ঘেরাও ব্লক খাদ্য সরবরাহ আধিকারিক। ভগবানপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
রেশন ডিলারের নামে পণ্য বিলিতে দুর্নীতির অভিযোগ জানিয়ে খাদ্য সরবরাহ দফতরের আধিকারিককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন উপভোক্তারা। মালদহের রতুয়া ১ ব্লকের সামসি গ্রাম পঞ্চায়েতের ভগবানপুরের ঘটনা। সোমবার খাদ্য সরবরাহ আধিকারিককে ঘেরাও করে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রশাসনের সর্বস্তরে অভিযোগ জানান বাসিন্দারা। রেশন বিলি ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ পেয়েই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। মহকুমাশাসক সঞ্জীব দে বলেন, “উপভোক্তাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
প্রশাসন ও উপভোক্তাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, ভগবানপুরের ওই রেশন ডিলারের নাম মহম্মদ সাইদুর রহমান। সেখান থেকে রেশনের পণ্য বিলি করা হয় ভগবানপুর ছাড়াও মহেশপুর ও পিন্ডলতলা এলাকার বাসিন্দাদের। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরেই তিনি রেশনের নানা পণ্য বিলিকে ঘিরে দুর্নীতি করছেন বলে অভিযোগ।
উপভোক্তাদের অভিযোগ, গত দু’বছর ধরে কয়েকশো নতুন রেশন কার্ড জমা দেওয়া হলেও উপভোক্তাদের পণ্য দেওয়া হচ্ছে না। অন্যত্র কয়েক মাসের মাথায় নতুন উপভোক্তাদের পণ্য দেওয়া শুরু হলেও এখানে উপভোক্তাদের পণ্য নিয়ে দুর্নীতি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাদের আরও অভিযোগ, গত ৮ ও ৯ অগস্ট এপিএল উপভোক্তাদের চাল এলেও বরাদ্দ হয়নি বলে উপভোক্তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরে চাল খোলাবাজারে ওই ডিলার বিক্রি করে দেন বলে জানতে পারেন তারা। এ ছাড়া ওই ডিলারের কাছে প্রচুর ভুয়ো কার্ড আছে। সেই ভুয়ো রেশন কার্ডের পণ্য হামেশাই বাজারে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ পণ্য বরাদ্দ হয়নি বলে উপভোক্তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। পণ্য নেওয়ার পরে কোনও ক্যাশ মেমো দেওয়া হয় না। উপভোক্তারা বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদ জানানোয় ওই ডিলার তাদের হুমকি দেন বলে অভিযোগ। তাই জোট বেঁধে প্রথমে রতুয়ায় খাদ্য সরবরাহ আধিকারিকের দফতরে হাজির হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। পরে প্রশাসনে সর্বস্তরে অভিযোগ জানান।
রতুয়া ১ ব্লকের খাদ্য সরবরাহ আধিকারিক রাজীবলোচন সিংহরায় বলেন, “রেশনে পণ্য বিলিকে ঘিরে উপভোক্তারা নানা অভিযোগ করছেন। ঘটনার তদন্ত করা হবে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও ওই ডিলার মহম্মদ সাইদুর রহমান বলেন, “পণ্য বিলি নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ঠিক নয়। যা পণ্য আসে তার সবটাই নিয়ম মেনে বিলি করা হয়। তদন্ত করলেই তা প্রমাণিত হয়ে যাবে। বাসিন্দারা কেন এ ধরনের অভিযোগ তুলছেন তা বুঝতে পারছি না।” স্থানীয় আনিকুল হক, নিশিকান্ত দাস বলেন, “অন্য রেশন দোকানে বিস্তারিত খোঁজ নিয়েই আন্দোলনে পা বাড়িয়েছি। ওই ডিলার দিনের পর দিন দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। কিছু বললেই তিনি হুমকি দিন। প্রশাসন এখন ব্যবস্থা না নিলে বড় আন্দোলন শুরু হবে।”