মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দু’দল তৃণমূল সমর্থকের মধ্যে তির ধনুক, হাঁসুয়া, বল্লম নিয়ে সংঘর্ষ হল দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুরে। তার জেরে এলাকায় ব্যপক উত্তেজনা তৈরি হয়। রবিবার দুপুরে দক্ষিণ দিনাজপুরের হরিরামপুর থানার শিরসী গ্রাম পঞ্চায়েতের নওগাঁ এলাকার ওই ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ১৫ জন জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১২ জনকে গঙ্গারামপুর মহকুমা হাসপাতালে এবং ৩ জনকে হরিরামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। এই ঘটনায় রাত পর্যন্ত গ্রেফতারের কোনও খবর নেই।
দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়া বলেন, “পঞ্চায়েতের একটি পুকুরে মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।” তবে সন্ধ্যে পর্যন্ত কোনও পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ জমা পড়েনি বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা আইন পরিষদীয় সচিব বিপ্লব মিত্র বলেন, “ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে পুকুরে মাছ ধরা নিয়ে গ্রামবাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ আইনি ব্যবস্থা নেবে।” তবে ঘটনাটি দলের জেলা নেতৃত্ব হাল্কা করে দেখাতে চাইলেও স্থানীয় সূত্রের খবর, জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্র অনুগামী ব্লক সভাপতি তাজমূল হক গোষ্ঠী এবং হরিরামপুরের জেলা নেতা শুভাশিস পাল অনুগামীদের মধ্যে মাছ ধরা নিয়ে কিছুদিন ধরেই বিবাদ চলছিল। পুলিশ সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত থেকে লিজে নেওয়া ওই পুকুরে গ্রামের বেশ কিছু তৃণমূল সমর্থক গোষ্ঠী গড়ে দীর্ঘদিন ধরে মাছ চাষ করছেন। তাঁরা ব্লক সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিত সম্প্রতি শিরসী গ্রামপঞ্চায়েতের সিপিএমের এক সদস্য শিবলাল টুডু সহ এলাকার কয়েকজন তৃণমূলে যোগ দেন। তারা শুভাশিস পালের অনুগামী বলে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর দাবি।
ওই পুকুরে মাছ চাষে তাঁরাও যুক্ত বলে শুভাশিসবাবু গোষ্ঠীর সমর্থকেরা দাবি করে এদিন পুকুরে মাছ মারতে গেলে অন্য পক্ষ বাধা দেয় বলে জানা গিয়েছে। তারপরেই তুমুল সংঘর্ষ বেধে যায় বলে অভিযোগ। তৃণমূলের ব্লক সভাপতি তাজমূল হক অভিযোগ করে বলেন, “পরিকল্পনা করেই দলটি আগে থেকে তির ধনুক, হাসুয়া বল্লম নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।” তাজমূলবাবুর অনুগামী ১২ জন ওই সংঘর্ষে জখম হন বলে অভিযোগ। অন্য ৩ জন জখম দলের শুভাশিসবাবুর অনুগামী বলে জানা গিয়েছে। হরিরামপুরের তৃণমূল জেলা নেতা তথা জেলাপরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শুভাশিস পাল বলেন, “দলীয় সমর্থকদের মধ্যে যা হয়েছে তা কাম্য নয়। এলাকার দলের পঞ্চায়েত সদস্য শিবলালবাবুই মারপিটের কথা শুনে ওই গ্রামে গিয়ে সমর্থকদের থামানোর চেষ্টা করেন। দু’পক্ষকে নিয়ে মীমাংসায় বসা হবে।”