জমি বিবাদে দুই ভাইকে খুনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক মহিলা সহ ৫ জনকে ধরেছে পুলিশ। ধৃতরা হতদের আত্মীয় বলে পুলিশ জানায়। গত শনিবার সকালে রাজগঞ্জ থানার চোরিয়াপাড়া এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ জানিয়েছে, নিহতেরা হলেন বুধারু মহম্মদ (৩৮) এবং চানু মহম্মদ (৩০)। অভিযোগ নিহতদের সঙ্গে জমি নিয়ে তাঁদেরই এক পারিবারিক শরিকদের সঙ্গে বচসা চলছিল। শনিবার সকালে বির্তকিত জমির বাশঝাঁড় কাটতে গেলে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। তারপরেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে নিহতদের উপরে হামলা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের ভিত্তিতে রবিবার এক মহিলা সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতরা সকলেই নিহতদের সম্পত্তির শরিক পরিবারের সদস্য বলে জানা গিয়েছে। এলাকাবাসীদের একাংশ জানিয়েছেন, নিহতরা এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় সমর্থক বলে পরিচিত। তৃণমূলের তরফে পরিকল্পিত ভাবেই ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ দিন সকালে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব এলাকায় গিয়ে বাসিন্দা ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী। রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায়ও সঙ্গে ছিলেন। নিহতদের পরিবারকে দলের তরফে আর্থিক সাহায্য করেন সৌরভবাবু। তৃণমূল জেলা সভাপতির অভিযোগ, সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। অভিযুক্তরা সকলে সিপিএম কর্মী বলে সৌরভবাবুর দাবি। অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবি জানান। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জেমস কুজুর বলেন, “রবিবার ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে। এলাকায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।”
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, এ দিন সকালে বুধারু, চানু এবং সোনা বির্তকিত জমিতে বাঁশ কাটতে গেলে তাঁদের শরিক পরিবারের তরফে অস্ত্র নিয়ে হামলা হয় বলে অভিযোগ। বুধারু, চানু এবং সোনাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে পাঠানো হয়। সেখানে দু’জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পৈতৃক ৩ একর ১০ কাঠা জমি নিয়ে শরিকদের মধ্যে বিবাদ চলছে। শনিবার গভীর রাতে জখম সোনা মহম্মদের স্ত্রী সায়রা খাতুন রাজগঞ্জ থানায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। তৃণমূলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভবাবু অভিযোগ করে বলেন, “নিহত বুধারু মহম্মদ এবং চানু মহম্মদ দু’জনেই এলাকায় তৃণমূলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন বলা যায়। বিষয়টি জমি বিবাদ বলে মনে করা হলেও, সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। আগে থেকে হামলার ছক করেছিল সিপিএম। এ সম্পর্কে আমরা নানা তথ্য পেয়েছি। দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।”তৃণমূলের অভিযোগ মানতে চায়নি সিপিএম। দলের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এর সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই। দ্রুত অভিযুক্তরা ধরা পড়ুক, এটা আমাদেরও দাবি।”