তালিকা ১৫ মার্চের মধ্যে

কোন ওয়ার্ডের প্রার্থী অশোক, জল্পনা

তিনি দাঁড়াচ্ছেন তা চূড়ান্ত। বামফ্রন্টের তরফে তাঁর নামও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোন ওয়ার্ড থেকে তিনি দাঁড়াবেন, তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। পুরসভার ওয়ার্ড ধরে ধরে এখন চুলচেরা হিসাবে ব্যস্ত সিপিএম নেতারা। তাঁর নিজের পাড়ার ওয়ার্ডটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়াতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৩
Share:

তিনি দাঁড়াচ্ছেন তা চূড়ান্ত। বামফ্রন্টের তরফে তাঁর নামও ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু কোন ওয়ার্ড থেকে তিনি দাঁড়াবেন, তা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে জল্পনা। পুরসভার ওয়ার্ড ধরে ধরে এখন চুলচেরা হিসাবে ব্যস্ত সিপিএম নেতারা। তাঁর নিজের পাড়ার ওয়ার্ডটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়াতেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

Advertisement

যে কারণে মঙ্গলবার রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যকে প্রার্থী হিসাবে ঘোষণা করেই তাঁর জন্য ‘সুবিধাজনক’ ওয়ার্ড খুঁজতে নেমে পড়েছেন দলের নেতারা। প্রকাশ্যে অবশ্য সিপিএম নেতারা দাবি করেছেন, অশোকবাবুকে প্রার্থী করার দাবি তুলেছেন একাধিক ওয়ার্ডের বাসিন্দারা।

অশোকবাবুর কথায়, “দল চাইছে শিলিগুড়ির এই দুঃসময়ে আমি প্রার্থী হয়ে সামনে থেকে লড়াই করি। তাই দাঁড়াচ্ছি। তবে ওয়ার্ড এখনও ঠিক হয়নি। দলের মধ্যে আলোচনা করে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পুরসভার চেয়ারম্যান থেকে পুরমন্ত্রী হিসেবে দীর্ঘদিনের এই রাজনৈতিক জীবনে শহরের মানুষ দেখছেন আমি কী করেছি। আর শিলিগুড়িতে গত বোর্ডের সময় থেকে যা চলছে, তাতে আর হাত গুটিয়ে বসে থাকা যায় না।”

Advertisement

দলীয় সূত্রের খবর, প্রাক্তন পুরমন্ত্রী যে পাড়ায় থাকেন সেই ২০ নম্বর ওয়ার্ডটি সংরক্ষিত হওয়ায় দলের তরফে অশোকবাবুর জন্য প্রাথমিকভাবে তিনটি ওয়ার্ড বাছাই করা হয়েছে। এগুলি হল ৬, ১৬ এবং ১৮ নম্বর ওয়ার্ড। গত ভোটে এর একটি ওয়ার্ডও অবশ্য সিপিএম দখল করতে পারেনি। কংগ্রেস-তৃণমূল জোটের হাওয়ায় ৬ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হন কংগ্রেস প্রার্থী। ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে জেতেন তৃণমূল প্রার্থী। তবে সিপিএম নেতাদের হিসাব অন্য। তাঁদের কথায়, এই তিনটি ওয়ার্ড বরাবরই সিপিএমের দখলে ছিল। জোটের ধাক্কায় এর কোনওটাই গতবার সামলে রাখতে না পারলেও এবার জোট নেই। এখনও পর্যন্ত যা অবস্থা তাতে তৃণমূল, কংগ্রেস এবং বিজেপি আলাদা আলাদাভাবে লড়াই করছে। ফলে ভোট ভাগ হওয়ার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তার সুযোগ বামেরাই পাবেন।

এ ছাড়া ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বড় অংশ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত। সেখানে দলের প্রাক্তন কাউন্সিলর দল ছাড়লেও অশোকবাবুর এলাকায় পরিচিতি রয়েছে। সিপিএম প্রার্থী সেখানে গতবার মাত্র ৩৭৩ ভোটে হেরেছেন। আবার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডটি থেকে বরাবর জিততেন শহরের প্রথম মেয়র, প্রয়াত সিপিএম নেতা বিকাশ ঘোষ। দলের যুবদের মজবুত সংগঠন রয়েছে এই ওয়ার্ডে। বিরোধীদের হাতে চলে যাওয়া ওয়ার্ডে এখনও সিপিএমের নানা সভা, অনুষ্ঠান হয়।

গতবারের বিজয়ী প্রার্থী মাত্র ৭১ ভোটের ব্যবধানে এই ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থীকে হারান। তেমনই, পাশের ১৮ নম্বর ওয়ার্ড বস্তি, মধ্যবিত্ত অধ্যুষিত। একদা বামেদের দুর্গ বলে পরিচিত এই ওয়ার্ডে ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা দফতর রয়েছে। বাগরাকোটের বাজার এলাকায় সিপিআই-এর কিছু সংগঠনও রয়েছে। সিপিএমের সংগঠন এই ওয়ার্ডে এখনও জোরদার বলে বিরোধীদের একাংশও মানছেন। এই ওয়ার্ডে গতবার অবশ্য ৬৬১ ভোটে হেরেছিলেন সিপিএম প্রার্থী।

বামফ্রন্টের নেতাদের বক্তব্য, “অশোকবাবুর শহরে নতুন করে কোনও পরিচয় লাগবে না। আর তিনিই এবার বামেদের মেয়র পদপ্রার্থী, তা পুরোপুরি পরিষ্কার। এই অবস্থায় বিরোধী শিবিরের এই নেতাকে ঠিকঠাক জিতিয়ে আনাটাই এখন প্রধান লক্ষ্য। তবে মধ্যবিত্ত বসতি এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে শাসক তৃণমূলের প্রতি ক্ষোভ রয়েছে। সে সব হিসাব করেই অশোকবাবুর ওয়ার্ড বাছাই করা হচ্ছে।” দলের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেছেন, “অশোকবাবুর জন্য একাধিক ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী করার আবেদন আসছে। আমরা সব আলোচনা করছি। আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে দলের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে দেওয়া হবে।”

দার্জিলিং জেলা ফরওয়ার্ড ব্লকের সম্পাদক অনিরুদ্ধ বসু বলেন, “এবার আমরা পুরভোটের লড়াইয়ে অনেকটাই এগিয়ে শুরু করলাম। অশোকবাবুর মতো নেতা সামনে থেকে ভোটের নেতৃত্ব দিলে কর্মীরাও উজ্জীবিত হবেন। নাম ঘোষণা মাত্র তা শুরুও হয়ে গিয়েছে।” সিপিআই-র জেলা সম্পাদক উজ্জ্বল চৌধুরী বলেন, “শিলিগুড়ি শহরের পরিকল্পনা মাফিক উন্নয়ন তো রয়েইছে। সেই সঙ্গে বামেদের এই ‘কঠিন’ সময়ে অশোকবাবুর সামনে থেকে লড়াই করাটা বাম কর্মী সমর্থকদের বাড়তি অক্সিজেন যোগাবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement