চাহিদা নেই, লঙ্কার দাম কমায় চিন্তায় চাষি

লঙ্কার ফলন ভাল হলেও বাজারে এখন চাহিদা না-থাকায় এবার মরসুমের গোড়াতেই উদ্বিগ্ন হলদিবাড়ির লঙ্কা চাষিরা। সোমবার হলদিবাড়ি পাইকারি বাজারে লঙ্কা বিক্রি হয়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা কেজি দরে। চাষিদের একাংশ জানান, বাজারে বেরিলি ও বেনারসের লঙ্কা ঢুকেছে। উপরন্তু, দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানায় হলদিবাড়ির লঙ্কা আগের মতো যাচ্ছে না। অন্য এলাকার লঙ্কা বাজার দখল করেছে। তাই লঙ্কার মরসুমের শুরুতে বাজারে তেমন দাম না মেলায় চাষিরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। খরচ উঠবে কি না তা নিয়েও বাজারে চলছে আলোচনা।

Advertisement

রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়

হলদিবাড়ি শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০১৪ ০২:০৮
Share:

—নিজস্ব চিত্র।

লঙ্কার ফলন ভাল হলেও বাজারে এখন চাহিদা না-থাকায় এবার মরসুমের গোড়াতেই উদ্বিগ্ন হলদিবাড়ির লঙ্কা চাষিরা। সোমবার হলদিবাড়ি পাইকারি বাজারে লঙ্কা বিক্রি হয়েছে ৪ থেকে ৫ টাকা কেজি দরে। চাষিদের একাংশ জানান, বাজারে বেরিলি ও বেনারসের লঙ্কা ঢুকেছে। উপরন্তু, দিল্লি, পাঞ্জাব, হরিয়ানায় হলদিবাড়ির লঙ্কা আগের মতো যাচ্ছে না। অন্য এলাকার লঙ্কা বাজার দখল করেছে। তাই লঙ্কার মরসুমের শুরুতে বাজারে তেমন দাম না মেলায় চাষিরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। খরচ উঠবে কি না তা নিয়েও বাজারে চলছে আলোচনা।

Advertisement

হলদিবাড়ি পাইকারি সব্জি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি তরুণ দত্ত বলেন, “উত্তর ভারতে লঙ্কা না যাওয়ার ফলে কৃষকের ক্ষতি হচ্ছে। আমরাও ক্ষতির মুখে পড়েছি। লঙ্কা সংরক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। সরকারি ভাবে হিমঘর কেন তৈরি হল না কে জানে? আমরা ফের প্রশাসনে স্মারকলিপি দেব।” কৃষি দফতর সূত্রে খবর, এ বছরে হলদিবাড়িতে লঙ্কার উৎপাদন ভাল। দফতরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ২৪০০ হেক্টর জমিতে লঙ্কা চাষ হয়েছে। প্রতি বিঘায় ফলনের পরিমাণ ৫০-৬০ মন হওয়ার কথা। হলদিবাড়ি ব্ল ক কৃষি আধিকারিক সঞ্জীব মৈত্রী বলেন, “এ বার লঙ্কার ফলন ভালই আছে। এর উপরে হাল্কা বৃষ্টি পড়লে ফলনের পরিমাণটা আরও বাড়বে।”

এপ্রিল মাসের প্রথম থেকে জুন মাসের শেষ পর্যন্ত হলদিবাড়িতে লঙ্কা বাজারে চলে যায়। চলতি মাসে প্রথমে বাজার শুরু হয়েছিল ১৫ টাকা কেজি দরে। শতকরা ২০ ভাগ লঙ্কা বাজারে এসেছে। হলদিবাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির কৃষি কর্মাধ্যক্ষ সত্যেন্দ্রনাথ রায় নিজেও এক জন কৃষক। আড়াই বিঘা জমিতে তিনি লঙ্কা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, “এখন যে দামে লঙ্কা বিক্রি হচ্ছে তাতে খরচের টাকা উঠছে না। দাম কমতে থাকলে কৃষকের ক্ষতি হবে।” কয়েক বছর আগে হলদিবাড়িতে লঙ্কার দাম না পেয়ে চাষিদের কয়েক জন লঙ্কায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছিলেন। তা নিয়ে রাজ্যে হইচই পড়ে যায়।

Advertisement

একটা সময়ে হলদিবাড়ির লঙ্কার বাজার ভালই ছিল দিল্লি, হরিয়ানা, পাঞ্জাব এবং উত্তরপ্রদেশে। এপ্রিলে ১৫ ট্রাক এবং মে-জুনে ৩৫ ট্রাক লঙ্কা সেখানে যেত। এ বছর দিল্লির কাছে বেরেলিতে ভাল লঙ্কা হয়। বেনারসে লঙ্কার উৎপাদন ভাল। নাগপুর থেকেও লঙ্কা সারা ভারতে যাচ্ছে। এ সব লঙ্কা হলদিবাড়ির লঙ্কার বাজার নিয়েছে। ফলে, হলদিবাড়ির লঙ্কা ও দিকে যাচ্ছে না। এখন আমদানি হচ্ছে ৮ ট্রাক। সেই লঙ্কা এখন বিহার এবং পশ্চিমবঙ্গের নানা জায়গায় যাচ্ছে। বাজারের দামের ওপর পাইকারি দাম ঠিক হচ্ছে।

দু’বছর হলদিবাড়ির লঙ্কা চাষিরা প্রচুর লাভের মুখ দেখেছিলেন। লঙ্কার পাইকারি দাম প্রতি কেজি ২০ টাকা ছিল। এই বছর অবস্থার বদল হয়েছে। হলদিবাড়ির পাইকারি ব্যবসায়ীদের একাংশ আশা ছাড়ছেন না। তাঁদের ধারণা মে মাসের মধ্যে উত্তর ভারতের বাজার খুললেই হলদিবাড়ির লঙ্কার চাহিদা বাড়বে। হলদিবাড়ির পাইকারি সব্জি ব্যবসায়ী প্রণব চক্রবর্তী বলেন, “বেরিলি ও বেনারসের লঙ্কার জোগান কমলে হলদিবাড়ি লঙ্কার দর বাড়বে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement