প্রতীকী ছবি।
দলের সর্ব ভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরেও কোচবিহার তৃণমূলের ‘দ্বন্দ্ব’ কতটা মিটবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই গেল। মঙ্গলবার তড়িঘড়ি করে ডাকা জেলার শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে হাজির থাকলেন না তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় ও সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া। পার্থপ্রতিমকে অবশ্য এর আগেও জেলার শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে দেখা যায়নি। এ দিনের সভায় জেলা কমিটিতে কারা থাকবেন, তা নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সে নামের নথি পাঠিয়ে দেওয়া হবে রাজ্যে। সেখানে সিলমোহর পড়লেই ঘোষণা হবে জেলা কমিটি। বেশ কিছু কর্মসূচিও ঘোষণা হয়। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে দলের সমস্ত শীর্ষস্থানীয় নেতারা যোগ দেবেন বলেই ধরে নেওয়া হয়েছিল।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক অবশ্য বলেন, “এখানে বিরোধের কোনও জায়গা নেই। অন্য কর্মসুচি থাকার কারণে হয়তো ওঁরা উপস্থিত ছিলেন না। পরে, ওঁদের সঙ্গে কথা বলে নেব। দলের নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে জরুরি বৈঠক হয়েছে। বৈঠকে একাধিক সিদ্ধান্ত হয়।”
তিনি জানান, মাস ছয়েক আগেই জেলা কমিটি তৈরি করে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠিয়েছিলেন তাঁরা। এ দিন সেই তালিকায় আরও কিছু নাম সংযোজন করে ৭০ জনের জেলা কমিটি তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। পার্থপ্রতিম বর্তমানে তৃণমূলের মুখপাত্র। তিনি উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও রয়েছেন। তিনি বলেন, “নিগমের একটি পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। সেখানে আমাকে থাকতে হয়েছে। সে জন্যই বৈঠকে থাকতে পারিনি।’’ জগদীশ অবশ্য বলেন, ‘‘গিরিধারী নদীর উপরে নেতাজি সেতুর কাজের সূচনা হল মঙ্গলবার। সেখানে থাকতে হয়েছে, তাই যেতে পারিনি।”
এ দিনের বৈঠকে অবশ্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী উদয়ন গুহ, প্রাক্তন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ, বিনয়কৃষ্ণ বর্মণ, বিধায়ক পরেশ অধিকারী, কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতি উমাকান্ত বর্মণ এবং দলের জেলা চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ ছিলেন। দলীয় সূত্রে খবর, সোমবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দলের জেলা নেতাদের সঙ্গে ‘ভার্চুয়াল’ বৈঠক করেন। সেখান থেকে তিনি কড়া বার্তা দেন দলের জেলা নেতাদের একাংশকে। কোচবিহারে কেন দলের নেতা রবীন্দ্রনাথ ঘোষ দলের আর এক নেতা তথা মন্ত্রী উদয়ন গুহর দিনহাটায় ঢুকতে পারবেন না, সে প্রশ্ন তোলা হয়। দু’দিনের মধ্যে সমস্যা মেটানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। না হলে সমস্ত ব্লক কমিটি নতুন করে তৈরির কথা জানিয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীদের প্রার্থী দিতে যাতে কোথাও বাধা না দেওয়া হয়, সে নির্দেশও দেন অভিষেক। সে সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করে ঐকমত্যে পৌছনোর চেষ্টা করেন জেলা নেতৃত্ব। সঙ্গে ব্লক সম্মেলন মে মাসের মধ্যে শেষ করা, ‘দিদির সুরক্ষা কবচ’ কর্মসূচিতে বাড়ি-বাড়ি যাওয়ার ক্ষেত্রে ঘাটতি যাতে না হয়, এমন বেশ কয়েকটি বিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়।