বেহাল বিএসএনএল পরিষেবা, ক্ষোভ জেলায়

কখনও মোবাইলে কথা শুরু করতেই কেটে যাচ্ছে লাইন। কখনও আধ ঘণ্টা চেষ্টা করেও মিলছে না লাইন। একই অবস্থা ইন্টারনেট পরিষেবাতেও। সংযোগ হতেই ব্যয় হচ্ছে বহু সময়। কোচবিহারে করে কোচবিহার, দিনহাটা, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পরিষেবা আরও খারাপ।

Advertisement

নমিতেশ ঘোষ

কোচবিহার শেষ আপডেট: ১০ এপ্রিল ২০১৫ ০২:২৭
Share:

কখনও মোবাইলে কথা শুরু করতেই কেটে যাচ্ছে লাইন। কখনও আধ ঘণ্টা চেষ্টা করেও মিলছে না লাইন। একই অবস্থা ইন্টারনেট পরিষেবাতেও। সংযোগ হতেই ব্যয় হচ্ছে বহু সময়। কোচবিহারে করে কোচবিহার, দিনহাটা, মাথাভাঙা, মেখলিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় পরিষেবা আরও খারাপ। অনেক গ্রাহক বিএসএনএলের পরিষেবা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবছেন। বিএসএনএল কতৃপক্ষের তরফ থেকে সমস্যার কথা স্বীকার করা হয়েছে। তাদের যুক্তি, বিদ্যুতের লোভোল্টের জন্য সমস্যা তৈরি হয়েছে। সেক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থাগুলি কিভাবে পরিষেবা দিতে পাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গ্রাহকদের একটি অংশের অভিযোগ, বিএসএনএলের কর্মীদের সক্রিয়তার অভাবেই গ্রাহকরা পরিষেবা পাচ্ছেন না। বহু এলাকাতেই বাস্তুকাররাও সঠিক ভাবে কাজ করে না বলে অভিযোগ।3

Advertisement

বিএসএনএলের কোচবিহার জেলার আধিকারিক দিলীপ কুমার রায় বলেন, “বেশ কিছুদিন ধরে পরিষেবায় সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। বিদ্যুতের লো ভোল্টেজের কারণে এমন অবস্থা তৈরি হয়েছে সাধারণ ভাবে আমরা মনে করছি। তাঁর বাইরে কোনও অভিযোগ থাকলে খতিয়ে দেখা হবে।”

বিএসএনএলের কোচবিহার জেলা টেলিকম উপদেষ্টা কমিটির কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন সাংসদ রেণুকা সিংহ। তিনি জানান, আগামী সপ্তাহে কমিটির বৈঠক হবে। ওই বৈঠকে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হবে। তিনি বলেন, “ওই পরিষেবা যাতে স্বাভাবিক হয় সে ব্যাপারে কি করা যায় তা নিয়ে আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করব।” ওই কমিটির সদস্য দিব্যেন্দু রায় বলেন, “অনেকেই আমার কাছে অভিযোগ করেছেন। আমি নিজে ভুক্তভোগী। মিটিঙয়ে বিষয়টি তুলে ধরব।” বিদ্যুৎ দফতর সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, এখন কোনও এলাকাতেই তেমন ভাবে লো ভোল্টেজ হচ্ছে না।

Advertisement

বিএসএনএল সূত্রের খবর, কোচবিহারে বিএসএনএলের মোবাইল ব্যবহার করেন প্রায় ৪২ হাজার মানুষ। ল্যান্ড লাইন সংযোগ রয়েছে ১৫ হাজারের মতো। এর বাইরে ‘ব্রড ব্যান্ড’ ব্যবহার করেন প্রায় পাঁচ হাজার বাসিন্দা। এই অবস্থায় গত প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে পরিষেবা বেহাল হয়ে পড়ায় তাঁদের চরম অসুবিধেয় পড়তে হয়েছে। ইন্টারনেটের কাজ বেশিরভাগ সময় বাইরে থেকে করতে হচ্ছে। তা নিয়ে বিরক্ত হয়ে উঠেছেন তাঁরা। মেখলিগঞ্জের বিধায়ক তথা বাম নেতা পরেশ অধিকারী অভিযোগ করেন, মেখলিগঞ্জে ব্রড ব্যান্ড পরিষেবা মুখ থুবড়ে পড়েছে। তাঁর পরিচিত অনেকেই এখন ওই পরিষেবা ছেড়ে বেসরকারি পরিষেবার দিকে ঝুঁকেছেন। তিনি বলেন, “দুই মিনিট কথা বলতে গেলে তিন বার ফোন লাইন কেটে যায়। গুরুত্বপূর্ণ কাজ আর বিএসএনএল দিয়ে হচ্ছে না। এমন চললে অন্য সংযোগ নেওয়ার কথা ভাবতে হবে। এমন একটি পরিষেবা এভাবে নষ্ট করা হচ্ছে ভাবতেই পাচ্ছি না।” তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, যেখানে বেসরকারি সংস্থাগুলি পরিষেবা দিতে পাচ্ছে তাহলে বিএসএনএল দিতে পাচ্ছে না কেন? এর পিছনে কোনও কারণ থাকলে খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

বিএসএনএল কতৃপক্ষ দাবি করেছেন, লো ভোল্টেজ থাকার কারণে বহু জায়গায় তাঁদের যন্ত্রপাতি বসে যাচ্ছে। সে কারণে পরিষেবা খারাপ হচ্ছে। ওই দাবি মানতে নারাজ গ্রাহকদের অনেকে। তাঁদের অভিযোগ, মহকুমা স্তরের বেশ কিছু টেলিফোন অফিসে কাজ হয় না। কেউ অভিযোগ নিয়ে গেলেও গুরুত্ব দেওয়া হয় না। নাজিরহাটের বাসিন্দা বিএসএনএল গ্রাহক যুবলিগের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রঊফ বলেন, “শুধু লো ভোল্টেজের জন্য এমন হাল তা মানা যায় না। তাহলে বেসরকারি পরিষেবাগুলো কিভাবে ঠিক থাকছে। উপযুক্ত না নিলে আমাদের পথে নামতে হবে।”

অনশন প্রত্যাহার। বকেয়া পাওনার অর্ধেক মিটিয়ে দিতে সম্মত হওয়ায় রিলে অনশন প্রত্যাহার করলেন দার্জিলিঙের বিভিন্ন চা বাগানের আন্দোলনরত শ্রমিকরা। সোমবার থেকে দার্জিলিঙের দোত্রিহা, কালেজ ভ্যালি এবং পেশক চা বাগানের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার চা শ্রমিক সংগঠনের সদস্যরা বকেয়া মেটানোর দাবিতে রিলে অনশন শুরু করেছিলেন। তিনটি বাগানই একটি সংস্থার পরিচালনাধীন। বৃহস্পতিবার সহ শ্রম কমিশনারের দফতরে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সংস্থার তরফে বকেয়ার অর্ধেক মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। শ্রম দফতর সূত্রের খবর, শ্রমিকদের প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। যার মধ্যে এ দিনের বৈঠকে ২ কোটি ২৯ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। স্বাস্থ্য এবং বিভিন্ন বিভিন্ন সহায়ক পরিষেবা বাবদ অর্থ মেটানো হয়েছে। যদিও, পিএফ এবং বকেয়া মজুরি মেটানোর বিষয়ে এ দিন কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement