সঙ্কোশ চা বাগানে অজ্ঞাতপরিচয় ভবঘুরে মহিলার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় খুনের মামলা রুজু হলেও মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত দেহের ময়নাতদন্ত করাতে পারেনি পুলিশ। প্রথমে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয় দেহ। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। আলিপুরদুয়ারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “ময়না তদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত ধর্ষণের ব্যাপারে স্পষ্ট ভাবে জানা সম্ভব নয়।”
সোমবার ওই মহিলার বিবস্ত্র দেহ উদ্ধারের সময়ে সেখানে যে বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের কয়েকজনের অভিযোগ, ওই মহিলার মুখে লিউকো প্লাস্ট সাঁটানো ছিল। তাঁর হাত দুটিও বাঁধা ছিল। তাঁদের সন্দেহ, ওই মহিলার মুখ ও হাত বেঁধে শারীরিক নির্যাতন চালিয়ে প্রমাণ লোপাটের জন্যই তাঁকে খুন করা হয়েছে। পুলিশ অবশ্য শুধু খুনের মামলা রুজু করেছে। এই ঘটনায় পুলিশের ভুমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিজেপির যুব মোর্চার কুমারগ্রাম ব্লকের সাধারণ সম্পাদক বিনোদ মিনজ। তিনি বলেন,“একজন অসহায় মহিলাকে ধর্ষণের পরে খুন করা হয়েছে বলে বাসিন্দারা সন্দেহ করছেন। অথচ পুলিশ ঘটনার দু’দিন পরেও তদন্তে কোনও সূত্র পায়নি। পুলিশ কেন মৃতদেহ সময় মত ময়না তদন্তে পাঠায়নি সেটাও দেখা দরকার।” তৃণমূল কংগ্রেসের আলিপুরদুয়ার জেলার সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, “ঘটনাটি ভয়ঙ্কর। এ ভাবে এক জন মহিলাকে বিবস্ত্র করে খুনের ঘটনায় দোষীদের ধরা উচিত। রাতে বিভিন্ন এলাকায় যাতে মহিলারা নির্ভয়ে যাতায়াত করতে পারে তা পুলিশকে দেখতে হবে।” স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী মালতি বাক্সলা বলেন, “একজন মহিলাকে নৃশংস ভাবে খুন করা হয়েছে। খুনি ধরা না পড়লে আতঙ্ক থাকবে।” আলিপুরদুয়ারের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘মানবিক মুখ’ এর সম্পাদক রাতুল বিশ্বাসও পুলিশের ভূমিকায় অসন্তুষ্ট। তিনি বলেন, “পুলিশের ভূমিকা সন্তোষজনক নয়। আমরা শীঘ্র দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে পুলিশ সুপারকে স্মারকলিপি দেব।”
সোমবার সকালে অজ্ঞাত পরিচয় ভবঘুরে এক মহিলার রক্তাক্ত বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার হয় কুমারগ্রামের ,সঙ্কোশ চা বাগানের বাসু লাইনে। বাসিন্দাদের থেকে খবর পেয়ে পুলিশ দেহ উদ্ধার করে। স্থানীয় বাসিন্দা অশোক কুজুর বলেন, “আমরা রীতিমত আতঙ্কিত। ওই মহিলাকে খুন করার আগে যে ধর্ষণ করা হয়েছে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। আমরা চাই পুলিশ দ্রুত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করুক।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, আনুমানিক চল্লিশ বছর বয়সী ভবঘুরে ওই মহিলা গত সাত আট মাস ধরে সংকোশ চা বাগানে থাকতেন।