মুখে গোষ্ঠীকোন্দলের কথা স্বীকার না করলেও কর্মিসভায় দলের নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়ার আহ্বান জানালেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি।
শুক্রবার দিনহাটার পেটলায় এক কর্মিসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। সেখানে স্পষ্ট ভাবে দলে যাতে কেউ বিশৃঙ্খলা তৈরি না করেন সে ব্যাপারে নেতা-কর্মীদের সতর্ক করেন সুব্রতবাবু। তিনি বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, “আমরা কেউ কোনও বিশৃঙ্খলা তৈরি করব না। নেতা-কর্মী সমর্থক সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে লড়াই করতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথে চলতে হবে। তাহলে কেউ লাঞ্ছিত, বঞ্চিত হব না।” পরে অবশ্য সংবাদমাধ্যমের কাছে তিনি বলেন, “কোথাও কোনও গোষ্ঠী কোন্দল নেই। সবই সংবাদমাধ্যমের মনগড়া।”
এ দিনের কর্মিসভায় একই মঞ্চে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, মিহির গোস্বামী, অশোক মণ্ডল, অসীম নন্দীকে হাজির করে ঐক্যের বাতাবরণ তৈরি করার চেষ্টাও করে তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনের মুখে এই প্রথম তৃণমূলের কোনও রাজ্য নেতা কোচবিহারে কর্মিসভা করলেন। দলীয় সূত্রের খবর, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের খবর যে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে রয়েছে এবং তা যাতে কোনও ভাবেই লোকসভা ভোটে প্রভাব ফেলতে না পারে, তা নিয়ে কর্মিদের সতর্ক করতেই সুব্রতবাবু কোচবিহারে এসে সভা করেন।
দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কোচবিহারে গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় থেকে তৃণমূলে গোষ্ঠী কোন্দল প্রকট হয়ে ওঠে। দিন যত গড়িয়েছে সমস্যা তত বেড়েছে। লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার কেন্দ্রে রেণুকা সিংহকে প্রার্থী করার পরে ওই দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে চলে আসে।
দলের কোচবিহার জেলা কমিটির সম্পাদক দুলাল দে প্রকাশ্যে রেণুকা সিংহকে কেন প্রার্থী করা হল সে প্রশ্ন তোলেন। পরে তাঁকে দলীয় পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি কোচবিহার টাউন ব্লক কমিটির সভাপতি আবদুল জলিল আহমেদের সঙ্গে কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান বীরেন কুণ্ডুর কোন্দল প্রকাশ্যে চলে আসে। কোচবিহার শহরে রবীন্দ্রভবনে বীরেন কুণ্ডুর গোষ্ঠী বৈঠকে ডাকলেও জলিলবাবুকে সেখানে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে।
শীতলখুচির বিধায়ক হিতেন বর্মন এখনও কোনও প্রচারে নামেননি। তিনি কোনও কর্মিসভায় যাবেন না বলে প্রকাশ্যে জানিয়ে দিয়েছেন। জেলার অন্যতম নেতা মিহির গোস্বামীকেও প্রচারে সেভাবে দেখা যাচ্ছে না বলে দলের মধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। তিনি অবশ্য জানিয়েছেন, “যেখানে তাঁকে ডাকা হচ্ছে, সেখানেই তিনি যাচ্ছেন।” দিনহাটার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক অশোক মণ্ডলকেও প্রচারে দেখা যাচ্ছে না। জেলা সভাপতিও বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে প্রচার করছেন।
এ দিন কর্মিসভায় সুব্রতবাবু বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রথে চেপেছেন। ওই রথ দিল্লিতে নিয়ে গিয়ে আমাদের পূণ্য অর্জন করতে হবে।”