মালদহে তৃতীয় বর্ষের ছাত্রীর মুখে অ্যাসিড ঢালার ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে এখনও গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ধরা পড়েনি অভিযুক্ত যে সোনার দোকান থেকে অ্যাসিড সংগ্রহ করে বলে সন্দেহ, তার মালিকও।
ঘটনার চারদিন পরেও অভিযুক্তেরা ধরা না পড়ায় ঘটনাস্থল বৈষ্ণবনগরের নানা এলাকায় প্রশ্ন উঠেছে। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, অভিযুক্ত উজ্জল মণ্ডল ও তাঁর দুই দাদা এলাকাতেই রয়েছে। মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, “একজন অভিযুক্তকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। তিন অভিযুক্তকে ধরতে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযুক্তরা এলাকা থেকে পালিয়ে গিয়েছে। সেই কারণে পুলিশ তাঁকে ধরতে পারছে না।” এলাকার কংগ্রেস বিধায়ক ঈশা খান চৌধুরীর অভিযোগ, “যে তৎপরতার সঙ্গে অপরাধীদের ধরার দরকার ছিল তা দেখা যাচ্ছে না। পুলিশ নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে এখন বলছে অভিযুক্তরা পালিয়ে গিয়েছে।” পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে অভিযুক্ত উজ্জল মণ্ডল তাঁর বাড়ির নীচে থাকা সোনার দোকান থেকে অ্যসিড নিয়ে তা ছাত্রীটির মুখে ঢেলেছিল। ওই সোনার দোকানদারের হদিসও পুলিশ পায়নি। বৈষ্ণবনগর থানার আইসি মানিক দেবনাথ বলেন, “সোনার দোকানদারের খোঁজ চলছে।”
ওই ছাত্রীর বাবার বক্তব্য, “যে ছেলেটি আমার মেয়ের সবর্নাশ করেছে তাকে পুলিশ এখনো ধরতে পারেনি। পুলিশ সুপারকে বলেছি, ওঁদের তিন ভাইকে গ্রেফতার করুন। না হলে ওরা আমার আমার ছেলেমেয়ের উপরে হামলা করবে।” বঙ্গীয় স্বর্ণশিল্পী ও স্বর্ণ ব্যবসায়ী অ্যসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক উজ্জল সরকারও গোটা ঘটনায় উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “বেআইনিভাবে অ্যসিড কেনাবেচার খবর প্রকাশিত হওয়ার পরে বেশ কয়েকজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী আমার কাছে এসেছিলেন। কোথা থেকে কী ভাবে অ্যসিডের বৈধ লাইসেন্স পাওয়া যাবে তা জানতে এসেছিল। এখন অনেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী বৈধ লাইসেন্স নিয়ে অ্যাসিড কেনাবেচা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। কিন্তু কোথা থেকে অ্যসিড বিক্রির বৈধ লাইসেন্স পাওয়া যাবে কেউ জানে না।”
বিয়েতে রাজি না হওয়ায় উজ্জল মণ্ডল নামে এক যুবক সাটাঙ্গা পাড়ায় তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রীর বাড়িতে ঢুকে তাঁর মুখে জোর করে অ্যসিড ঢেলে পালিয়ে যায়। অ্যসিডে ওই ছাত্রীর খাদ্যনালী ও শ্বাসনালীর বেশ কিছু অংশ পুড়ে গিয়েছে। মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে তাঁকে শনিবার কলকাতায় পাঠানো হয়। কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে।