এখনও অনেক কাজই বাকি রবীন্দ্রভবনে। রায়গঞ্জে তরুণ দেবনাথের ছবি।
প্রায় এক যুগ আগে রবীন্দ্র ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে রায়গঞ্জে। সেই কাজ আজও সম্পূর্ণ হয়নি। ফলে, এবারও ২৫ শে বৈশাখে রবীন্দ্র ভবনে কোনও অনুষ্ঠান হবে না। আগামী ৯ এপ্রিল জেলার কোনও স্কুল, কলেজ বা অনুষ্ঠান মঞ্চে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করবে উত্তর দিনাজপুর জেলা তথ্য সংস্কৃতি দফতর। এতে স্থানীয় সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলি ক্ষুব্ধ। রায়গঞ্জ কালচারাল ফোরামের সম্পাদক পবিত্র চন্দ ও রায়গঞ্জ মালঞ্চ সাংস্কৃতিক বিকাশের সভাপতি পল্লব সেনগুপ্ত অভিযোগ করেছেন, সরকারি গাফিলতির জেরেই এখনও পর্যন্ত রবীন্দ্র ভবন তৈরির কাজ শেষ হয়নি। দুজনে প্রায় একই সুরে বলেন, “এবার রবীন্দ্রজয়ন্তীর সরকারি অনুষ্ঠান বয়কট করে পথে নেমে শান্তিপূর্ণ ভাবে রবীন্দ্র ভবনের কাজ শেষের দাবি করব।”
রবীন্দ্রভবনে নির্মাণকাজের বর্তমান পরিস্থিতি কী ও কবে সেই কাজ শেষ হবে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি জেলা প্রশাসনের কর্তারা। জেলাশাসক স্মিতা পাণ্ডে বলেন, “সরকারি তথ্য খতিয়ে না দেখে রবীন্দ্রভবন নির্মাণ কাজের বিষয়ে কিছুই বলতে পারব না। নির্বাচন আচরণ বিধি জারি থাকায় রবীন্দ্রজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আগে ভবনের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে না।”
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, শহরের সংস্কৃতি চর্চার প্রসারের লক্ষ্যে ২০০১ সালে বাম আমলে ৬০ লক্ষ টাকা বরাদ্দে রায়গঞ্জের রেল স্টেশন সংলগ্ন নেতাজিপল্লি এলাকায় রবীন্দ্র ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দু’বছর কাজ চলার পরে অর্থাভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এর পরে রায়গঞ্জের তৎকালীন সিপিএম সাংসদ সুব্রত মুখোপাধ্যায় ও ২০০৬-এ কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি তাঁদের সাংসদ তহবিলের ৫০ লক্ষেরও বেশি টাকা বরাদ্দ করেন। সেইসঙ্গে রাজ্যসভার সিপিএমের এক প্রাক্তন সাংসদও ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। ওই টাকায় ফের রবীন্দ্রভবন তৈরির কাজ শুরু হলেও ২০০৮ সালে টাকার অভাবে ফের কাজ বন্ধ করে দেয় ঠিকাদার সংস্থা। এখনও পর্যন্ত ভবন নির্মাণের কাজে সাংসদ তহবিল আর সরকারি তহবিল মিলিয়ে দেড় কোটির বেশি টাকা খরচ হয়েছে।
বর্তমানে রবীন্দ্রভবনের হলঘর, মঞ্চ ও সীমানা পাঁচিল তৈরির কাজ শেষ। টাকার অভাবে সাউন্ডসিস্টেম, বিদ্যুদয়ন, শৌচাগার, দর্শকাসন, জল ও অগ্নি নির্বাপণের পরিকাঠামো গড়ে তোলা যায়নি। পরিকল্পনা অনুযায়ী বসানো যায়নি শীতাতপ যন্ত্রও। রাজ্যে পালাবদলের পর উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব রবীন্দ্রভবন তৈরির কাজ শেষ করার ব্যাপারে রায়গঞ্জে জেলা প্রসাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে প্রশাসনের তরফে তাঁকে বলা হয় রবীন্দ্রভবন তৈরির কাজ শেষ করতে এক কোটি টাকা প্রয়োজন। সে সময়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রায়গঞ্জে সাংবাদিক সম্মেলন করে রবীন্দ্রভবন তৈরির কাজ শেষ করার আশ্বাস দেন। সেই কাজ যে ঠিক কবে শেষ হবে তা কেউই স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না।