কেন্দ্র ও রাজ্যে সেতু বাঁধবেন অহলুওয়ালিয়া

দার্জিলিঙের উন্নয়নে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সেতুবন্ধনে উদ্যোগী হবেন সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য ‘স্পেশাল প্যাকেজ’ নিয়েও দ্বারস্থ হবেন প্রধানমন্ত্রীর। শনিবার এমনই দাবি করেছেন দার্জিলিং লোকসভার জয়ী বিজেপি প্রার্থী অহলুওয়ালিয়া। সেই সঙ্গে আইন মেনে জিটিএ চুক্তির সব প্রতিশ্রুতি এবং শর্ত দ্রুত কার্যকর করা উচিৎ বলে রাজ্য সরকারকে বার্তাও দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৪ ০১:৪২
Share:

শিলিগুড়িতে সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। শনিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।

দার্জিলিঙের উন্নয়নে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের মধ্যে সেতুবন্ধনে উদ্যোগী হবেন সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য ‘স্পেশাল প্যাকেজ’ নিয়েও দ্বারস্থ হবেন প্রধানমন্ত্রীর। শনিবার এমনই দাবি করেছেন দার্জিলিং লোকসভার জয়ী বিজেপি প্রার্থী অহলুওয়ালিয়া। সেই সঙ্গে আইন মেনে জিটিএ চুক্তির সব প্রতিশ্রুতি এবং শর্ত দ্রুত কার্যকর করা উচিৎ বলে রাজ্য সরকারকে বার্তাও দিয়েছেন তিনি।

Advertisement

দার্জিলিঙের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য ভাবী প্রধানমন্ত্রী মোদীর কাছে স্পেশাল প্যাকেজ দাবি করার কথাও জানিয়েছেন নব নির্বাচিত সাংসদ। পাহাড় ছাড়াও শিলিগুড়ির উন্নয়নের জন্য এনডিএর ‘লুক ইস্ট’ বা পুবে তাকাও নীতি কার্যকর করার উপরে জোর দেওয়া, দিল্লি এবং কলকাতার সঙ্গে যোগাযোগের সময় কমাতে বুলেট ট্রেন তৈরির বিষয়েও কেন্দ্রের উদ্যোগে তিনি তৎপর হবেন বলে জানিয়েছেন রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ। পাহাড়ের উন্নয়নের জন্য যেমন স্পেশাল প্যাকেজ তেমনিই শিলিগুড়ি সহ সমতলের উন্নয়নের জন্য ‘ব্লু প্রিন্ট’ তৈরির কথা জানিয়েছেন অহলুওয়ালিয়া। তিনি বলেন, “এই এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কী পদক্ষেপ হবে তার অনেকটাই খাপ্রাইলে ভোটের আগে জনসভায় নরেন্দ্র মোদী জানিয়ে দিয়েছিলেন। সেগুলি সহ আরও পরিকল্পনা নিয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরি হচ্ছে।”

দার্জিলিং আসনে বিজেপি প্রার্থীকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরই দলীয় কর্মী সমর্থকদের তৃণমূলের হামলা, আক্রমণের মুখে পড়তে হয় বলে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার তরফে অভিযোগ তোলা হয়। চাপ বাড়াতে পুরনো মামলা ‘খুঁচিয়ে’ তুলে রাজ্য সরকার দলের নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করছে বলেও মোর্চার শীর্ষ নেতাদের মতো বিজেপি প্রার্থী অহলুওয়ালিয়াও অভিযোগ করেছিলেন। যদিও শুক্রবার ফল প্রকাশের পরে এ দিন অহলুওয়ালিয়ার কথায় উঠেছে এসেছে সেতুবন্ধনের প্রসঙ্গ। তাঁর কথায়, “দার্জিলিঙের উন্নয়নের জন্য রাজ্য সরকারের কোনও প্রকল্প যদি দিল্লিতে অনুমোদনের জন্য পড়ে থাকে, তবে এলাকার বাসিন্দাদের স্বার্থে সে প্রকল্প অনুমোদনের জন্য আমাকে উদ্যোগী হতে হবে। কেন্দ্রের প্রকল্প আনতে যেমন দিল্লিতে দরবার করতে হবে, তেমনিই এলাকার বেশ কিছু উন্নয়নের জন্য নবান্নের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে হবে। এবং সব প্রকল্পের সুষ্ঠু রূপায়ণে দিল্লি এবং নবান্নের সঙ্গে সেতুবন্ধন করতেই হবে।”

Advertisement

‘সেতু বন্ধনের’ কথা বলেও, তৃণমূলকে রাজনৈতিক বার্তাও দিয়েছেন অহলুওয়ালিয়া। ভোটের আগে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মোর্চার দমন পীড়নের অভিযোগ প্রসঙ্গে অহলুওয়ালিয়ার রাজ্য সরকারের প্রতি বার্তা “মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে জিটিএ চুক্তি হয়েছিল। সেই চুক্তির অনেক শর্তই এখনও পূরণ হয়নি। আইন মেনে রাজ্য সরকার সেই চুক্তি পূরণ করুক। তা না করে কোনও অগণতান্ত্রিক পদক্ষেপ বা রাজনৈতিক আক্রমণ বাঞ্ছনীয় নয়।”

ভোটের আগে গোর্খাল্যান্ড প্রসঙ্গ নিয়েও সমতলে একাধিকবার বিব্রত হতে হয়েছিল বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি অহলুওয়ালিয়াকে। পড়তে হয়েছিল অস্বস্তিকর প্রশ্নের মুখেও। শুক্রবার ভোট গণনায় জানা যায় দার্জিলিং পাহাড়ের এলাকাগুলিতে তো বটেই, শিলিগুড়ি-সহ সমতলের তিনটি বিধানসভাতেও বিজেপি প্রার্থী ‘লিড’ পান। এ দিন শিলিগুড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে নিজেই ‘গোর্খাদের দাবির’ প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই গোর্খাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে কেউ মাথা ঘামায়নি। এই দাবিগুলি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা এবং খতিয়ে দেখা হবে। সেই সঙ্গে গোটা দার্জিলিঙের বিভিন্ন সম্প্রদায় বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দাদের দাবিও বিবেচনা করা হবে। ভোটের আগেও এই কথা বলেছিলাম। কিন্তু আমার পুরো বিবৃতি না শুনে অনেকে বির্তক তৈরি করার চেষ্টা করেছিলাম।” তবে সেই বির্তক যে সাধারণ বাসিন্দাদের প্রভাবিত করতে পারেনি, তা সমতল থেকেও এগিয়ে থাকার ঘটনায় প্রমাণ হয়ে গিয়েছেন বলে তিনি দাবি করেছেন।

অহলুওয়ালিরা সঙ্গে সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির জেলা সভাপতি রথীন্দ্র বসু ও কেপিপির সভাপতি অতুল রায়ও ছিলেন। বৈঠকের শেষে রাজ্যে তৃণমূলের বিপুল সংখ্যক আসন পাওয়া নিয়ে দার্জিলিঙের নবনির্বাচিত সাংসদ বলেন, “কখনও নম্বর থেকে বাস্তব চিত্র পাওয়া যায় না।” এ দিনই তিনি শিলিগুড়িতে থেকে পটনা রওনা দিয়েছেন। আগামীকাল তাঁর দিল্লি পৌঁছনোর কথা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement