আদালতের লক-আপ থেকে এক কিশোরীর বাবাকে মোবাইল ফোনে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠল ধর্ষণে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শিলিগুড়ি আদালতের লক-আপে সোমবার এই ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার কিশোরীর পরিবারের তরফে পুলিশ কমিশনার জগমোহনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। কিন্তু, অভিযোগ পাওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পরেও যে মোবাইল থেকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল সেটির ‘সিমকার্ড’টি কার নামে তা পুলিশ জানতে পারেনি। ওই সিমের কল-রেকর্ডও পাওয়া যায়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে। ফলে,তদন্তে গড়িমসির অভিযোগ উঠেছে আইনজীবী মহলেই।
ইতিমধ্যেই ওই কিশোরীর বাবা এসিজেএম আদালতেও অভিযোগ জানিয়েছেন। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার বলেন, “বিষয়টি ডিসি (সদর) দেখছেন।” আর ডিসি (সদর) ও জি পাল বলেন, “ওই সিম কার্ড সম্পর্কে তথ্য জোগাড় করা হচ্ছে। শিলিগুড়ি থানা এবং কোর্ট ইন্সপেক্টরের সঙ্গে কথা বলছি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ওই মামলার সরকারি আইনজীবী সুদীপ বসুনিয়া বলেন, “অভিযোগ গুরুতর। এসিজেএম নীলাঞ্জন মৌলিকও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।”
ওই কিশোরীর বাবার অভিযোগ, “সোমবার বেলা আড়াইটে নাগাদ একটি অচেনা নম্বর থেকে টেলিফোন আসে। ওপাশ থেকে অভিযুক্ত যুবক নিজের নাম বলে হুমকি দিতে থাকে। জামিনে ছাড়া পেয়ে মেয়েকে ফের তুলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে আমাকে খুনের হুমকি দেয়। সব পুলিশ কমিশনারকে জানিয়েছি।” ওই পরিবারের আইনজীবী সন্দীপ মণ্ডল জানান, যে সময়ে হুমকি ফোন গিয়েছিল, তখন অভিযুক্ত আদালতের লক-আপে ছিলেন। তাঁর প্রশ্ন, “ওই যুবক তখন কোর্ট লক আপেই ছিলেন। কী ভাবে তাঁর হাতে মোবাইল পৌঁছল?”
পুলিশ সূত্রের খবর, লকআপের নজরদারির দায়িত্বে থাকেন একজন অফিসার-সহ চার পুলিশ কর্মী। থাকেন একজন কোর্ট ইন্সপেক্টরও। কোর্ট ইন্সপেক্টর দিলীপ মোহান্ত এবং লকআপের দায়িত্বে থাকা অফিসার সাগর সেনের বক্তব্য,“আমাদের কিছু জানা নেই। কিছু বলতে পারব না।”
পুলিশ জানিয়েছে, গত জুলাই মাসে ডুয়ার্সের এক যুবক রবীন্দ্রনগর এলাকার ওই কিশোরীকে অপহরণ করে বলে অভিযোগ। ওই যুবক নিজেকে আইনজীবী বলে পরিচয় দিয়েছিলেন। পরে জানা যায়, সেই পরিচয় ভুয়ো। অগস্ট মাসে যুবককে পুলিশ গ্রেফতার করে। ওই কিশোরীকেও উদ্ধার করা হয়। বিচারকের সামনে কিশোরী গোপন জবানবন্দিও দেয়। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলাও রুজু করে পুলিশ। অভিযুক্ত জেল হেফাজতে রয়েছে। আগামী ১২ নভেম্বর মামলার ৯০ দিন হতে চলেছে। এখনও আদালতে শিলিগুড়ি থানা মামলার চার্জশিট জমা দেয়নি।