মালদহের মোথাবাড়ির জনসভায় অধীর চৌধুরী। —নিজস্ব চিত্র।
মালদহে গিয়ে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কোতোয়ালিকে (গনি পরিবারের বাসভবন) আক্রমণের পাল্টা জবাব দিলেন অধীর চৌধুরী।
বৃহস্পতিবার হবিবপুর, মালতীপুর ও হরিশ্চন্দ্রপুরের সভায় গনি খান চৌধুরীর পরিবারের দুই সদস্য তথা মালদহের দুই বিদায়ী কংগ্রেস সাংসদের নাম মুখে না আনলেও, তৃণমূল নেত্রী বলেছিলেন “ওঁরা ভাবেন, মালদহের মানুষ ওঁদের ভোট দিতে বাধ্য। এ বার সব জমিদারি চলে যাবে।” শুক্রবার মোথাবাড়িতে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর পাল্টা জবাব, “বরকতদা (গনিখান চৌধুরী) জমিদার হতে পারেন, তবে তিনি কোনও দিনই জমিদারি ফলাতেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদহে এসে বরকতদাকে আক্রমণ করেছেন। এটা কাম্য নয়। মালদহের মানুষ সব কিছু সহ্য করতে পারেন। কিন্তু, বরকতদাকে অপমান করা সহ্য করতে পারেন না।” তাঁর সংযোজন, “আজমেঢ় শরিফ যত দিন থাকবে, মৈনুদ্দিন চিস্তির নাম থাকবে। তেমন মালদহ যত দিন থাকবে, সেখানে গনি খানের নামও থাকবে। মমতার গনি খানকে ভাল না-ও লাগতে পারে। তাই বলে তিনি তাঁকে অপমান করতে পারেন না।”
ঘটনাচক্রে এ দিনই ফরাক্কার (মালদহ দক্ষিণ লোকসভার অন্তর্গত) এক সভায় মমতা বলেছেন, “বরকতদা এক সময় মালদহের জন্য অনেক কিছু করেছেন। এখন তাই ভাঙিয়ে ভোট নিচ্ছে তাঁর ভাই, ভাগ্নি, ভাইপোরা। কোনও দিন এঁদের মালদহের জন্য দিল্লিতে কিছু বলতে শুনেছেন? কোনও দিন মালদহের সমস্যা নিয়ে এঁদের লোকসভায় বলতে শুনেছেন? তা হলে এঁদের ভোট দেবেন কেন?”
ভোট-প্রচারের প্রথম পর্বে মালদহে কর্মিসভা করলেও সরাসরি গনি পরিবারকে আক্রমণের রাস্তায় হাঁটেননি তৃণমূল নেত্রী। সাম্প্রতিক অতীতেও প্রয়াত গনি খান চৌধুরী বা তাঁর পরিবারের প্রকাশ্যে সমালোচনা করতে শোনা যায়নি তাঁকে। কিন্তু দ্বিতীয় দফায় লোকসভা ভোটের প্রচারে নাম না করলেও মমতা গনি খানের ভাগ্নি মৌসম বেনজির নূর এবং ভাই আবু হাসেম খান চৌধুরীর (ডালু) সমালোচনার মাত্রা বাড়িয়েছেন। মৌসম এবং ডালুবাবুর বক্তব্য, “আমরা নই, তৃণমূলই গনি খান চৌধুরীর নাম ভাঙিয়ে ভোটে জিততে চাইছে।” আর অধীর জুড়ছেন, “যদি কথা বলাই সাংসদের একমাত্র যোগ্যতা হয়, তবে তৃণমূলের শতকরা ৮৫ জন সাংসদের টিকিটই পাওয়া উচিত নয়। কারণ, তাঁরা সংসদে মুখ খোলেন না। কাজ করতে গেলে সংসদে কথা বলার প্রয়োজন হয় না।”