ডুয়ার্সের বন্ধ চা বাগানগুলিতে পরের পর শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় চাপে পড়ে যাওয়ায়, বাগান খোলার দায় কেন্দ্রের উপরেই চাপিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সঙ্কট কাটাতে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ দাবি করে কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী। চিঠিতে তিনি জানিয়েছেন, ১৯৫৩ সালের চা আইনের বলে কেন্দ্রীয় সরকারের টি-বোর্ড দেশের যে কোনও বন্ধ হয়ে যাওয়া চা কারখানা পুনরুজ্জীবনের জন্য নতুন মালিকের হাতে তুলে দিতে পারে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, “আমাদের তরফ থেকে যত রকম প্রশাসনিক সহায়তা দরকার আমরা করব। কেন্দ্রীয় সরকারের যে কোনও উদ্যোগকে রূপায়িত করতেও আমরা প্রস্তুত।”
জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের পাঁচটি চাবাগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রায় তিন হাজার শ্রমিকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। অনাহার ও অপুষ্টিতে চলতি মাসেই মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। পরের পর বাগান শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনায় কংগ্রেস,বাম, ও বিজেপি -সহ রাজ্যের সমস্ত বিরোধী দলগুলির সমালোচনার মুখে পড়েছে রাজ্য সরকার। সংসদেও যাতে বিপাকে না পড়তে হয় তাই কেন্দ্রীয় বাণিজ্যমন্ত্রীকে লেখা চিঠিকে আগাম সতর্কতা বলেই মনে করছে চা শ্রমিক মহল। যে পাঁচটি বাগানের কথা মুখ্যমন্ত্রী চিঠিতে উল্লেখ করেছেন সেগুলি হল, জলপাইগুড়ির রায়পুর, সুরেন্দ্রনগর, রেডব্যাঙ্ক ও আলিপুরদুয়ারের বান্দাপানি ও ঢেকলাপাড়া। দেখা যাচ্ছে বেশিরভাগ চা বাগানগুলি গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছেন, “চা বাগানের জন্য কিছু দিন আগে যে পুনরুজ্জীবন প্যাকেজ তৈরি করেছিল কেন্দ্র তা অবিলম্বে রূপায়িত করতে হবে।”
বৃহস্পতিবার লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় নেত্রীর এই চিঠিটি তুলে ধরে চা বাগানের শ্রমিকদের দূরবস্থার প্রতিকারের বিষয়ে সোচ্চার হন। কোন বিষয়গুলিতে রাজ্য সরকার ইতিমধ্যেই পদক্ষেপ করেছে, চিঠিতে সেগুলিরও উল্লেখ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলা হয়েছে, ‘বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য বেশ কিছু তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে খাদ্যশস্যে ভর্তুকি, সামাজিক সুরক্ষা পেনশনের আওতায় শ্রমিকদের আনার মত বিষয়গুলি। আমি শুনেছি যে চা বাগানগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা ভাবছে। এই প্রক্রিয়া দ্রুত করতে হবে। টি-বোর্ড-ও তাদের শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পগুলিকে কাজে লাগিয়ে বিশেষ প্যাকেজ তৈরি করুক।”