যাত্রীদের জন্য কোনও শেডেরই ব্যবস্থা নেই কালিয়াগঞ্জের বাসস্ট্যান্ডে। নিজস্ব চিত্র।
তৈরি হওয়ার এক দশক পরেও কালিয়াগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে তৈরি হল না যাত্রী প্রতীক্ষালয়। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে বেহাল হয়ে পড়েছে দু’টি শৌচাগারও। যাত্রীদের পানীয় জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। এই পরিস্থিতিতে প্রতিদিন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ পুর বাসস্ট্যান্ডে জেলার বিভিন্ন রুটের গাড়ি ধরতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। বাসমালিকদের অভিযোগ, যাত্রীদের সমস্যার মাথায় রেখে অতীতে বহুবার পুরসভাকে বাসস্ট্যান্ডের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানানো হলেও কোনও লাভ হয়নি।
সমস্যার কথা জানেন কংগ্রেস পরিচালিত কালিয়াগঞ্জ পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যান অরুণ দে সরকারও। তাঁর দাবি, “গত জুনে বাসস্ট্যান্ডের পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। কিন্তু ১৭ জুলাই পুরসভার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় সেই প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি।” তিনি জানান, টাকার অভাবে যাত্রী প্রতীক্ষালয়, অতিরিক্ত শৌচাগার ও পানীয় জলের ব্যবস্থা করা যায়নি। বর্তমানে বোর্ডের প্রশাসক বসেছে। জেলা প্রশাসন ওই দায়িত্বে আছে। জেলাশাসক স্মিতা পাণ্ডে বলেন, “কালিয়াগঞ্জ পুর বাসস্ট্যান্ডের সমস্যা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”
২০০১ সালে পুরসভার উদ্যোগে কালিয়াগঞ্জ স্টেশন সংলগ্ন প্রায় এক একর জমিতে বাসস্ট্যান্ডটি গড়ে ওঠে। বাসস্ট্যান্ড থেকে প্রতিদিন বালুরঘাট, শিলিগুড়ি, রায়গঞ্জ-সহ জেলার বিভিন্ন রুটে ১১০টি বাস ও ট্রেকার যাতায়াত করে। বাসস্ট্যান্ডের মূল ভবনে টিকিট কাউন্টার-সহ বাস মালিকদের ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের কার্যালয় থাকলেও যাত্রীদের প্রতীক্ষালয় নেই।
যাত্রীদের অভিযোগ, বাস ধরতে গেলে চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। চড়া রোদ ও বৃষ্টি হলে যাত্রীরা টিকিট কাউন্টার-সহ বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া বিভিন্ন দোকানের সামনে আশ্রয় নেন। বাসস্ট্যান্ড চত্বরে পুরুষ ও মহিলা যাত্রীদের জন্য দু’টি পৃথক শৌচাগার থাকলেও সংস্কারের অভাবে সেগুলি বেহাল ও নোংরা হয়ে রয়েছে। শৌচাগারে জল মেলে না। পুরুষ শৌচাগারের দরজাও ভাঙা। পুরসভার তরফে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে দু’টি নলকূপ বসানো হলেও তারমধ্যে একটি নলকূপ দীর্ঘদিন ধরে বিকল। আরেকটি নলকূপ দিয়ে দুর্গন্ধময় জল বার হয়।
কালিয়াগঞ্জ যাত্রীবাহী মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বব ভট্টাচার্যের অভিযোগ, “পুরসভা প্রতি দিন ‘পার্কিং ফি’ বাবদ প্রতিটি বড় গাড়ি ও ছোট গাড়ি থেকে ৭টাকা ও ৫ টাকা করে আদায় করে। কিন্তু সেই টাকা বাস স্ট্যান্ডের যাত্রী পরিষেবার উন্নয়নে লাগানো যাচ্ছে না।” তিনি জানান, অতীতে সংগঠনের তরফে বহুবার পুরসভাকে বাসস্ট্যান্ডের পরিকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানানো হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, ‘পার্কিং ফি’র টাকায় পুরসভা নিয়মিত বাসস্ট্যান্ড রক্ষণাবেক্ষণ ও সংস্কারের কাজ করে। যাত্রীদের একাংশের অপব্যবহারের জেরেই শৌচাগার ও পানীয় জলের পরিকাঠামো ভেঙে পড়েছে।