পর পর মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত শাসক দলের কর্মীদের পুলিশ গ্রেফতার করছে না অভিযোগ তুলে আন্দোলনের হুমকি দিল বিজেপি। ৩ জুলাই বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদবের সঙ্গে দেখা করে পরিস্থিতির কথা জানাবেন। বিজেপির কোচবিহার জেলার সাধারণ সম্পাদক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “লোকসভার পর থেকে আমাদের দলের কর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে। এখনও ২০ জন কর্মী জখম হয়েছেন। এক জন ছুরিকাহত। জেলা সম্পাদককে মারধর করা হয়েছে। পুলিশকে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।”
তিনি বলেন, “জেলায় নয়া পুলিশ সুপার এসেছেন। তাঁকে আমরা সব কিছু জানাতে চাই। তাও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হলে আন্দোলনে নামব।” লোকসভা ভোটের পর থেকে বিজেপি কর্মীদের উপরে হামলার ঘটনায় ৪০টির বেশি অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রাজনৈতিক গোলমালের যে অভিযোগ থানায় জমা পড়েছে সবগুলির ক্ষেত্রে মামলা করা হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একই কথা বলেন কোচবিহারের পুলিশ সুপার রাজেশ যাদব।
গত শনিবার রাতে দলীয় মিটিং সেরে বাড়ি ফেরার পথে পুন্ডিবাড়ির কাছে তৃণমূলের কর্মীরা বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক সুকুমার রায়কে মারধর করেন বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে রাতেই পুন্ডিবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান। বিজেপি কর্মীরা রবিবার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত পুন্ডিবাড়ি বন্ধ পালন করেন। শনিবার রাতেই বক্সিরহাটে ব্লক বিজেপির নেতা দশরথ বর্মনকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসক দলের কর্মীদের বিরুদ্ধে। দুটি ঘটনাতেই থানায় এফআইআর করা হয় বলে বিজেপি নেতৃত্ব জানিয়েছেন। ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও পুলিশের তরফে কাউকে ধরা তো দূরের কথা, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়নি বলে অভিযোগ। নিখিলবাবু বলেন, “পুলিশের একটি অংশ শাসকদলের অঙ্গুলিহেলনে কাজ করছে। সে কারণে শাসকদলের কর্মী-নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও মামলা হলে তা ধামাচাপা দিয়ে রাখা হচ্ছে।”
বিজেপি-র অভিযোগ, তিন সপ্তাহ আগে বক্সিরহাটে ফুলবাড়িতে বিজেপি কর্মীদের উপর শাসক দলের কর্মীরা হামলা চালায়। সে সময় পাঁচ কর্মী মাথায় আঘাত নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন। ওই এলাকাতেই বিজেপি-র এক মহিলা কর্মী জমিলা বিবি ছুরিকাহত হন। দিনহাটার মাতালহাটে বিজেপি নেতাদের উপরে হামলা হয়, ঘটনায় দলের মাতালহাট অঞ্চলের সভাপতি বিনোদ বর্মন শিলিগুড়িতে চিকিৎসাধীন। সবক্ষেত্রেই অভিযুক্ত তৃণমূল।
তৃণমূলের দাবি, বিজেপি মিথ্যা অভিযোগ করছে। নিজেরাই গণ্ডগোল করে এলাকা অশান্ত করার চেষ্টা করছে ওরা। দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, “বিজেপি পরিকল্পিত ভাবে গোলমালের চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এই সব করছে। জেলাকে অশান্ত করার চেষ্টা হলে আমরা মেনে নেব না।”