জন্মলগ্ন থেকেই নানা সমস্যায় জর্জরিত জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রকে চাঙ্গা করতে সংশ্লিষ্ট সব মহলের কাছে সাহায্য চাইলেন উদ্যোক্তারা। নিলাম কেন্দ্র সূত্রের খবর, আগামী ২৪ জুন ফের চা নিলাম করার দিন ঠিক হয়েছে। সেখানে অংশগ্রহণ করার জন্য শিলিগুড়ি সহ বিস্তীর্ণ এলাকার ক্রেতা-বিক্রেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েছে সংস্থাটি। চা নিলাম কেন্দ্রের সচিব নিরঞ্জনকুমার বসু বলেন, “চা নিলামের কাজ জোরকদমে করার প্রস্তূতি চলছে। আমরা আশাবাদী।”
২০০৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি নিলাম কেন্দ্র চালু হয়। তিস্তা উদ্যান সংলগ্ন ওই কেন্দ্রকে ঘিরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় সে ভাবে কখনও উপচে পড়েনি।এক দশক পরেও হাল খুব একটা ফেরেনি। উপরন্তু, ক্রেতার অভাবে নিলাম কেন্দ্রটির অস্তিত্ব রক্ষা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
চা মালিকদের সংগঠন থেকে নিলাম কেন্দ্রের কর্তা সকলেই মনে করেন, গোড়া থেকে বাড়তি সুবিধা দেওয়া হয়নি বলেই সমস্যা মিটছে না। যেমন, ক্রেতা ও বিক্রেতা মহলের আকর্ষণ বাড়াতে কোনও কর ছাড়ের ব্যবস্থা করেনি সরকার। ফলে, ২০০৮ সালে বন্ধ হয়ে যায় নিলাম কেন্দ্রটি। নানা পর্যায়ে আন্দোলন ও ছোটাছুটির পরে ২০১২ সালে ফের চালু হয়।
চা বাগান মালিকদের তরফে কিসান কল্যাণী বলেন,“একটি শিশুকে ভাল ভাবে লালন পালন করার জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রের শৈশব কাটেনি। শিলিগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রকে দাঁড় করানোর জন্য তিন-চার বছর ভ্যাট ছাড় দেওয়া হয়। জলপাইগুড়ি সেই সুবিধা পায়নি।” তাঁর সঙ্গে একমত জলপাইগুড়ি ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতি সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী এবং বটলিফ ফ্যাক্টরি মালিক সংগঠনের সভাপতি সঞ্জয় ধানুটিয়া। বিজয়গোপাল বলেন, “ক্রেতাদের বেশি শিলিগুড়িতে থাকেন। কোনও বিশেষ সুবিধা না দেওয়া হলে বেহাল জাতীয় সড়ক ভেঙে কেন ওঁরা এখানে আসবেন? ক্রেতা যদি বেশি সংখ্যায় না আসেন, বিক্রেতারা মুখ ফেরাবেন। তিন বছর ভ্যাট ছাড়ের ব্যবস্থা করা হলে নিলাম কেন্দ্রটির ওই সমস্যা থাকবে না।”
চা উৎপাদকরা জানান, টানা দাবদাহের জন্য এবার পরিস্থিতি আরও খারাপ। পাতা উৎপাদন প্রায় ৪০ শতাংশ কম হয়েছে। তাই জলপাইগুড়ি নিলাম কেন্দ্রে চায়ের পরিমাণ বাড়াতে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ কিছু ছাড়ের সুযোগ দাবি করেছেন তাঁরা। তাঁদের আশঙ্কা, ওই ব্যবস্থা না হলে বিপদ বাড়বে। নিলাম কেন্দ্রের কর্তারা সমস্যার কথা অস্বীকার করেননি। জট কাটাতে ভ্যাট ছাড়ের আবেদন নিয়ে ফের তাঁরা সরব হয়েছেন। নিলাম কেন্দ্র পরিচালন কমিটির সদস্য পুরজিৎ বক্সি গুপ্ত বলেন, “ক্রেতা-বিক্রেতাদের আকর্ষণ বাড়াতে সব চেষ্টা চলছে। ভ্যাট ছাড়ের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ফের আবেদন জানানো হয়েছে। আশা করছি সুফল মিলবে।”