ঝাড়খণ্ডের প্রভাব কি এ রাজ্যেও

বিজেপির জেলা নেতাদের দাবি, মালদহের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ঝাড়খণ্ডের ভোটের ফলের কোনও প্রভাবই পড়বে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

মালদহ শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৬:২৯
Share:

উল্লাস: ঝাড়খণ্ডের ভোটে বিজেপির হারের পরে জোটের পতাকা নিয়ে পথে। সোমবার রাঁচীতে। পিটিআই

পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকে লোকসভা— মালদহের আদিবাসী-প্রধান ব্লকগুলিতে সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সোমবার মালদহ-ঘেঁষা ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা ভোটের ফলের প্রভাব হবিবপুর, বামনগোলা, পুরাতন মালদহ, গাজল ব্লকে পড়বে বলে দাবি করেছেন বিভিন্ন আদিবাসী সংগঠনের নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, ঝাড়খণ্ডে বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়েছেন আদিবাসীরা। এ বার মালদহের আদিবাসীরাও তা-ই করবেন।

Advertisement

তবে বিজেপির জেলা নেতাদের দাবি, মালদহের আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে ঝাড়খণ্ডের ভোটের ফলের কোনও প্রভাবই পড়বে না।

মালদহের এক পাশে বাংলাদেশ সীমান্ত, অন্য প্রান্তে ঝাড়খণ্ড ও বিহারের সীমানা। মালদহের মানিকচক থেকে গঙ্গা পার হলেই ঝাড়খণ্ডের রাজমহল। এমন ভৌগোলিক অবস্থানের জেরে গঙ্গার ওপারের রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফলাফল আগামী নির্বাচনে এপারের আদিবাসী প্রধান ব্লকগুলিতেও পড়বে বলে দাবি করছে রাজনৈতিক মহল।

Advertisement

মালদহের হবিবপুর, বামনগোলা, গাজল এবং পুরাতন মালদহ— এই চারটি ব্লক আদিবাসী অধ্যুষিত। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালের জনগণনা অনুযায়ী জেলায় আদিবাসীদের সংখ্যা ৩ লক্ষ ৮৩ হাজার। হবিবপুরে ২৯ শতাংশ, গাজলে ২১ শতাংশ, বামনগোলায় ৯.১ শতাংশ এবং পুরাতন মালদহে ৮ শতাংশের বসবাস।

এই চার ব্লকেই পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে লোকসভা ভোটে সাফল্য পেয়েছে বিজেপি। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজেপি ছ’টি জেলা পরিষদ, দু’টি পঞ্চায়েত সমিতি এবং ২৯টি পঞ্চায়েত একক ভাবে দখল করে। আদিবাসী প্রধান চার ব্লকে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতেই সাফল্য পেয়েছিল বিজেপি। এমনকি, লোকসভা ভোটেও ওই চার ব্লকের উপরে ভর করে উত্তর মালদহ আসনটি বিজেপি দখল করে।

কিন্তু ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা ভোটে এমন ফলের পরে মালদহের আদিবাসীরাও বিজেপির থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবেন বলে দাবি করেছেন ঝাড়খণ্ড দিশম পার্টির এ রাজ্যের সাধারণ সম্পাদক মোহন হাঁসদা। তিনি বলেন, ‘‘জল-জঙ্গল-জমি-খাদানে আদিবাসীদের অগ্রাধিকার আইন রয়েছে। তার বিরোধিতা করেছে বিজেপি। ওই দল আদিবাসীদের উন্নয়নে কোনও কাজ করছে না। তারই প্রভাব পড়েছে ঝাড়খণ্ডে। এ বার এ রাজ্যের আদিবাসী মানুষও নিজেদের ভুল বুঝতে পারবেন বলে আশা করা যায়।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের বিরোধিতা করেই মানুষ বিজেপির দিকে ঝুঁকেছিলেন। আদিবাসীরা ভেবেছিলেন বিজেপি তাঁদের জন্য কাজ করবে। বাস্তবে তা হয়নি।’’

আদিবাসী সিঙ্গল অভিযানের মালদহের নেতা বিনয় বেসরা বলেন, ‘‘ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ডে অনেক আদিবাসীর নাম ভুল রয়েছে। এনআরসি, নতুন নাগরিকত্ব আইনের ভয়ে কাজ ফেলে তা সংশোধন করতে যাচ্ছেন সকলে। বিজেপির তরফে এমন হয়রানির বিরুদ্ধে তাঁরা বাংলাতেও রায় দেবেন।’’

উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, ‘‘বিজেপি সরকার আদিবাসীদের উন্নয়নে কাজ করছে। বাংলার আদিবাসীরা তা জানেন। তা-ই ওই ফলের প্রভাব রাজ্যে পড়বে না।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement