শোক ও রোষ: ভেঙে পড়েছেন নুরজাহানের পরিজন। নিজস্ব চিত্র
এক তরুণী ও তাঁর দু’মাসের শিশুকন্যাকে খুন করে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। অভিযোগের তির ওই তরুণীর স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটে ইসলামপুর থানার কমলাগাঁও গ্রাম পঞ্চায়েতের হুলুগছ এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, নিহতদের নাম নুরজাহান (২২) ও তাঁর সন্তান রিজওয়ানা খাতুন। বাড়ির উঠোনের পাশেই মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছিল তাঁদের দেহ। স্বামীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে ঝামেলার জেরেই তাঁদের খুন করা হয়েছে বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে। তবে এর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা, তাও দেখছে ইসলামপুর থানার পুলিশ। তদন্তকারীরা জানান, ওই তরুণীর স্বামী আকবর আলি পলাতক।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ওই খবর ছড়াতেই উত্তেজিত জনতা আকবরের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। সেখানে আগুনও ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। খবর পেয়ে দমকল পৌঁছে আগুন নেভায়। পুলিশ জানায়, ওই ঘটনায় নুরজাহানের শ্বশুর-শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ইসলামপুরের পুলিশ সুপার সচিন মাক্কর বলেন, ‘‘তরুণীকে শ্বাসরোধ করে খুনের চিহ্ন মিললেও শিশুর দেহে আঘাত নেই। তাকে জীবিত অবস্থাতেও মাটিতে পুঁতে দেওয়া হতে পারে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে সেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। ঘটনায় মূল অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’
ওই তরুণীর বাপের বাড়ির লোকেদের দাবি, এক বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে নুরজাহানের উপরে অত্যাচার করতেন আকবর। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেও তাঁর উপরে অত্যাচার চালানো হয়। মেয়ের জন্মের পরে ৬ দিন আগে শ্বশুরবাড়িতে ফিরেছিলেন নুরজাহান। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালে নুরজাহানের বাবা গফুর আলম মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে ডাকাডাকি করে সাড়া পাননি। বাড়িতে তালা ঝোলানো দেখে তাঁর সন্দেহ হয়। উঠোনে মাটির স্তূপ দেখে সন্দেহ হয় তাঁর। তার পরেই দু’টি দেহের হদিস মেলে। খবর পেয়েই উত্তেজনা ছড়ায় গোটা এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, গণরোষ থেকে বাঁচতে ওই তরুণীর শ্বশুর-শাশুড়ি অন্য একটি বাড়িতে লুকিয়ে পড়েন। সেখান থেকে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে। পুলিশ সূত্রে খবর, ইসলামপুরের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট অনুরাধা লামার উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে দু’টি দেহ উদ্ধার করা হয়। ওই তরুণীর হাত-পা দড়ি দিয়ে বাঁধা ছিল।
স্থানীয় তৃণমূল নেতা কামালউদ্দিন বলেন, ‘‘পুলিশ দ্রুত মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে যথাযথ ব্যবস্থা নিক।’’