দিনভর দাঁড়িয়ে থাকার পরেও বন্ড মেলেনি। সন্ধে গড়িয়ে রাত নামে। তারপরেও বন্ড না পেয়ে উত্তেজিত কৃষকরা চড়াও হন হিমঘর কর্মীদের উপর। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সোমবার রাতে এই ঘটনার পর মঙ্গলবার সকালে প্রায় দু’শো চাষি দিনহাটা মহকুমা শাসকের দফতরের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখান।
কৃষকদের অভিযোগ, বন্ড দেওয়ার আশ্বাস দিয়েও দিনের পর দিন হিমঘর কর্তৃপক্ষ তাঁদের ঘোরাচ্ছেন। আলু তাঁরা কোথায় নিয়ে যাবেন তা বুঝতে পারছেন না। মহকুমা শাসককে স্মারকলিপি দিয়ে সমস্যার কথা জানান তাঁরা। মহকুমা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাষিদের প্রায় দেড়শো জনের নাম নথিভুক্ত করে নেওয়া হয়।
দিনহাটার মহকুমাশাসক কৃষ্ণাভ ঘোষ বলেন, “আমরা চাষিদের নাম নথিভুক্ত করেছি। তবে সবাই চাষি নয় বলে অভিযোগও পেয়েছি। কৃষকদের বেছে নিয়ে তাঁদের আলু কীভাবে রাখা যায় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে।” হিমঘর কর্তৃপক্ষের তরফে মানিক বৈদ দাবি করেন, তাঁরা ভোটার কার্ড এবং পঞ্চায়েতের শংসাপত্র দেখে আলু রাখার জন্য বন্ড দিচ্ছেন। তাঁদের হিমঘরে দুলক্ষ প্যাকেট (৫০ কেজির প্যাকেট) আলু রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। জানা গিয়েছে, প্রতি বছর প্রায় দুই হাজার কৃষক আলু রাখেন। এবার ওই সংখ্যা প্রায় দু’গুণ হয়ে গিয়েছে। সে জন্য প্রত্যেক চাষির কাছ থেকে ৩০ থেকে ২০ ব্যাগ (৫০ কেজির) আলু নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “সকাল থেকে রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত বন্ড দেওয়া হয়েছে। এর পরেও বলা হয়েছে, বাকিদের পরে দেখা হবে। তার মধ্যেই কয়েকজন হিমঘরের কর্মীদের উপরে চড়াও হয়। বিষয়টি মহকুমা শাসককে জানানো হয়েছে।”
দফতর সূত্রের খবর, কোচবিহারে জেলায় এবারে প্রায় সাড়ে ৯ লক্ষ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হয়েছে। অন্তত ছয় লক্ষ মেট্রিক টন আলু হিমঘরে রাখতে হবে। কোচবিহারে হিমঘরের সংখ্যা ১২টি। যেখানে দেড় লক্ষ মেট্রিক টন আলু রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। এমন অবস্থায় আলুর বন্ড না পেয়ে চাষিদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।