পাহারায় পুলিশ, চলছে কাজ

ধর্মঘটের নেতৃত্বে থাকা জয়েন্ট ফোরামের অভিযোগ, পুলিশের ভয় দেখিয়ে চাপ তৈরি করা হচ্ছে শ্রমিকদের উপর। ন্যূনতম মজুরি চুক্তি নিয়ে বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের ধর্মঘট ডেকেছিল তৃণমূলপ ছাড়া চা শ্রমিক সংগঠনগুলির জয়েন্ট ফোরাম।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৮ ০২:২৮
Share:

পাহারা: ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানে পুলিশি নিরাপত্তায় চলছে পাতা তোলার কাজ। নিজস্ব চিত্র

চা-পাতা তুলছেন শ্রমিকরা। তাঁদের ঘিরে রয়েছে পুলিশ বাহিনী। চা-কারখানায় কাজে ঢুকছেন শ্রমিকরা। দু’পাশে সারি দিয়ে রয়েছে র‍্যাফ বা সিভিক কমব্যাট ফোর্স। বুধবার চা-ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে এই চিত্রই দেখা গেল জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন চা বাগানগুলোতে। ডেঙ্গুয়াঝাড় করলাভ্যালি, রায়পুর, জয়পুর, শিকারপুর এবং ভাণ্ডিগুড়ি চা বাগানে অধিকাংশ শ্রমিকই কাজে যোগ দিয়েছেন বলে দাবি জানিয়েছে তৃণমূলের চা শ্রমিক সংগঠন। ধর্মঘটের নেতৃত্বে থাকা জয়েন্ট ফোরামের অভিযোগ, পুলিশের ভয় দেখিয়ে চাপ তৈরি করা হচ্ছে শ্রমিকদের উপর। ন্যূনতম মজুরি চুক্তি নিয়ে বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় মঙ্গলবার থেকে তিন দিনের ধর্মঘট ডেকেছিল তৃণমূলপ ছাড়া চা শ্রমিক সংগঠনগুলির জয়েন্ট ফোরাম। ফোরামের নেতারা দাবি করেছেন, জলপাইগুড়ির মালবাজার বা নাগরাকাটার চা বাগানগুলিতে বন্‌ধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।

Advertisement

যদিও ব্যতিক্রম দেখা গিয়েছে জলপাইগুড়ির শহর সংলগ্ন চা বাগানগুলোতে। করলাভ্যালি হোক বা ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগান, সব জায়গায় একই চিত্র দেখা গিয়েছে দিনভর। এমনিতে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে চা বাগানের কাজকর্ম শুরু হয়। বুধবার তার আগেই মোতায়েন করা হয় পুলিশবাহিনী। ডেঙ্গুয়াঝাড় বা শিকারপুরে পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাফ এবং সিভিক কমব্যাট ফোর্স রাখা হয়েছিল। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার অধীনে করলাভ্যালি, ডেঙ্গুয়াঝার এবং রায়পুর চা বাগান রয়েছে। রাজগঞ্জ থানার অধীনে আছে শিকারপুর, জয়পুর ভাণ্ডিগুড়ি। সব চা বাগানে প্রায় একই রকম পুলিশের কড়াকড়ি রাখা হয়েছিল। সেই সঙ্গে ছিল শাসকদলের নেতাদের নজরদারি। এই দুই নজরদারির মধ্যেই কাজ হয়েছে বাগানগুলোতে। ডেঙ্গুয়াঝাড় চা বাগানের তৃণমূল চা-শ্রমিক নেতা সূর্য মুণ্ডা জানিয়েছেন, ধর্মঘটের ফলে শ্রমিকদের ক্ষতি হয়, তাই তাঁরা এই ধর্মঘট সমর্থন করেন না।

ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছে জয়েন্ট ফোরাম নেতৃত্ব। ফোরামের অন্যতম নেতা জিয়াউল আলমের প্রশ্ন, যেখানে এই ধর্মঘটকে রাজ্য সরকার বেআইনি ঘোষণা করেনি, সেখানে পুলিশ ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা করছে কেন? তাঁর অভিযোগ, ‘‘জেলা-পুলিশ সুপার চা বাগান মালিক এবং শাসকদলের নেতাদের কথায় চলছেন।’’ যদিও পুলিশ সুপার অমিতাভ মাইতির দাবি, বাগানের অনেক শ্রমিকই তাঁদের কাছে কাজ করতে চান বলে জানিয়েছিলেন, সেই জন্যই বাগানগুলোতে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে। যদিও শিকারপুর চা বাগানে ধর্মঘটী শ্রমিকদের সঙ্গে পুলিশের বাকবিতণ্ডা হয় বলে অভিযোগ। তাঁদের চাপে পড়ে রাজগঞ্জ থানার পুলিশ বাহিনী সেখান থেকে চলে যায় বলেও সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে পুলিশ সুপারের দাবি, ‘‘সে রকম বড় কিছু হয়নি, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement