অনলাইনে মনোনয়ন পত্র তোলার ব্যবস্থা থাকায় মঙ্গলবার অশান্তি এড়াতে পারল চাঁচল কলেজ। সোমবার ছিল অনলাইনে মনোনয়ন তোলার দিন। মঙ্গলবার কলেজে গিয়ে মনোনয়ন তোলার জন্য ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কলেজ কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশির ভাগ প্রার্থীই অনলাইনে মনোনয়নপত্র তুলেছেন। মঙ্গলবার জনা কয়েক কলেজে গিয়ে মনোনয়ন তুলেছেন। তাতে বাধা পড়েনি। ঝামেলা এড়ানো গিয়েছে। যা দেখে স্বস্তিতে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীরা। পুলিশও নিশ্চিন্ত ছিল।
গত বছরেও চিত্রটা ছিল অন্যরকম। ছাত্র সংঘর্ষের জেরে স্থগিত হয়ে গিয়েছিল নির্বাচন। মালদহের সামসি কলেজে একই ঘটনা ঘটে। সোমবারেও ওই কলেজে প্রায় একই চিত্র দেখা গিয়েছে। সংঘর্ষ এড়াতে চাঁচলের ৮১ নম্বর জাতীয় সড়ক থেকে কলেজ পর্যন্ত ৮০০ মিটার ঢেকে গিয়েছিল পুলিশি প্রহরায়। কলেজ পড়ুয়াদেরও পরিচয়পত্র দেখিয়ে ঢোকানো হয়। শ’দুয়েক পুলিশকর্মী ছাড়াও হাজির ছিলেন তিনটি থানার আইসি, ওসি-সহ এসডিপিও। মহিলা পুলিশও হাজির ছিলেন। দিনভর ছিল টানটান উত্তেজনা। দোকানপাটও তেমন খোলেনি।
অথচ এ বছর নির্বাচন প্রক্রিয়া চালু হতেই পুলিশের তরফে অনলাইনে মনোনয়ন তোলার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল কলেজ দু’টিকে। চাঁচল কলেজে তা করা গিয়েছে। ফলত অশান্তি এড়ানো গিয়েছে বলে মত কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে পুলিশের।
আর তা দেখেই এ বার জেলার অন্যান্য কলেজে অনলাইনে মনোনয়নপত্র তোলার প্রস্তাব দেওয়া হবে বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। চাঁচলের এসডিপিও কৌস্তভদীপ্ত আচার্য বলেন, “অনলাইন ব্যবস্থার ফলে অশান্তি এড়ানো গিয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক সংগঠনই তাদের মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে পেরেছে। এক্ষেত্রে মনোনয়ন ছিঁড়ে ফেলা, মনোনয়নপত্র তুলতে বাধা দেওয়ার মতো অভিযোগও কেউ করতে পারবে না। চাঁচল কলেজে শুরু হল। এরপর সব কলেজকেই একই ব্যবস্থা নিতে বলা হবে।”
চাঁচল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, কলেজের ওয়েবসাইট থেকে মনোনয়নপত্র ডাউনলোড করে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সে জন্য রবিবার রাত ১২টা থেকে সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা কলেজের ওই ওয়েবসাইট খোলা ছিল। তবে এই প্রথম ওই ব্যবস্থা চালু হওয়ায় ছাত্র সংগঠনগুলির অনুরোধে মঙ্গলবার কলেজে গিয়েও মনোনয়নপত্র দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ গাহুল আমিন বলেন, “সব ক’টি ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেই ওই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আর তাতে ফলও মিলেছে।”
টিএমসিপির চাঁচল-১ ব্লক সভাপতি সুমিত সরকার বলেন, “মনোনয়ন তোলা নিয়ে প্রত্যেকবছরই গণ্ডগোল হয়। এটা খুব ভালো সিদ্ধান্ত।”
এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি অমিত ঝাঁ বলেন, “জেলার সব কলেজেই ওই ব্যবস্থা চালুর দাবি জানাচ্ছি। একই কথা বলেন এবিভিপি নেতা লক্ষ্মণ সাহাও।”
তবে প্রশ্ন উঠেছে, অনলাইনে মনোনয়ন পত্র তোলা হলেও সবাইকে তো তা কলেজে গিয়েই জমা দিতে হবে। সেক্ষেত্রে গোলমাল এড়ানো যাবে, তার নিশ্চয়তা কই?
ছাত্র পরিষদ নেতা জয়ন্ত দাস বলেন, “মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ক্ষেত্রেও অনলাইন চালু করা যায় কি না, তা পুলিশ ও কলেজ কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখুক।”