঁচলের বীরস্থলে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে। সামসি থেকে চাঁচল আসার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি পিকআপ ভ্যান গাছে ধাক্কা মারায় মৃত্যু হয় এক বৃদ্ধের। জখম হন আর এক যাত্রীও। দুর্ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। দীর্ঘক্ষণ পার হলেও থানা থেকে দু কিলোমিটার দূরে ঘটনাস্থলে পুলিশের দেখা মেলেনি বলে অভিযোগ।
ঘণ্টা দেড়েক বাদে পুলিশ পৌঁছলে তাদের ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে বাসিন্দারা। অবরোধের পাশাপাশি দেহ তুলতে না দিয়ে পুলিশকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ চলতে থাকে। পরে আইসির হস্তক্ষেপে চার ঘন্টা বাদে অবরোধ উঠলে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ। সকালে দীর্ঘক্ষণ ধরে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে থাকার জন্য চূড়ান্ত নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। চাঁচলের আইসি তুলসীদাস ভট্টাচার্য় বলেন, “সারারাত ডিউটি সেরে পুলিশকর্মীরা থানায় ফেরার কিছুক্ষণের মধ্যেই দুর্ঘটনাটি ঘটে। এতে তাঁদের যেতে কিছুটা দেরি হয়েছে। ওই বৃদ্ধ দুর্ঘটনার কয়েক মিনিটের মধ্যেই মারা যান।”পুলিশ জানায়, মৃতের নাম কপিল প্রসাদ মন্ডল (৬৫)। তাঁর বাড়ি বিহারের কাটিহারে। চাঁচলের শ্রীরামপুরে তাঁর মেয়ের শ্বশুরবাড়ি। কলকাতা থেকে পারিবারিক কাজ সেরে মেয়ের বাড়িতে যাবেন বলে এদিন রাধিকাপুর এক্সপ্রসে সামসিতে নেমে আরও এক যাত্রীর সঙ্গে চাঁচলগামী পিকআপ ভ্যানে ওঠেন কপিলবাবু। বীরস্থল এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি একটি গাছে ধাক্কা মারে। ঘটনার পর চালক পালিয়ে যায়। জখম যাত্রীকে উদ্ধার করে বাসিন্দারাই তাকে চাঁচল হাসপাতালে পাঠান। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্ঘটনার পর কিছুক্ষণ ওই বৃদ্ধ জীবিত ছিলেন। তাঁকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নেওয়া গেলে হয়তো বাঁচানোর চেষ্টা করা যেত। পুলিশ আসতে দেরি করায় এরপর পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন বাসিন্দারা। পরে পুলিশ পৌঁছাতেই বাসিন্দাদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় তাঁদের। ওই সময় পুলিশকর্মীদের একাংশের সঙ্গে বেশ কিছু বাসিন্দার ধ্বস্তাধ্বস্তিও হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমূল নেতা আবদুস সামাদ বলেন, “পুলিশকে খবর দেওয়ার পরেও পুলিশ দেরিতে আসায় বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। পুলিশের সঙ্গে বাসিন্দাদের একাংশের ধ্বস্তাধ্বস্তিও হয়। সবাইকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে হয়।” মৃতের মেয়ে তরু মণ্ডল বলেন, “সামসি নেমে বাবা ফোন করেছিল। তার পর কী হল বুঝতে পারছি না।”