চাঁচল কলেজে উত্তেজনা। রবিবার। ছবি: বাপি মজুমদার।
তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও ছাত্র পরিষদের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষে রবিবার ধুন্ধুমার বাঁধে মালদহের চাঁচল কলেজে। যুযুধান দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে সংঘর্ষে ভাঙচুর করা হয় কলেজের বেঞ্চ ও জানলাও।
দুই ছাত্র সংগঠনের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে লাঠিসোটা নিয়ে দফায় দফায় গন্ডগোল থামাতে হিমশিম খেতে হল পুলিশকেও। রাত ৯টা নাগাদ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং পরিচালন সমিতির সভাপতিকে কলেজ থেকে বার করে নেওয়ার সময় পুলিশকে লক্ষ্য করে টিএমসিপি সদস্যেরা ইটও ছোড়ে বলে অভিযোগ। ইটের আঘাতে ছাত্র পরিষদের ৩ জন জখম হন। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ লাঠি চালায়। তাতে টিএমসিপি-র ৭ জন এবং ছাত্র পরিষদের দু’জন জখম হয়েছেন। ঘটনার পর কলেজ গেটের সামনে ধর্নায় বসেছে টিএমসিপি।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ইস্তফার দাবিতে কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্যদের ঘেরাও করে এ দিন দুপুর থেকে বিক্ষোভ শুরু করে টিএমসিপি। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গাহুল আমিনের সঙ্গেই টিএমসিপি সদস্যরা ঘেরাও করে রেখেছিলেন পরিচালন সমিতির সভাপতি তথা কংগ্রেস বিধায়ক আসিফ মেহবুবকেও। সন্ধ্যা নাগাদ দলীয় বিধায়ককে আটকে গালাগালি করা হচ্ছে অভিযোগ তুলে ছাত্র পরিষদের কর্মীরা কলেজে হাজির হতেই শুরু হয় সংঘর্ষ। পরিস্থিতির সামাল দিতে নামাতে হয়েছিল র্যাফও। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, “টিএমসিপি-র দাবি মতো সব হিসেবই দেখাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে জন্য তো সময় দিতে হবে। কিন্তু তা ওঁরা মানতে চাননি।”
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ১৬ নভেম্বর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হন গাহুল আমিন। তার আগে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের আমলের বিভিন্ন গরমিল নিয়ে এদিন পরিচালন সমিতির বৈঠক ডাকা হয়। বৈঠক শুরু হওয়ার আগেই টিএমসিপি-র তরফে পরিচালন সমিতির সঙ্গে আলোচনার জন্য ১০ দফা দাবি জানানো হয়। দুপুর আড়াইটায় বৈঠক শেষ হওয়ার পরে পরিচালন সমিতির কাছে যান টিএমসিপি সদস্যরা। কিছুক্ষণ আলোচনার পরেই ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সদুত্তর দিতে পারছেন না অভিযোগ করে তাঁর ইস্তফা দাবি করে শুরু হয় বিক্ষোভ। দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও চলার পর একসময় ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঘরের পাখাও বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
বিধায়ক আসিফ মেহবুব জানান, টিএমসিপি-কে বলা হয়েছিল, পরিচালন সমিতি অভিযোগের তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। সেজন্য কয়েকদিন সময় চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, “কিন্তু টিএমসিপি এদিনই অধ্যক্ষকে ইস্তফা দিতে হবে বলে অনড় থাকায় এই পরিস্থিতি হয়েছে।” টিএমসিপি-র চাঁচল-১ ব্লক সভাপতি সুমিত সরকারের দাবি, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ একাধিক বেনিয়ম করেছেন, তাঁদের প্রশ্নেরও সদুত্তর দিতে পারেননি, তাই তাঁরা বিক্ষোভ করছিলেন। তিনি বলেন, “আমরা কাউকে ঘেরাও করে রাখিনি। আমাদের উপরঅ হামলা হয়েছে।” ছাত্র পরিষদের ব্লক সভাপতি আনজারুল হক জনি জানান, আন্দোলনের নামে টিএমসিপি বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে তান্ডব চালাচ্ছিল। তিনি বলেন, “তারই প্রতিবাদ করতে আমরা গিয়েছিলাম। আমাদের উপরে হামলা করা হয়।”