চালক মার খেলেও হয়নি অভিযোগ

মোটরবাইকের সঙ্গে পুরসভার ট্রাক্টরের ধাক্কা লাগার ঘটনা নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ায়। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র উজ্জল চৌধুরীর ভাগ্নে শ্রুতর্ষি রায় মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার পরে তিনি ট্রাক্টরের চালককে টেনে নামিয়ে মারধর শুরু করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০১৪ ০২:২৭
Share:

মোটরবাইকের সঙ্গে পুরসভার ট্রাক্টরের ধাক্কা লাগার ঘটনা নিয়ে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে শিলিগুড়ির হাকিমপাড়ায়। রবিবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে। শিলিগুড়ি পুরসভার প্রাক্তন ডেপুটি মেয়র উজ্জল চৌধুরীর ভাগ্নে শ্রুতর্ষি রায় মোটরবাইক চালাচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার পরে তিনি ট্রাক্টরের চালককে টেনে নামিয়ে মারধর শুরু করেন। অথচ ঘটনার পরে দুদিন কেটে গেলেও পুরসভার তরফে পুলিশে কোনও অভিযোগ জানানো হয়নি। অভিযুক্ত ব্যক্তি ট্রাক্টর চালককে মারধরের সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজন প্রতিবাদ করলে তিনি উজ্জ্বলবাবুর নাম করে সকলকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, পুরসভার ‘ভেহিকেল’ বিভাগের আধিকারিক উৎপল সরকার সেখান দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি পরিস্থিতি দেখে সেখানে দাঁড়িয়ে পুর সচিবকে বিষয়টি জানান। এবং তাঁর নির্দেশ মতো পুলিশকে ফোনে অভিযোগ জানান। অথচ তার পরেও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়নি বলে অভিযোগ। এলাকার বাসিন্দারা ততক্ষণে জড়ো হয়ে অভিযুক্তকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে উদ্যোগী হন। খবর পেয়ে ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে সেখানে পৌঁছন উজ্জ্বলবাবু। তিনি বিষয়টি ধামাচাপা দিতে উদ্যোগী হন। পরিস্থিতি সামলাতে ভাগ্নেকে ধমক দিয়ে জখম চালক নিতাই সরকারকে শিলিগুড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান। সিটি স্ক্যান করানো হয়। পুলিশে যাতে অভিযোগ না জানানো হয় সে জন্য উজ্জ্বলবাবু তৎপর হন বলে পুরসভারই একাংশ জানান।

উজ্জ্বলবাবু বলেন, “অন্যায়ের সঙ্গে আপস করার বিষয় নেই। জখম নিতাইয়ের বাবা আমার পূর্ব পরিচিত। ওকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছি। শুনে ছিলাম। কান দিয়ে নাকি রক্ত বার হয়েছে। চিকিৎসক কিন্তু বলেছেন তেমন কিছু হয়নি। সিটি স্ক্যান রিপোর্ট পেলে স্পষ্ট বোঝা যাবে। তবে আমার নাম করে কেউ কিছু বললেই হল না। আইন যে ব্যবস্থা নেবে সেটাই চূড়ান্ত।”

Advertisement

পুরসভার তরফে পুলিশে কোনও লিখিত অভিযোগ করা হয়নি বলে এলাকায় নানা প্রশ্ন উঠেছে।প্রাক্তন ডেপুটি মেয়রের প্রভাবে পুরসভা অভিযোগ দায়ের করেনি বলেও বাসিন্দাদের একাংশের সন্দেহ। উজ্জ্বলবাবু অবশ্য প্রভাব খাটানোর বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তাঁর কথায় চালককে তিনি এও জানিয়েছেন বিষয়টি পুরসভায় তাঁর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে।

উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “কেন পুলিশে অভিযোগ জানানো হল না, বিস্তারিত বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” পুর কমিশনার সোনম ওয়াংদি ভুটিয়া জানান, কী ঘটেছে বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়েছেন। তা দেখে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করবেন। পুর সচিব সপ্তর্ষি নাগ জানান, পুলিশে অভিযোগ জানাতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে বলা হয়েছে।

অভিযুক্ত শ্রুতর্ষির বাবা বিভূবাবু জানান, উজ্জ্বলবাবু এবং তিনি একই সঙ্গে জখম চালকে হাসপাতালে নিয়ে যান চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। তাঁর দাবি, ট্রাক্টর চালক মোবাইলে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালাচ্ছিল। সে জন্যই দুর্ঘটনা ঘটেছে। শিলিগুড়ি এসিপি তপন আলো মিত্র বলেন, “পুলিশ যায়নি এমন হতে পারে না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।” এ দিন জখম নিতাই যে ট্রাক্টর চালাচ্ছিলেন তার মালিক কিরণ রাউত অভিযোগ করেন, “ওই ব্যক্তি চালককে মারধর করেছেন। আমি নিজেই পুলিশে অভিযোগ জানাব। যতদূর শুনেছি, উনি পুরোপুরি সুস্থ ছিলেন না।” জখম নিতাই অভিযোগ করেন, বাইক চালকের দোষেই দুর্ঘটনা ঘটে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement