ইস্টবেঙ্গলের ফুটবলারদের উচ্ছ্বাস। — ফাইল চিত্র।
এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠার পর থেকেই ফুরফুরে হাওয়া ইস্টবেঙ্গলে। খেলোয়াড়দের হারানো আত্মবিশ্বাস অনেকটাই ফিরে এসেছে। সেটা তাঁদের চালচলনেই বোঝা যাচ্ছে। তবে কোচ অস্কার ব্রুজ়ো চান না খেলোয়াড়েরা এএফসি-র সাফল্যের কথা মনে রেখে বসে থাকুক। মহমেডানের বিরুদ্ধে নামার আগে তিনি স্পষ্ট জানালেন, তাঁর কাছে এএফসি অতীত। মহমেডানকে হারিয়েই তিনি আইএসএলে জয়ের রাস্তায় ফিরতে চাইছেন।
আইএসএলের পয়েন্ট টেবিলে ছ’টি ম্যাচের সব ক’টিতে হেরে সবার শেষে ইস্টবেঙ্গল। মহমেডান ম্যাচের আগে দিন ব্রুজ়ো বলেছেন, “আমার কাছে এএফসি-র অধ্যায় অতীত। দলের পারফরম্যান্সে খুশি। এএফসি-তে আবার মার্চে খেলতে হবে। এখন তাই পুরোপুরি ফোকাস আইএসএলে। অন্ধকার রাস্তার শেষে আলো দেখতে পেয়েছি। সেই আলো লক্ষ্য করে এগিয়ে যেতে হবে। ভাল ফলাফল করতে হবে প্রতি ম্যাচেই। এত দিন দল যে পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে গিয়েছে তা বদলে দেওয়ার সুযোগ এসেছে। আমি উত্তেজিত। সেরা পারফরম্যান্সটাই উপহার দিতে চাই।”
এএফসি-র পারফরম্যান্স যে দলের মানসিকতা বদলে দিয়েছে তা মেনে নিয়েছেন ব্রুজ়ো। তাঁর কথায়, “সবচেয়ে বড় বদলটা দেখতে পেয়েছি মানসিকতাতেই। খেলোয়াড়ের আচরণ অনেক বদলে গিয়েছে। তবে এটাও মনে রাখছি, আইএসএল আলাদা প্রতিযোগিতা। আলাদা মাঠে খেলতে হবে। পয়েন্ট তালিকা আলাদা। বাস্তবে ফিরে এসেছি আমরা। এ বার যত বেশি সম্ভব পয়েন্ট সংগ্রহ করাই আমাদের লক্ষ্য। প্রথম ছয়ের মধ্যে শেষ করতে হবে।”
আইএসএলে মহমেডান রয়েছে ঠিক ইস্টবেঙ্গলের উপরেই ১২ নম্বর স্থানে। শুরুটা ভাল করেও তারা পথ হারিয়েছে। তবু পড়শি ক্লাবকে ছোট করে দেখতে নারাজ ব্রুজ়ো। বলেছেন, “মাঝমাঠে ওদের খেলোয়াড়দের দেখুন। কাসিমভ, আলেক্সিসের মতো খেলোয়াড় রয়েছে। উইংয়েও বেশ কিছু খেলোয়াড়কে দেখেছি। মহমেডানের বেশ কিছু খেলা খতিয়ে দেখেছি। ওদের দুর্বলতাও খুঁজে বার করেছি। সেগুলো কাজে লাগিয়েই কাল জিততে হবে আমাদের। জানি মহমেডান ভাল জায়গায় নেই। তবে ওদের হালকা নিলে ভুল হবে।”
কোন কোন জায়গায় জোর দিলে ইস্টবেঙ্গল সফল হতে পারে সেটাও ব্যাখ্যা করেছেন ব্রুজ়ো। তাঁর মতে, “দ্রুত বল দেওয়া-নেওয়া করতে হবে। মাঝমাঠ শাসন করতে হবে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, বল হারালে সেটা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আগের ম্যাচগুলোতে এই ভুলগুলো করার শাস্তি পেয়েছি। রক্ষণের দিকে আরও জোর দিতে হবে।”
ব্রুজ়ো যে আর ক্লেটন সিলভাকে দলে চাইছেন না এটা মুখে না বললেও ইঙ্গিতে স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। স্পেনীয় কোচকে প্রশ্ন করা হলে তাঁর উত্তর, “ক্লেটন ভাল ফুটবলার। চলতি সপ্তাহে অনুশীলনে অনেক পরিশ্রম করেছে।” তার পরেই তিনি বললেন, “আমাদের দলে আক্রমণে খেলার জন্য দিমিত্রিয়স, তালালের মতো ফুটবলার রয়েছে। আমরা এমন খেলোয়াড় চাই যাঁর শক্তিশালী এবং আগ্রাসী। আমাদের দলে এক পজ়িশনে খেলার মতো একাধিক ফুটবলার রয়েছে।”
চোট সারাতে স্পেনে ফিরেছেন হেক্টর ইয়ুস্তে। তিনি মহমেডান ম্যাচে খেলবেন না। ফলে বিদেশি ডিফেন্ডার বলতে শুধু হিজাজি মাহেরই রয়েছেন ব্রুজ়োর হাতে। তবে ইস্টবেঙ্গল কোচের ইঙ্গিত, সেন্ট্রাল ডিফেন্ডার হিসাবে আনোয়ার আলির পাশে জিকসন সিংহকে খেলাতে পারেন।