ফাইল চিত্র।
অবশেষে গ্রেফতারের ছ’দিনের মাথায় মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হল পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্যের শিক্ষা দফতরের প্রতিমন্ত্রী পরেশ অধিকারী। কোচবিহারের মেখলিগঞ্জের বিধায়ক পরেশের নামও জড়িয়েছে এসএসসি দুর্নীতি মামলায়। সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। আদালতের রায় তাঁর মেয়ে অঙ্কিতাকে স্কুল শিক্ষিকার চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যে দিন ইডি হানা দিয়েছিল, একই দিনে পরেশের বাড়িতেও হানা দেয় ইডি। স্বাভাবিক ভাবেই পরেশকেও মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলেছিল বিরোধীরা। পার্থকে সরিয়ে দেওয়া হলেও পরেশকে তাঁর পদে বহাল রাখা হয়েছে কেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন বিরোধীরা। এবং দলেক একাংশও মনে করছে, মুখ্যমন্ত্রী যে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না, তা পার্থকে সরিয়ে দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন। ফলে পরেশের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলেই।
তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “আমাদের মুখ্যমন্ত্রী যে দুর্নীতি ও অন্যায়কে কখনও প্রশ্রয় দেন না, তিনি তা বারে বারে বলেছেন ও বুঝিয়েও দিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই বিরোধীদের কথার এখানে কোনও গুরুত্ব নেই। কারণ বিরোধী অনেক নেতার বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি অভিযোগ রয়েছে। যার বিরুদ্ধে কখনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।” পরেশ-ঘনিষ্ঠ এক নেতা অবশ্য বলেন, “পরেশ অধিকারীর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। সিবিআই দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁর কাছে কিছু পাওয়া যায়নি। তাঁর মেয়ের চাকরি নিয়ে যে অভিযোগ রয়েছে, তা নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। তাই তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরানোর কোনও প্রশ্ন আসে না।”
বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “তৃণমূলের প্রত্যেকেই দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত। সে জন্যেই এত অভিযোগ থাকার পরেও মন্ত্রিত্ব থেকে সরানো হয় না। পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে সরিয়ে নিজেদের স্বচ্ছ প্রমাণের চেষ্টা হচ্ছে। অথচ পরেশ অধিকারী মন্ত্রী থেকেই যাচ্ছেন।”
পরেশের বিরুদ্ধে দুর্নীতির আশ্রয়ে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে তাঁর নিজের মেয়ে অঙ্কিতাকে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আদালতের রায়ে অঙ্কিতাকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বেতনের টাকাও তাঁকে ফেরত দিতে হয়েছে। সিবিআই পরেশকে তিন দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। দিন কয়েক আগে তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে ইডি। জানা গিয়েছে, তাঁর বাড়ি থেকে কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করেছে ইডি। সেই সময় তিনি বাড়িতে ছিলেননা। দলের একটি অংশ মনে করছে, ইডি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পরেশকে ডাকতে পারে।